মাদক সম্রাজ্ঞী লেডি কিলার খ্যাত মুক্তা’র অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

0
694

মোহাম্মদ জুবাইর: চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকার আরেফিন নগর মাদক ব্যবসায়ীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। মাদকের কারণে পুরো এলাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে এ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ হয়ে পড়ছেন মাদকাসক্ত। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এখানকার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে সিএমপির তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী মুক্তা ও তার স্বামী হযরত আলী, প্রকাশ মাদক আলী, মাদক সাম্রাজ্ঞী মুক্তার দেবর সোহাগ প্রকাশ ইয়াবা সোহাগ, মুক্তার আপন মেয়ে খুচরা মাদক বিক্রেতা আঁখি প্রকাশ গাঁজা আখি। এ নারীর ও তার স্বামী’র বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় মাদকের বহু মামলা রয়েছে। চক্রটি শুধু মাদকের ব্যবসা নয়, আরেফিন নগরে সিটি কর্পোরেশনের জমি দখল করে গড়ে তুলেছে কলোনি ও গরুর খামার। বায়েজিদের বিভিন্ন স্থানে জায়াগা ও বহুতল ভবন নির্মাণ করেছে মাদকের টাকায় এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকে তাদের একাউন্টে রয়েছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। এর আগে মুক্তা ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারসহ মাদক বিক্রয় বন্ধ করার দাবিতে মানববন্ধনও করেছেন অত্র এলাকার বাসিন্দারা। তবু কেউ যেন থামাতেই পারছেন না তাকে। অত্র এলাকাবাসীর অভিযোগ, আরেফিন নগরের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দিনরাত অবাধে মাদক বিক্রি হচ্ছে মুক্তা ও তার পরিবারের সদস্যদের সহায়তায়। এতে ধ্বংস হচ্ছে যুবসমাজ ও উঠতি বয়সের কিশোর কিশোরীরা, ধ্বংস হচ্ছে জাতি।

এলাকার সচেতন নাগরিকরা বলছেন থানা পুলিশ ব্যবস্থা নেয় না তাদের বিরুদ্ধে। যদিও মাঝেমধ্যে অভিযান করা হয়, তাতেও ক্ষান্ত হয়নি মাদক কারবারিরা। কে শুনে কার কথা মাদকসম্রাগী মুক্তা’র মাদকের ব্যবসা আগের তুলনায় বর্তমানে অনেকটা জাঁকজমক রমরমা চলছে তো চলছে! এলাকাবাসীরা প্রতিবেদককে জানান, মাদক ব্যবসায়ী স্বামী হযরত আলী প্রকাশ মাদক আলী’র হাত ধরেই মুক্তা মাদক ব্যবসায় আসে।

প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার রয়েছে গভীর আঁতাত। বেশ কয়েকবার জেলে গেলেও দ্রুত জামিনে বের হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে মুক্তা ও মাদক আলী। বায়েজিদ থানার আরেফিন নগর কেন্দ্রীয় কবরস্থান ঘিরে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বসে মাদকের হাট। দিনের বেলায় যদিও একটু কম। যেখানে মাদকসেবী সমাজের উচ্চবিত্ত থেকে নিবিত্ত শ্রমিক এবং স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের আনাগোনা চলে।

মুক্তার সাথে আছে বেশ কিছু মাদক কারবারি রোহিঙ্গা,মুক্তা’র মাদক চক্রটি রোহিঙ্গা মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা এনে বায়েজিদ ও আরেফিন নগরে ইয়াবা ব্যবসা করছে, বলছেন অত্র এলাকাবাস। বেশ কয়েকবার মাদকসম্রাগি মুক্তা ও তার স্বামী হযরত আলী’কে গ্রেফতার করেছিল বায়েজিদ থানা পুলিশ। পরে তাদের স্বীকারোক্তিমতো বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় কবরস্থানের কবর খুঁড়েও উদ্ধার করা হয় মদ, গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিল দেশীয় অস্ত্র। বিভিন্ন মামলার নথি থেকে জানা গেছে,

তার পরিবারের অনেকেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার মেয়ে আঁখি, স্বামী হযরত আলী দেবর ইয়াবা সোহাগ সহ নাম না জানা আরো বেশ কয়েকজন সিন্ডিকেট রয়েছে, কবরস্থানসহ অত্র এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে বলে মুক্তার পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিও দিয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে পুলিশ জানায়, তার ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে মাদক সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। বেশ কয়েকবার গ্রেফতারও করা হয়েছে তাকে। তার পরিবারের অন্যদেরও গ্রেফতার করা হয়েছিল।

তারপরও তাদের মাদক ব্যবসা থেকে ফেরানো যায়নি। বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি মোহাম্মদ ফেরদৌস জাহান বলেন, আমি এইখানে এসেছি অল্প কয়েকদিন হল, যদি আমার এলাকায় কেহুই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকে অবশ্যই তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। মুক্তা’র স্বামী ও মুক্তার পরিবার ছাড়াও আত্মীয়-স্বজন অনেকেই মাদক ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 × three =