চিকিৎসাকালীন রোগীর ঝুঁকি প্রতিরোধের পরিকল্পনা করতে হবে’’

0
335

মাদকনির্ভরশীল এবং মানসিক রোগীদের চিকিৎসা কেন্দ্রের পাশাপাশি পরিবারের ভুমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগীদের পাশাপাশি রোগীদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা কার্যক্রমে কার্যকর অংশগ্রহনের জন্য কেন্দ্র থেকে পারিবারিক মনোসামাজিক শিক্ষামূলক কর্মসূচি নিয়মিত আয়োজন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ‘‘রিল্যাপ্স প্রতিরোধে পরিবারের ভুমিকা’’ এই বিষয়ে আজ রবিবার ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ইং তারিখে আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের আয়োজনে উক্ত কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমে পারিবারিক সভা আয়োজন করা হয়। সভায় মুল আলোচ্য বিষয় ‘‘রিল্যাপ্স প্রতিরোধে পরিবারের ভুমিকা’’ নিয়ে উপস্থাপনা করেন কেন্দ্রের সাইকোসোশ্যাল কাউন্সেলর মমতাজ খাতুন। উপস্থাপনায় চিকিৎসা পদ্ধতি, কেন্দ্রের সার্ভিস, ল্যাপ্স ও রিল্যাপ্স,রিল্যাপ্স এর কারন এবং রিল্যাপ্স প্রতিরোধে পরিবারের ভুমিকা নিয়ে আলোচনা করেন।

 এরপর সভার বিশেষজ্ঞ আলোচক মনোচিকিৎসক ও এডিকশন প্রফেশনাল ডা. মোঃ আখতারুজ্জামান সেলিম বক্তব্যে প্রদান করেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন মাদকনির্ভরশীল এবং মানসিক রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবার থেকে একজন রিকভারীকে যদি সহায়তা করা হয়, তবে সেকল রিকভারীর ক্ষেত্রে রিল্যাপ্স হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই চিকিৎসাকালীন সময়েই পরিবারকে রোগীর ঝুঁকি প্রতিরোধের বিষয়ে পরিকল্পনা করতে হবে ও রিকভারী পরিসম্পদগুলো চিহ্নিত করতে হবে। তিনি আরো বলেন চিকিৎসা পরবর্তীতে কেন্দ্রের সাথে সংযুক্ত থাকা, মনোচিকিৎসকের কাছে নিয়মিত ফলোআপ করার বিষয়গুলোতে পরিবারকে সহযোগীতা প্রদান করতে হবে। সভার আরেকজন বিশেষজ্ঞ আলোচক সিনিয়র সাইকোলজিস্ট রাখী গাঙ্গুলী বলেন দেশে ক্রমেই নারীদের মাদকনির্ভরশীলতার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে যেহেতু এটি ক্রনিক রিল্যাপ্সিং রোগ।

চিকিৎসা পরবর্তীতে ফলোআপে মনোচিকিৎসকের পাশাপাশি কাউন্সেলিং এও নিয়মিত থাকতে হবে যাতে করে চিকিৎসা পরবর্তী একজন রিকভারি দৈনন্দিন চাপ মোকাবেলা করতে পারেন। সভায় ১৬ জন রোগীর পরিবারের সদস্যগন অংশগ্রহন করেন। পরবর্তীতে আলোচকগন মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। সবশেষে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের মাদকাসক্তি চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রোগ্রাম কোর্ডিনেটর মোঃ শাহেদুল হকের  বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সভাটি শেষ করা হয়। সভাটি সঞ্চালনা করেন আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার উম্মে জান্নাত। উল্লেখ্য ২০১৪ সাল থেকে আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নারীদের জন্য চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এই কেন্দ্রটি দেশের প্রথম লাইন্সেস প্রাপ্ত নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা কেন্দ্র। গত ৭ বছরে উক্ত কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা গ্রহন করেছে ৫৩৩ জন রোগী এর মাঝে, চিকিৎসা নিয়ে প্রায় ২০০ জন রোগী বর্তমানে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে আছেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

one − one =