ফতুল্লার আদর্শনগরে বাড়ছে বিভিন্ন অপরাধ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ

0
472

স্টাফ রিপোর্টার: নানা অপরাধমুলক কর্মকান্ডকে কেন্দ্র করে নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার অন্তর্গত আদর্শনগর, দৌলতপুর এলাকায় বেড়ে চলেছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সংখ্যা। সম্প্রতি এলাকার আহসানউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে দৌলতপুর এলাকায় ধরে নিয়ে মারধর ও জখম করাকে কেন্দ্র

করে বড় ধরনের সংঘর্ষের পর বিষয়টি আরো আলোচনায় উঠে আসে। সরেজমিনে গিয়ে ও এলাকায় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ২১ আগষ্ঠ তারিখে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত সাজ্জাত হোসেন, শাকিল হোসেন, মিনহাজ, শান্ত, মেহেদি, মুন্না, সিয়াম, মানিক, আরফান, নাসিরসহ আরো পনের বিশজন মিলে সোমবার বিকেলে আহসান উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে উক্ত বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে হঠাৎ পিছন থেকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে জখম করে। এরপর উক্ত কিশোরগ্যাং বাহিনী জিহাদ, জুবায়ের ও শিপন নামের তিন শিক্ষার্থীকে দৌলতপুর এলাকায় ধরে নিয়ে আটকে রাখে এবং আরো মারধর করে। শিপনকে মারধরের পর জোর করে ভয় দেখিয়ে সাজ্জাদের কিশোর গ্যাংয়ে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র হাতে ধরিয়ে এ্যকশন মুলক ছবি তুলে রাখে। বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়িনা করতে শিক্ষার্থীকে হুমকি প্রদান করে। বাকিরা জীবন বাচাঁতে সেখান থেকে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনা জানার পর এলাকায় সবার মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ও আতঙ্ক বিরাজ করতে থাকে। পরবর্তীতে সাহস করে উত্তেজিত জনতাদের মধ্যে কয়েকজন উল্লেখিত শিক্ষার্থীদের মারধরের কারণ জানতে দৌলতপুর যায়। প্রতিবাদীদের মধ্যে ছিলো রাতুল হোসেন, নয়ন হোসেন, তারেক, ইমন হোসেন, তানজিদ হোসেন। তারা দৌলতপুর গিয়ে সাজ্জাদ গ্যাংদের কাছে উল্লেখিত শিক্ষার্থীদের মারধরের কারণ ও ধরে নিয়ে আসার বিষয় জানতে চাইলে সাজ্জাদ কিশোরগ্যাংয়ের লিডার মোঃ ইব্রাহিম ও হ্রদয়সহ ৩০-৪০ জন সন্ত্রাসী কায়দার লোক তাদের উপরও দেশীয় অস্ত্রসহ আক্রমণ করে।

 ইব্রাহীম সিন্ডিকেটের কাছে অস্ত্র ও লাঠিসেটা থাকায় রাতুল হোসেন, নয়ন হোসেন, তারেক, ইমন হোসেন, তানজিদ হোসেন ও অন্যান্যরা রক্তক্ষয়ী আক্রমণে জখমসহ মারাত্মক আহত হয়। ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে, কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান ইব্রাহিম রাতুলকে চাপাতি দিয়ে মাথায় মেরে ফেলার জন্য কোপ মারে, সাজ্জাদ ধারালো ছোরা দিয়ে ইমনের মাথায় কোপ মারে, গ্যাংয়ের অন্য সদস্য হ্রদয় লোহার পাইপ দিয়ে নয়নের ডান পায়ে আঘাত করে এবং তানজিদকে কাঠের ডাসা দিয়ে গ্যাংয়ের সদস্যরা মিলে ব্যাপক মারধর করে। এতে রাতুল এবং ইমন এর মাথা ফেটে মারাত্মকভাবে জখম ও আহত হয় এবং বাকিদেরও মারাত্মক ভাবে মারধর করে জখম করে। পরে তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয় মানুষজন এগিয়ে যায় এবং আহতদের ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা করানো হয়। ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়লে পরবর্তীতে ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী ও তাদের বন্ধুরা উত্তেজিত হয়ে গ্যাংয়ের প্রধান ইব্রাহিমকে মারাত্মকভাবে মারধর করে জখম করে। ইব্রাহিম পরে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নেয়। এ বিষয়ে উভয় পক্ষ ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করে। উক্ত গ্যাংয়ের প্রধান ইব্রাহিমসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাদিক সামাজিক অপরাধমূলক কান্ডে মামলা রয়েছে। কিছুদিন পূর্বে উক্ত গ্যাংমাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে পশ্চিম দেলপাড়ার হাজী মোঃ কাশেম আলীর ছেলে শাকিলকে পরিকল্পিত ভাবে হামলা করে মারাত্মক ভাবে আহত করে, পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা করানো হয় এবং এ বিষয়ে তার বাবা বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আহত শাকিলের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাকে ও তার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি ধামকি প্রদান করা হচ্ছে। ইব্রাহিম তার গ্যাং নিয়ে মাদকের রমরমা ব্যবসা করে যাচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

6 + fourteen =