ইটিডিএ এর সভাপতি বদরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

0
6874

বিশেষ প্রতিবেদক: ইমপ্লমেন্ট টেকনোলজি এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ইটিডিএ) এর স্বঘোষিত সভাপতি সন্ত্রাসী বদরুল ইসলাম সিদ্দিকীর হাত থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন কাজী জাকির হোসেন। তথ্যসূত্রে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে বদরুল ইসলাম সিদ্দিকীসহ ৩০ জন সদস্য মিলে ইমপ্লমেন্ট টেকনোলজি এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ইটিডিএ)’র কার্যক্রম আরম্ভ হয়। যার নং ফ/৫৯ এনজিও বিষয়ক ব্যুরো প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সনদ নং-১০৮২।  তখন বদরুল ইসলাম সিদ্দিকীকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তথ্যসূত্রে আরও জানা যায়, সংস্থাটি ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত সুষ্ঠভাবে পরিচালিত হয়ে আসছিলো। তারপর থেকে আজ অবদি বদরুল ইসলাম সিদ্দিকী সংস্থার সভাপতির পদ আকড়ে ধরে বসে আছেন। তিনি আর কোন নির্বাচন দেননি। সভাপতির মসনদে বসে পকেট কমিটির মাধ্যমে সকল সম্পদ তার হস্তগত করে অন্যান্য সদস্যদের বঞ্চিত করেছেন। সংস্থার নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৩০০ (তিনশত) কোটি টাকার সম্পত্তি পারিবারিক কমিটি করে আত্মসাৎ করে ভোগ দখল করছে।

সংস্থার সদস্য কাজী জাকির হোসেন বলেন, ১৯৮৪ সনের দিকে ফরিদপুরে ব্যবসার কাজে যাতায়াত শুরু করি। সেখানে একদিন মো: জামাল উদ্দিন মোল্লা, গোপালগঞ্জের সাথে আমার পরিচয় হয়। তারপর থেকে উনার মাধ্যমেই ইমপ্লমেন্ট টেকনোলজি এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ইটিডিএ) এর সাথে সম্পৃক্ত হই। (ইটিডিএ) সম্পর্কে উনি আমাকে অনেক আশার আলো দেখান। উনার মাধ্যমে কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী, প্রধান প্রকৌশলী সম্পর্কে জানতে পারি এবং উনার বড় ভাই বদরুল ইসলাম সিদ্দিকী সম্পর্কে জানতে পারি। সে সময় এলজিইবি এলজিইডিতে পরিণত হয়। তৎকালীন সময়ে তাদের লালমাটিয়াতে অফিসে এসে লোকাল কিছু সন্ত্রাসী বিভিন্ন ভাবে কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীকে হয়রাণী করত। তখন আমি  স্থানীয় হওয়াতে মো: জামাল উদ্দিন মোল্লা আমার সাথে কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীকে পরিচয় করিয়ে দেয়।

(ইটিডিএ) এর তখন সবে প্রোগ্রেসের দিকে ফলে বিভিন্ন সময় অর্থনৈতিক এবং সামাজিক প্রয়োজনে আমাকে বলায় আমি লোকালি সমস্যা ফেইস করা সহ অর্থনৈতিক সাপোর্ট দিয়েছি। লালমাটিয়াতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঝামেলা আমি সমাধান করেছি। কাজী জাকির হোসেন আরও বলেন, তখন লালমাটিয়াতে এলজিইডির সৌদি প্রজেক্টে (ইটিডিএ) এর লিয়াজো অফিস ছিল। পরবর্তীতে মিরপুর-১১, ঢাকাতে নিজস্ব অফিস ভবনে (ইটিডিএ) অফিস স্থানান্তর করা হয়, যা (ইটিডিএ) এর প্যাডে উল্লেখ ছিল।

এর মধ্যে (ইটিডিএ) এর অফিস করার জন্য মেহেরপুর কোদালকাঠিতে, মাগুরা, কুষ্টিয়া, কুয়াকাটাসহ বিভিন্ন জেলায় জমি ক্রয় করা হয়। পরবর্তীতে ট্রেনিং সেন্টার করার জন্য কালাপনি ডি ব্লকে শিল্প প্লট যারা লটারীতে পেয়েছিলেন তাদের কাছ থেকে বায়না দলিলের মাধ্যমে জমি ক্রয় করে (ইটিডিএ) এর ভবন তৈরি করা হয়। অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে সে সময় কাজী জাকির হোসেন এর কাছ থেকে মোল্লা সাহেব বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে জমি ক্রয় এবং বিল্ডিং তৈরি করার জন্য অর্থ গ্রহণ করে এবং তা ফিরিয়ে না দিয়ে আজ কাল করে কালক্ষেপণকালে

মো: জামাল উদ্দিন মোল্লা পরবর্তীতে বদরুল ইসলাম সিদ্দিকী সভাপতি (ইটিডিএ), মো: জামাল উদ্দিন মোল্লা নির্বাহী পরিচালক, ফয়জুল হক হিসাবরক্ষক (ইটিডিএ) এর স্বাক্ষরে তাকে একটি ডকুমেন্ট দিয়েছেন এবং পরবর্তীতে উনার দুইটি কিডনী নষ্ট হয়ে মারা যান। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, বদরুল ইসলাম সিদ্দিকী সভাপতি (ইটিডিএ) সিটি করপোরেশনের হোল্ডিং নম্বর নিয়ে খাজনা পরিশোধ করেন।

নিয়মিতভাবে (ইটিডিএ) এর ভবনে অফিস এবং ট্রেনিং সেন্টার চলমান থাকে। বিল্ডিং এর অতিরিক্ত ফ্লোরগুলো বদরুল ইসলাম সিদ্দিকী. সভাপতি (ইটিডিএ) একটি গার্মেন্ট মালিক পক্ষের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ভাড়া প্রদান করেন এবং মো: জামাল উদ্দিন মোল্লাকে লিখিতভাবে জানান যে (ইটিডিএ) এর সকল জমি এবং বিল্ডিং (ইটিডিএ) এর টাকায় ক্রয় করা বা তৈরি করা হয়েছে। সে সকল জমিসহ বিল্ডিং (ইটিডিএ) কেই লিখে দিব বা রেজিস্ট্রি করে দিবে।

আরও জানা যায়, সদ্যদের নামে তার রেজিস্ট্রি না করে নিজের ভাতিজা সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকীর নামে লিখে দিয়েছেন, যা সাইফুল তার বউকে শশুরকে সাথে নিয়ে লিখে নিয়েছেন। ইতিমধ্যে কাজী জাকির হোসেন কয়েক বছর বিদেশে থাকার পর দেশে এসে দেখে বদরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সভাপতি (ইটিডিএ) মিরপুর-১১ এর সম্পূর্ণ ভবনটি নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে বসবাস করছে। তৃতীয় তলায় (ইটিডিএ) এর ট্রেনিং সেন্টার ছিল সেটাকে উনি নিজে আবাসিক করে নিয়েছেন। (ইটিডিএ) এর দুইটি থাই গ্লাস দিয়ে হল রুম ছিল এখন সেটাকে উনার গেস্ট রুম ব্যবহার করছে।

(ইটিডিএ) কে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে সমাজসেবা অধিদপ্তর এর অনুমোদন বা বিনা অবগতিতে বন্ধ করে দিয়ে (ইটিডিএ) এর সকল সম্পদ বদরুল ইসলাম সিদ্দিকীকে (সাইফ), নাদিয়া ইসলাম সিদ্দিকী সাইফ এর বউ এবং শশুর মিলে ঢাকার বাইরে সকল জমি সম্পদ বিক্রি করে টাকা নিজ ব্যাংক হিসাবে নিয়েছে। (ইটিডিএ) এর ভবন নিজ বউ এর নামে লিখে নিয়েছে। এবং এর নাম দিয়েছে আইসিসি সেন্টার পরবতীর্তে এসএন সেন্টার (সাইফ নাদিয়া)।

সমবায় আইনে পাওয়া যায়, কোন সংস্থা বিলুপ্ত হয়ে গেলে ঐ সংস্থার সকল সম্পদের মালিক হবে সরকার কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সম্পদের মালিক হতে পারবেন না। অথবা ঐ সংস্থার স্থাবর অস্থাবর সম্পদের মালিক হবে সংস্থার সকল সদস্য/সদস্যা।

যা অথচ সমাজসেবা অধিদপ্তর এর কাছে হস্তান্তর করতে হবে। অথচ জনাব বদরুল ইসলাম সিদ্দিকী, নাদিয়া সিদ্দিকী (সাইফুর এর বউ), সাহিদ হাসান সেলিম (সাইফুর এর শশুর), রাজু প্রধান নির্বাহী আইসিসি, মেজবাহ হিসাবরক্ষক আইসিসি মিলে (ইটিডিএ) কে গোপনে সমাজসেবা অধিদপ্তরকে না জানিয়ে বন্ধ করে (ইটিডিএ) এর সকল সম্পদ নিজের করে নিয়ে ভোগ করে আসছেন যা আইনত অপরাধ। তৎকালীন সময়ে কাজী জাকির হোসেন উক্ত বিষয়টি নিয়ে তাদেরকে লিখিতভাবে মোৗখিকভাবে এ সকলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে।

একাধিকবার উকিল নোটিশ প্রদান করে এবং স্বশরীরে যোগাযোগ করলে তাকে ভয়ভীতি প্রদান করে (ইটিডিএ) এর বিষয় নিয়ে কিছু না করার জন্য হুমকি দেন। বদরুল ইসলাম সিদ্দিকীর ছেলে রাজু তার বিষয়টি নিষ্পত্তি করবেন বলে অনেক দিন তাকে ঘোরান এবং আর ফোন ধরেন না, যা সে স্বশীরে আইসিসি এর কাওরান বাজার অফিসে উপস্থিত হয়ে লিখিতভাবে জানিয়ে এসেছেন। এ সকল বিষয় নিয়ে কাজী জাকির হোসেন জানান, আজ প্রায় ৩ বছর হলো তাকে তারা ঘোরাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রতিকার চেয়ে নিজের অধিকার ফিরে পেতে লিখিত ভাবে আবেদন করেছেন তাতে তিনি বলেছেন কেও আইনের উর্দ্বে নয়। আজ দেশের সকল অন্যায়ের বিচার হচ্ছে অথচ বদরুল ইসলাম সিদ্দিকী নিজেদের ক্ষমতা এবং অর্থ এর বলে অবৈধভাবে (ইটিডিএ) এর সকল সম্পদ ভোগ করে যাচ্ছেন।

তারা যে অপরাধী তার প্রমাণ-কাজী জাকির হোসেনকে দেখে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বদরুল ইসলাম সিদ্দিকীর সাথে দেখা করতে গেলে কাজী জাকির হোসেনকে বদরুল ইসলাম সিদ্দিকীর ছেলে মি. রাজন বলে সে এখানে চাকুরী করে তার বাবা আমেরিকাতে থাকেন। তারা কাজী জাকির হোসেনকে গার্ড দিয়ে ফোন করে বলে তাকে পুলিশ আর্মি দিয়ে ক্ষতি করবে বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এ ব্যাপারে বদরুল ইসলাম সিদ্দিকীর লিখিত বক্তব্য চেয়ে পত্রিকা অফিস থেকে লিখিত চিঠি দেওয়া হলেও তিনি কোন বক্তব্য পাঠাননি। ভুক্তভোগীরা অর্থাভাবে, অনাহারে দিন অতিবাহিত করছেন। প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ ও বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমে তাদের টাকা ফিরে পেতে আইনী সহযোগিতা কামনা করছেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

17 + 13 =