দেবীদ্বারে চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চক্রে চলে অবৈধ ড্রেজার মেশিন; নীরব ভূমিকায় প্রশাসন

0
279

দেবীদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার উপজেলার ১১নং রাজামেহার ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দীনের সংঘবদ্ধ সপু পাঠান চক্রে চলে অন্তত ১০ টি অবৈধ ড্রেজার মেশিন। স্থানীয় সূত্রেঃ জসীম উদ্দীন চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের (নায়েব) মোঃ রুহুল আমিন, মতিন মেম্বার (ছিটার মতিন), ইব্রাহীম পাঠান সপু মিয়া, (ড্রেজার সপু) সহ কয়েকজন মিলে একটি সংঘবদ্ধ চক্র তৈরি করেন, এই চক্রে এলাকায় প্রায় পনেরো শত একর ফসলি জমি অবৈধ ভাবে কেটে বিনাস করেছেন। রাজামেহার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, জসিম উদ্দিন চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে গ্রীষ্ম, বর্ষা বারো মাসেই তিন ফসলি জমির মাটি কাটার হিড়িক চলছে। গেলো গ্রীষ্মে তিন কোটি টাকার মাটি ইটভাটায় বিক্রি করছে এই সংঘবদ্ধ চক্রটি। মাঠ থেকে আমন ধান ওঠার পরই, এমনকি জমিতে ফসল থাকা অবস্থায় ফসলি জমির মাটি কেটে ও বিক্রি শুরু করে দেয়া হচ্ছে। আর এ মাটি ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে গভীর গর্ত করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভরাট করা হচ্ছে বসতবাড়ি, পুকুর ও ডোবা-নালা। মূলত কৃষিজমির মালিকদের আর্থিক সুবিধার টোপ দিয়ে বাধ্য করে মাটি খেকো জসিম উদ্দীন চেয়ারম্যান। তাৎক্ষণিক নগদ টাকা হাতে পেয়ে আগামীর চিন্তা না করেই জমির টপ সয়েল থেকে শুরু করে তিরিশ-চল্লিশ ফুট পর্যন্ত গভীর করে বিক্রি করছেন কৃষকরা। আশপাশের জমির মাটি কেটে নেয়ায় অনেকেই আবার বাধ্য হয়ে নিজের জমির মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। চেয়ারম্যান চক্রের সপু মিয়ার ড্রেজার মেশিন দিয়ে দিন রাত মাটি উত্তোলনের কাজ চলছেই অনবরত। একদিকে সপুচক্রের হয়রানি অন্যদিকে সমগ্র রাজামেহার ইউনিয়নের ড্রেজার মেশিন মালিকদের কাছ থেকে থানা পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে অএ ইউপির মতিন মেম্বার (ছিটার মতিনের ছেলে) জুয়ারী আশিকের বিরুদ্ধে ও। তবে স্থানীয়দের ধারণা; থানা পুলিশ, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের (নায়েব) মোঃ রুহুল আমিন ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড)কে কব্জা করেই (সপু ড্রেজার) চক্রের এই রামরাজত্ব করে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ড্রেজার মেশিন ব্যবসায়ী জানান, ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ড্রেজার মেশিন ব্যবসায়ী সপু মিয়া তাহার খুব কাছের মানুষ। আমাকেও এই চক্রের সাথে যোগ দিতে ডাকা হয়েছিলো, তাদের চক্রে যোগ না দেওয়ার অপরাধে এসিল্যান্ড কে দিয়ে এক সাপ্তাহে পর পর রাজামেহার ৪নং ওয়ার্ডে গোবিন্দপুর,মনোহরবাদ অংশে দুইবার আমার ড্রেজার ভাঙচুর করেছেন। চক্রের সদস্য সপু’র রাজামেহার ৪নং ওয়ার্ডে গোবিন্দপুরে চলমান ড্রেজার মেশিন পেরিয়ে মনোহরবাদে আমার বন্ধ ড্রেজার মেশিন ভেঙ্গেছে, কিন্তু সপু’র ও আশপাশে রাজামেহার ইউনিয়নের অন্যান্যদের মধ্যে মরিচা, সইলানা, গোবিন্দপুর,মনোহরবাদ,সোনামুড়া ও গাংটিয়ারা গ্রামের একাধিক জমিতে হান্নান মিয়া, কামাল হোসেন, জাকির হোসেন,মোবারক হোসেন ও চুলাশ গ্রামের আবুল হোসেন, মরিচা গ্রামের মো: ফারুক ভূঁইয়া, উখারী গ্রামের আবুল হোসেন, বেতরা গ্রামের হাকিম মিয়াদের চলমান ড্রেজার মেশিন কারও ড্রেজার মেশিন’ই ভাংচুর করেননি দেবীদ্বার উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড)। তাহলে কি আমার ড্রেজার মেশিনটাই অবৈধ,আর চক্রদের চলমান ড্রেজার মেশিন গুলো কি বৈধ হয়ে গেল। এ বিষয়ে জসীম উদ্দীন চেয়ারম্যানের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি জানান, ইউনিয়নের সকলেই আমার লোক, কিন্তু আমি কোনো ড্রেজার বা মাটি ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত নয়। আমি উপজেলা মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে বার বার অবৈধ ড্রেজার বন্ধ করতে বলেছি প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, বরং আমি একা বিরোধিতা করে আসছি। এ বিষয়ে দেবীদ্বার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: রায়হানুল ইসলামকে জানালে তিনি বলেন, ড্রেজার মেশিন বিষয়ে আপনি একটি লিখিত অভিযোগ দেন। আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twenty + 11 =