পূর্ব শত্রুতার জেরে এবং আধিপত্য বিস্তার পানির ব্যবসা নিয়ে খুন যুবলীগ নেতা অলিউল্লাহ রুবেল

0
562

স্টাফ রিপোর্টার : পূর্ব শত্রুতার জের এবং আধিপত্য বিস্তার ও পানির ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে খুন হয়েছেন যুবলীগ নেতা অলিউল্লাহ রুবেল। রাজধানীর শাজাহান পুরের মালিবাগ বাজার রোডের আবুজর গিফারী কলেজ থেকে কিছুটা সামনে জোয়ারদার ল্যান ১৫৬ নাম্বার বাড়ির সামনে রুবেলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায় দুর্বৃত্তরা । রুবেলের স্ত্রী তানজিনা দেওয়ান এ বিষয় নিয়ে শাহজাহান পুর থানায় মামলা করেন যার নাম্বার ৩০২/৩৪ প্যানাল কোড ১৮৬০। তিনি জানান যে, মৃত অলিউল্লাহ রুবেল শান্তিবাগ এলাকায় পানির ব্যবসা করে এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল ও শাজাহানপুর ১২ নাম্বার ওয়ার্ডের যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী ছিল। তাই সমাজে রুবেলের অনেক প্রতিপক্ষ ও শত্রু তৈরি হয় এবং অনেকের সাথে মামলা মোকাদ্দমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বৈরী সম্পর্ক তৈরি হয় । রুবেল প্রতিদিনের মতো ব্যবসায়িক কাজকর্ম শেষে বাসায় ফেরার পথে গত ২১/৭/২ ৩ তারিখ রাত আনুমানিক ১২:৪০ ঘটিকার সময় শাহজাহানপুর থানাধীন ১৫৬ মালিবাগ বাজার রোড বিভাবরী বাড়ির সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছালে দুষ্কৃতিকারীরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে, হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো চাপাতি দ্বারা কোপ মারিয়া মাথার বাম পাশে, বাম হাতের কনুর নিচে, ডান হাতের বাহুর নিচে, পিঠের উপরিভাগে, ডান কাঁধের নিচে বরাবর, পিঠের বাম পাশে, ডান পায়ের উরুতে, বাম পায়ের উপরের পাতায় সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর রক্তাক্ত কাটা যখন করে। এলোপাথাড়ি কপের হাত থেকে রুবেল বাঁচার জন্য দৌড়াইয়া তাদের ভাড়া বাসার পাশের ভবনে ১৫৩ মালিবাগ সরলতা ভবনের সামনে এসে লুটিয়ে পড়ে। এমতাবস্থায়, রুবেল তার স্ত্রী তানজিনা দেওয়ান কে ফোন করে চিৎকার করতে থাকে। মোবাইলে রুবেলের আত্মচিৎকার শুনে বাড়ির নিচে এসে রুবেল কে গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় পান তার স্ত্রী। পরবর্তীতে পথচারী ও আত্মীয়স্বজনদের সহায়তায় দ্রুত কাকরাইল ইসলামী হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পঙ্গু হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মব্যরত ডাক্তার গত ২১/০৭/২৩ তারিখ রাত ০২:১০ ঘটিকার সময় রুবেল কে মৃত ঘোষণা করেন। উক্ত বিষয়ে সাংবাদিকগং শাহজাহানপুরের থানার অফিসার ইনচার্জ ফারুকুল আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে তিনি জানান, “আমি আমার সম্পূর্ণ দিয়ে এই বিষয়ে তদন্ত সহ মামলা তাৎক্ষণিক নেই “। এবং তিনি আরো জানান, গুলবাগ এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১০ জনকে গ্রেফতার করেন ডিবি – র‍্যাব। ১০ জনের তথ্যের ভিত্তিতে উল্লেখযোগ্য আসামিদের নাম উঠে আসে, ( হাবিব আহসান, আলিফ হুসাইন, রবিউল সানি, মোহাম্মদ মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ শাহজালাল, রফিকুল ইসলাম, নুর আলম ও সুমন মির)। র‍্যাব গ্রেফতার করেছে আদনান আসিফ ও মোহাম্মদ শাকিলকে। উক্ত আসামীদের গ্রেফতারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ডিবি জানতে পারে, যুবলীগ নেতা রুবেলের সঙ্গে শাহজালাল ও নিবিড়ের এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ হয়। আধিপত্য বিস্তারের জেরে নিবিড় ও শাহজালাল দুজন মিলে রুবেলকে মারার জন্য হাবিবকে ঠিক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় হাবিবকে নিবিড় চাপাতি কেনার জন্য চার হাজার টাকা দেন৷ টাকা দিয়ে হাবিব খিলগাঁও বাজার থেকে দুটি চাপাতি কিনেন৷ ঘটনার আগের দিন শাহজালাল ও হাবিব দুজন রুবেল কে মারার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন সন্ত্রাসীরা রুবেলের গতিবিধি লক্ষ্য করতে থাকে। হাবিব ও আলীফ চাপাতি নিয়ে রুবেলের বাড়ির সামনে অবস্থান করে। মেহেদী হাসান ও সানির দুই পাশে লোকজনদের পাহারায় থাকেন। রুবেল রিক্সা করে বাড়ির সামনে আসতে থাকলে পিছন থেকে অন্যরা মোটরসাইকেলে তাকে অনুসরণ করে। আর হাবিব ও আলিফ চাপাতি নিয়ে প্রস্তুত থাকে। ইতোমধ্যে রুবেল কে রিকশায় দেখতে পেয়ে হাবিব ও আলিফ চাপাতি নিয়ে এগিয়ে যায়। রুবেল দৌড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে পিছন থেকে হাবিব ও আলিফ তাকে ধাওয়া করে। আলিফ রুবেলের মাথায় চাপাতি দিয়ে কোপ দিলে সেখানেই রুবেল মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় হাবিব ও আলিফ চাপাতি দিয়ে রুবেলকে এলোপাথারী কুপিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। অন্যরাও সেখান থেকে চলে যান। গ্রেফতারকৃত আসিফ ও শাকিল এ দুজনের তথ্যের বরাত দিয়ে র‍্যাব -৩ অধিনায়ক বলেন, রুবেল কে হত্যার জন্য হাবিবকে দায়িত্ব দেন শাহ্জালাল। শাকিল ও আসিফ কিলিং মিশনে সক্রিয় অংশগ্রহণের পর দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে নিজ নিজ বাসায় চলে যান। পরদিন টঙ্গীতে এক আত্মীয়র বাসায় গিয়ে গা ঢাকা দেন শাকিল। আর অন্যরা কুমিল্লায় পালিয়ে যান। উক্ত মার্ডার কেসে আইনের ভূমিকা অপরিসীম ছিল বিধায় আসামিগণ দ্রুত ধরা পড়েছেন ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twenty − 10 =