অপরাধ বিচিত্রা: নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা রণচন্ডী ইউনিয়নের অবিলের বাজার এলাকায় রণচন্ডী শামসুল উলুম দাখিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে।মাদ্রাসা সুপার আব্দুল মতিনের নিয়োগ জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। সুপার আব্দুল মতিন তার নিয়োগ কালীন সময় প্রতিষ্ঠানটির স্বীকৃতি না থাকায় ওই স্বীকৃতির ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে নিয়োগ নেন তিনি। এমনকি তিনি মেয়াদ উত্তীর্ণ এবং বাতিল হওয়া গভর্নিং বডি কর্তৃক নিয়োগ নেন। ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক মোঃ নবীবুর রহমান বলেন, আমি গত ১১-০২-২১ ইং তারিখে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেছি। ওই সুপার আব্দুল মতিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। অত্র মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যবধি আমরা কোনদিন ভুয়া পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেওয়াই নাই। কিন্তু সুপার আব্দুল মতিন গত ২০২২ইং সালে এ বছরে দাখিল পরীক্ষায় অত্র প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রী দিয়ে ভূয়া পরীক্ষার্থী সাজিয়ে পরীক্ষা দেওয়ান। সেটা আমাদের ও অত্র প্রতিষ্ঠানের জন্য লজ্জাজন। সুপার আব্দুল মতিনের নিয়োগ জালিয়াতির তদন্তের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার কিশোরগঞ্জ, নীলফামারীকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। যাহার স্মারক নং ৫৭.২৫.০০০০.০১০.০৭.০০২.১৬.৬৭৯ তারিখ ১৬-০৬-২০২১ ইং। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কিশোরগঞ্জ নীলফামারী তদন্ত প্রতিবেদন মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করেন। অনুসন্ধানে জানা যায় স্বার্থনীশি হীন স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে আব্দুল মতিন ২০২২ ইং সালে ভুয়া পরীক্ষার্থী দিয়ে দাখিল পরীক্ষা দেওয়ান। আরো জানা যায় শামসুল উলুম দাখিল মাদ্রাসায় ২০২২ ইং সালে দাখিল পরীক্ষার্থী ছিল মোট ২৭ জন পরীক্ষার্থী।
এরমধ্যে ১৫ জন পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র নিয়ে যায়। বাকি ১২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় তার কারণে সুপার আব্দুল মতিন তার মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত ষষ্ঠ, সপ্তম ,অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণীর ০৯(নয়) জন পরীক্ষার্থীরদেরকে দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়েছেন।
এই ভুয়া ৯ জন পরীক্ষার্থীসহ মোট ২৪ (চব্বিশ) জন পরীক্ষার্থী নিয়মিত পরীক্ষা দিয়ে আসছিলেন। এবং গত ২৫- ৯- ২০২২ ইং তারিখে ইংরেজী দ্বিতীয় পত্রের দিন ওই প্রতিষ্ঠানের ষষ্ঠ শ্রেণির মিলা নামের একজন ভুয়া পরীক্ষার্থী ধরা পড়েন। পরবর্তী তে বাকি পরীক্ষায় অন্যান্য ভূয়া পরীক্ষার্থীরা আর অংশগ্রহণ করে নাই।
ওই ভুয়া পরীক্ষার্থীদেরকে চুক্তিভিত্তিক প্রতিদিন ৩০০ টাকা হারে দেওয়া হতো। অনুসন্ধানে আরও জানা যায় অত্র প্রতিষ্ঠানের এনটিআরসি কর্তৃক সুপারিশ প্রাপ্ত জুনিয়র শিক্ষক আবু মুসার এমপিওর জন্য আব্দুল মতিন গত ০১-৪- ২০২২ ইং তারিখে স্বীকৃতির কপি জালিয়াতি করে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস কিশোরগঞ্জ নীলফামারীতে ফাইল প্রেরন করেন।
কিন্তু এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের দৃষ্টি গোচর হওয়ায় তিনি ফাইলটি স্থগিত করেন এবং আব্দুল মতিনকে গত ১৪-০৪-২০২২ ইং তারিখে উমাশিঅ/কিশোর/নীল/২২/১৪৩ নং স্মারকে স্বীকৃতি জালিয়াতির কারণে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। সুপার আব্দুল মতিন কে একাধিকবার ফোনে কল দিলে রিং হয় কিন্তু ফোন রিসিভ হয়নি।