যাত্রাবাড়ীতে হোটেল বলাকা ও পপুলার আবাসিকের বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ

0
857

ফরমান উল্লাহ খান নিবিড়: মদ নারী তাস এই তিনই সর্বনাশ। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর আবাসিক হোটেল গুলোতে গড়ে উঠেছে নারী ব্যবসার ও মাদক সেবনের আখড়া। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা সংলগ্ন সামিউল্লাহ প্লাজা মার্কেটে ঢাকা সেন্ট্রাল চক্ষু হাসপাতালের উপরে হোটেল নিউ বলাকা আবাসিক ও যাত্রাবাড়ী বাজারের

ভেতর অবস্থিত ইউনুস মার্কেট ভবনের চার তলায় হোটেল নিউ পপুলার প্যালেস (আবাসিক) নামে দুই হোটেলেই চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ এবং মাদক সেবন যা যাত্রাবাড়ি এলাকার সামাজিক পরিবেশ নষ্ট করছে।তথ্যসূত্রে জানা যায়,উল্লেখ্য দুইটি আবাসিক হোটেলে যৌনকর্মীদের দিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে খদ্দের এনে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ করে দেওয়া হয়। এছাড়াও বাইরে থেকে যদি কেউ মেয়ে নিয়ে হোটেলে যায়, তাহলে তাদের জন্য রুম ভাড়ার ব্যবস্থা করে দেয় হোটেল দুইটি । যার ফল হিসেবে ইতিপূর্বে যাত্রাবাড়ীর এক আবাসিক হোটেল থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার করে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ।

উক্ত হোটেল দুইটি তে মাদক সেবন ও অসামাজিক কার্যকলাপে কোন প্রকার বাধা দেওয়ার মত কেউ না থাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রকার অপকর্ম। যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার প্রধান ফটকে হোটেল দুটি অবস্থিত হলেও প্রশাসনের নজরদারির অভাবে হোটেল দুটি এমন ভাবে চলে যেন লাইসেন্স করা প্রতিষ্ঠান। আবাসিক হোটেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোক বলে যে, আগে দেখবেন তারপর সার্ভিস নিবেন, এ যেন অনুমোদন প্রাপ্ত পতিতালয়। প্রশাসনিক ঝামেলা সম্পর্কে জানতে চাইলে হোটেল নিউ বলাকা আবাসিক ও হোটেল নিউ পপুলার প্যালেস (আবাসিক) কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রশাসন কে প্রতিমাসে মাশোহারা দিয়ে আমরা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছি এবং হোটেল কর্তৃপক্ষ আরো বলে যে, যাত্রাবাড়ী থানার সামনেই আমাদের প্রতিষ্ঠান, থানায় টাকা না দিলে তো আর হোটেল ব্যবসা করতে পারতাম না। অনুসন্ধানে জানা যায়, হোটলে নিউ বলাকা আবাসিক হোটেলের মালিক রতন,পলাশ,সাইদুল ও ফারুক এবং হোটেল নিউ পপুলার আবাসিকের প্রধান মালিক মালিক সাজ্জাদ ( ডিবির সোর্স হিসেবে পরিচিত ) এছাড়াও আংশিক ভাবে সাঈদুল, পাপন ও জামাল সহ অজ্ঞাতনামা অনেকে উক্ত হোটেলের সাথে যুক্ত আছে। হোটেলের মালিকানায় থাকা একাধিক ব্যাক্তির মধ্যে অনেকে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত যার কারনে মুখ খুলতে ভয় পান সাধারন মানুষ। প্রতিবেদনের স্বার্থে হোটেল দুইটিতে অনুসন্ধানে গেলে বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন পপুলার আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার রাজীব এবং বিল্লাল সহ অন্যান্য কর্মচারীরা। অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত আবাসিক হোটেল ম্যানেজ রাজীব মাদক সেবন ও বিভিন্ন প্রকার মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। একই প্রেক্ষাপটের মোকাবিলা করতে হয় হোটেল নিউ বলাকা আবাসিকেও। নিজের জান মালের নিরাপত্তার এবং মান সন্মানের কথা চিন্তা করে সংবাদকর্মীরা হোটেল থেকে বের হয়ে আসতে বাধ্য হোন । উল্লেখ্য হোটেল দুটিতে মাদক সেবন এবং দেহ ব্যাবসা পরিচালনার পাশাপাশি রাজধানীর বাইরে থেকে আসা সাধারন মানুষদের নানা প্রলোভন দিয়ে হোটেলে নিয়ে যেয়ে বিভিন্ন ভয়-ভীতি এবং কথা না মানলে শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে টাকা-পয়সা, মোবাইল কেড়ে নেওয়ার ঘটনা শোনা যায় প্রায়ই। এমতাবস্থায় কোনো ভাবেই যেনো দমানো যাচ্ছে না হোটেল পপুলার এবং হোটেল বলাকা আবাসিকের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। বিভিন্ন সংবাদপত্রে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ হলেও, হোটেল গুলোর বিরুদ্ধে অদ্য পর্যন্ত আশানুরুপ কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে না। হোটেল মালিক এবং পরিচালকেরা প্রশাসনের নাকের ডগায় আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করে নিজেদের ইচ্ছামত বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে চলছে উল্লেখ্যিত হোটেল কর্তৃপক্ষ। হোটেল গুলোর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হলেও তারা সংবাদপত্র টি টিস্যু কাগজের মত অবমূল্যায়ন করে আসছে। এ বিষয়ে ৫০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব মাসুম মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের মুঠো ফোনে জানায় আমি নিজেই একাধিক বার উচ্ছেদ করেছি, তবুও তারা চালিয়ে যাচ্ছে। আপনারা প্রশাসনের মাধ্যমে এর একটা ব্যবস্থা নিন। উল্লেখ্য হোটেল নিউ পপুলার প্যালেস এবং হোটেল নিউ বলাকা আবাসিক কর্তৃপক্ষের প্রশাসন কে মাশোহারা দেওয়ার তথ্যটি যাত্রাবাড়ী থানা প্রশাসনের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে মনে করেন স্থানীয় সাধারন জনগন। অনেক আগে থেকেই উক্ত হোটেল দুইটিতে অসামাজিক কার্যকলাপ এবং মাদক সেবন সহ বিভিন্ন অপকর্ম পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে যার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। যাত্রাবাড়ী এলাকার সাধারন জনগনের দাবী অন্যান্য অপরাধ দমনের সাথে উল্লেখ্য হোটেল দুইটিতে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা সংলগ্ন এলাকার সুস্থ ও সামাজিক পরিবেশ ফিরিয়ে এনে, যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের অক্লান্ত পরিশ্রমের অর্জিত সুনামের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে যাবে। উল্লেখ্যিত সকল বিষয় বস্তুর সঠিক ব্যবস্থা ও স্থায়ী সমাধানের আবেদন প্রকাশ করে, যাত্রাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মফিজুল আলম মহোদয়ের সু-দৃষ্টি কামনা করেন স্থানীয় সচেতন মহল।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

17 − ten =