অগ্নি পরীক্ষার ২৮ অক্টোবরঃ এবার কী সরকার পার পাবে?

0
247

মোহাম্মাদ মোশাররাফ হোছাইন খানঃ শেষ পর্যন্ত পার্টি অফিসকে কেন্দ্র করে মহাসমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে বিএনপিকে। অপর দিকে সরকারী দলও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকার্রমের দক্ষিণ গেইটে একটি সমাবেশ করবে। শাপলা চত্তরেও জামায়াত ইসলামী একটি সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে কোন সারা পায় নি ইসলামী ঘরানার এই রাজনৈতিক দলটি।দলটির ঢাকা মহা নগরী দক্ষিণ সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ অপরাধ বিচিত্রাকে জানিয়েছেন, এটি তাদের পূর্ব ঘোষিত প্রোগ্রাম,আশা করছেন প্রশাসন তাদের সহযোগীতা করবেন, এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,  জামাআতে ইসলামী যারা করেন তারাও বাংলাদেশের নাগরিক।দেশের নাগরিকদের জান মালের নিরাপত্তা বিধান করা প্রশাসনের সংবিধনিক দায়ীত্ব, আশা করছি প্রশাসন আমাদের নাগরিক অধিকার রক্ষায় এগিয়ে আসবে।তিনি আরো বলেছেন, জামাআতে ইসলামী একটি সুশৃংখল ও শান্তি প্রিয় দল, আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই আমাদের সমাবেশ বাস্তবায়ন করব।

 ঐতিহাসিক বিচার বিবেচনায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এ মহাসমাবেশ পাল্টা সমাবেশকে অগ্নি পরিক্ষার ২৮ অক্টোবর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কয়েক দিন পরই শেখ হাসিনা সরকারের মেয়াদ ফুর্তি। মেয়দ ফুর্তির মহেন্দ্রক্ষনের পরই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। শেখ হাসিনার অধিনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক সকল প্রক্রিয়া প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে।

সরকারী দল এবং মিত্রজোট সাংবিধানিক গনতন্ত্র রক্ষার অজুহাতে  নামকাওয়াস্ত গনতান্ত্রিক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে টানা চতুর্থ বারের মতো ক্ষমতারোহনের সকল প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। এমন একটি টার্নিং পয়েন্টে বিএনপি ও সমমনা মিত্রদের একটি মহাসমাবেশ সরকারের সংগত কারনেই ভয়, আতংক,দুঃচিশ্চিন্তার কারন হয়েছে বলে মনে করছেন অনেক রাজনীতি পর্যেক্ষক। এই কারন আরো অনেক বেশী গভীরে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।

বানিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্র ইইউ  জোট গত বছর থেকে একটি গ্রহ‌‌ণযোগ্য, স্বচ্ছ, অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের সাথে আলোচনা চালিয়ে আসছে। শেখ হাসিনা বার বারই তার অধিনে একটি স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে তাদেরকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। তবে তিনি গত দুইটি নির্বাচনে দিল্লির ফরমূলায় যে দৃষ্টান্ত স্হাপন করেছেন, তাতে আগামী নির্বাচনে যে নতুন আরেকটি ফাদ তৈরী করে রাখেন নি এমন প্রশ্নও করছেন অনেকে।

এ প্রসংগে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, তিনি নিজের নির্বাচনি আসনেই ঐতিহাসিক নজির বিহীন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তার নির্বাচনী এলাকায় তিনি ব্যাপক জনপ্রিয় এ কথা বলা যেতেই পারে কিন্তু সেখানে বিরোধী দল কোন ভোট পাবে না এটি কী করে সম্ভব?

শেখ হাসিনার অধিনে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে যেতে কোন বিরোধিতা বা আপত্তি করার  সাহস পেত না অথবা বিরোধিতা করতো না যদি তিনি এমন নির্বাচনের উদাহরণ দেখাতে পারতেন।তবে তার সে সুযোগ ছিলো বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন।

শেখ হাসিনার এই দুর্বলতার সুযোগটি শক্তিশালীভাবে লুফে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্ররা। গত কয়েক মাস যুক্তরাষ্ট্রসহ ইইউর বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের তৎপরতা বিশেষ লক্ষণীয় হলেও শেখ হাসিনা তার অবস্হানে অনড়। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা যেহতু একটি অবাধ, সুষ্ঠ, গ্রহযোগ্য ও অংশ গ্রহণ মূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান বিষয়ে সরকারের সাথে দেন-দরবার চালিয়ে যাচ্ছে, এ কারনে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রশক্তিদের এভয়েড করে চীন রাশিয়া, ভারতের বলয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা চীন-রাশিয়া, ভারতের পেছন শক্তির বলে এতটা শক্তির সাথে আমেরিকা এবং মিত্রশক্তিকে বৃদ্ধাংগুলি প্রদর্শন করে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছে বলেও অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মত দিয়েছেন। এদিকে আওয়ামী ঘরানার বিশ্লেষকরা বলেছেন, শেখ হাসিনার বংগবন্ধু কন্যা তিনি খুব সহজে নতি শিকার করবেন, এমটা বিশ্বাস করা খুব কঠিন। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেন তা যে কোন মূল্যে হোক বাস্তবায়ন করে থাকেন।

তবে এ যাত্রায় বিএনপির আন্দোলন সফল্য কী আসবে, আর কী আসবে না এই হিসাবের সময় এখনো অপেক্ষেয়মান, জামাআত টিকে থাকবে কি থাকবে না এটিও প্রশ্ন সাপেক্ষ। যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমাদের বাংলাদেশ বিষয়ক স্ট্রট্রেজি যদি অপরিবর্তিত থাকে, সে ক্ষেত্রে শেখ হাসিনাকে তার দীর্ঘ দিনের একঘুয়ামীর জন্য ভয়াবহ খেসারত দিতে হতে পারে বলেও মনে করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

২০১৮ সালে বিদেশী কুটনৈতিক মিশনগুলো নির্বাচন নিয়ে যদিও তৎপর ছিলো তবে ভারতের দৃশ্যমান আওয়ামীলীগের পক্ষে জোড়ালো তৎপরতা ছিলো বিশেষ উল্লেখযোগ্য। সে যাত্রায় অন্যান্য কুটনৈতিক মিশনগুলো আওয়ামী পক্ষীয় ভারতীয় অবস্হানকে ছাড় দেওয়ার নীতিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন বলে মত দিয়েছেন অনেক কুটনীতি বিশেষজ্ঞ।

এবার ভারতের গোপন কোন মিশন রয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়, তবে এবার ভারতের প্রকাশ্য বিশেষ কোন তৎপরতা লক্ষিত হচ্ছেনা।এ অন্চলের ভারতের বিশেষ মিত্র আওয়ামী লীগ। খুব সহজে আওয়ামীলীগকে ভারত হেরে যেতে দিবে এমনটাও মনে করছেন না কুটনৈতিক ঐ বিশ্লেষকরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রকে কয়েক দফাই ধমকের মতো করে ইংগিত দিয়েছেন। যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রেস্টিজ ইস্যু।প্রধানমন্ত্রী হয়তো এমন ভেবেছেন যে, আরব দেশগুলো যেমন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের পাশ কাটিয়ে দিব্যি সগৌরবে টিকে আছে, তিনিও হয়তো সেভাবে টিকে যাবেন। আরব দেশগুলোর সাথে  যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ এবং বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে অবস্হাটা সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির বলেই মনে করছেন অনেক কুটনীতি বিশেষজ্ঞ।তারা বলেছেন যে, বাংলাদেশের জিও পলিটিক্স যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তবে আরব দেশগুলোর মতো গুরুত্বপূর্ণ নয়।বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভীত টিকে আছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রশক্তিদের উপর নির্ভর করে। যে কারনে এখন পর্যন্ত আমেরিকা এবং ইইউ সন্তুষ্টি অসন্তোষ্টি বাংলাদেশের জন্য একটি বিশেষ ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচিত।অপর দিকে চীন, রাশিয়া, ভারতে বা়ংলাদেশের রফতানী বানিজ্যে বিশেষ কোন ভুমিকা নেই আর যা আছে তা আমদানীর তুলনায় কিছু না।বাংলাদেশ যদি চীন, রাশিয়া, ভারতের মতো মজবুত ভীতের উপর থাকতো তাহলে পশ্চিমা শক্তির সাথে বাংলাদেশ শক্তিও কুলিয়ে উঠে টিকে থাকতে পারতো, বাংলাদেশ এখন যা করছে তা শেখ হাসিনার বিশ্ব রাজনৈক  দৃষ্টিভংগীগত অদূর দর্শিতায় এবং ভারতের আস্কারা ও এক চাটিয়া বাংলাদেশ থেকে সুবিধা আদায়ের লোভ বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে।

অনেকে আবার বলেছেন, বাংলাদেশ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের যে পলিসি রয়েছে তারা যে কোন মূল্যে হোক তা বাস্তবায়ন করেই তাদের মিশন শেষ করবে নতুবা নয়।

 গত পনের বছর বিরোধীদের রাজনৈতিকভাবে দমনে “প্রশাসনিক নিখুত দক্ষতা” দেখাতেও স্বক্ষম হয়েছেন।

“২০১৩ ও ২০১৮” সালে শেখ হাসিনার অধিনে অনিষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন যে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নজির রেখেছেন তা দেশের ও আন্তর্জাতিক মহলের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে।এই নির্বাচনকে শতাব্দীর “সেরা একচাটিয়া কৌশলী” নির্বাচনের উদহারন হিসেবেও দেখেছেন অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক।

এই নির্বাচন এবং পনের বছরের শাসন ব্যবস্থায় বিরোধী রাজনৈতিকদের দমন পিড়ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বার বার উদ্ভেগ প্রকাশ করেছে।

এছাড়া এই পনের বছরে  খোলা জায়গার “মুক্ত রাজনৈতিক আলোচনা সমালোচনা সাধারণ মানুষ ভুল করেও করতে সাহস হারিয়েছে”। চায়ের দোকান, লোকাল বাস, অন্যান্য পাবলিক প্লেসসমুহে এক সময় রাজনৈতিক “আলোচনা সমালোচনায় মুখর” থাকলেও এখন তা লক্ষণীয় নয়।বর্তমান সরকারের আমলে মানুষের গনতান্ত্রিক অধিকার বলতে যা বোঝায়, বলা যায় সাধারন মানুষ তা ভুলে যেতে বসেছে।দীর্ঘ এই শাসনামলে প্রশাসনের সর্বস্তরে  রাজনৈতিকভাবে বিশেষায়িত হয়েছে যা গনতান্ত্রিক পরিবেশে ভয়াবহ রূপ ধারন করেছ বলে উল্লেখ করেছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক।  রাজনৈতিকভাবে গত পনের বছর মামলা, হামলা ও নির্যাতনের

মাঠ পর্যায়ের বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা সমজাতীয় সরকারের অধিনে প্রতিষ্ঠা বিষয়ে অনড় ।দলটির এখন একমাত্র একটিই দাবী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।এ দাবী বাস্তবায়ন করা হলেই বিএনপিসহ গনতন্ত্রকামী সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো আগামী নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে নতুবা তারা শেখ হাসিনার অধিনে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে না। শেখ হাসিনার সরকার গত দুইটি নির্বাচনে তার অধিনে কোন গ্রহনযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এমন বিশ্বস্ততার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি বলে দাবী করছেন বিএনপি এবং নির্বাচনমূ‌খী দলগুলো।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার ভেরিফা‌ইড ফেসবুক ফেইজে “এবার আর ছাড় নেই, ভোটের অধিকার ফেরৎ চাই” এই শিরোনামের একটি ভিডিও বার্তায় তিনি স্পষ্ট করেছেন যে বিএনপি তাদের কাংখিত লক্ষ্যে না পৌছে ঘরে ফিরবে না।নেতৃবৃন্দ একের পর গ্রেফতার করা হলে আরেকজনকে নেতৃত্ব গ্রহন করে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবার সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন। অপরদিকে সরকারও বিএনপির আন্দোলন যাতে সফল না করতে পারে সে বিষয়ে বহুমুখী কৌশলী পন্হা গ্রহণ করেছে বলে একাধিক সুত্রে জানা যায়।২৮ অক্টোবর বিএনপির মহা সমাবেশ থেকে সরকার পতনের মহা পরিকল্পনা, মাস্টার প্লান ঘোষনা হচ্ছে বলে বিএনপির কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে।

বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দল সমূহের সরকার পতনের একক দাবী এবং এই দাবী আদায়ের অনমনীয় অবস্হান বিপরীতে সরকারী দলেরও সংবিধান রক্ষায় শেখ হাসিনার অধিনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কঠোর অবস্হান সরকারের মেয়াদের শেষান্তে দেশ একটি রাজনৈক দুর্যোগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈক পর্যবেক্ষক মহল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নীতি নির্ধারকদের অনেকে বলেছন, ২৮ অক্টোবরে ঢাকায় স্বতঃস্ফূর্ত জনতার গন দাবীতে এটি হবে সর্বশ্রেনীর মানুষের অংশ গ্রহনে নজির বিহীন  এক ঐতিহাসিক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোমধ্যেই পুলিশ বিগত দিনের মতো বহু নেতা কর্মী গ্রেফতার  করেছে, আতঙ্ক সৃষ্টি করছে, ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে তবে এবার কোন কিছুতেই কোন কাজ হবে না।তারা আরো বলেছেন,কর্মীদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা রয়েছে, সরকারের পাতানো ফাঁদের গণ্ডগোলে না জড়ানোর জন্য।তবে সরকার যদি একান্তই বাধ্যই তবে এর পরিনতি কী হবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। পরিস্থিতিই সরকারের সব হিসাব নিকাশ পাল্টে দিতে পারে।

এক দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে বিবিধ কর্মসূচি ঘোষণা করতে ২৮ অক্টোবর ২০২৩ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি পল্টন অফিস কেন্দ্র করে ঢাকায় ব্যাপক সংখ্যক লোক সমাগম ঘটিয়ে একটি মহাসমাবেশ করার সর্বাত্মক প্রস্তুতি । এই সমাবেশের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোন দলীয় সরকারের অধিনে নয়, তত্ত্বাবধায়ক বা সমজাতীয় সরকারের অধিনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার দাবী আদায় করা। বিএনপির নীতি নির্ধারকদের অনেকেই বলেছেন, বাংলাদেশের ভোটাধিকার বন্চিত সাধারন মানুষের সার্বজনীন দাবী একটি অংশ গ্রহন মূলক জাতীয় নির্বাচন ।বিএনপি সর্ব সাধারনের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই ২৮ অক্টোবর ২০২৩ ঢাকায় মহা সমাবোশের ডাক দিয়েছে।বিএনপির নীতিনীত নির্ধারক অনেকেই বলেছেন, বিগত দিনে যেভাবে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ করেছে সেভাবেই তারা এ সমাবেশটি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করবে। সরকার ও সরকারী দল আওয়ামীলীগ নিজেরাই একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিএনপির উপর চাপিয়ে দিতে আগেভাগে নানামূ‌খী পরিকল্পনা ও ছক তৈরী করে প্রচার প্রচারনা চালিয়েছে এতে কোন কাজ হয় নি।তারা আরো বলেছেন, এটি  বিএনপির কোন একক কোন আন্দোলনের নাম নয়, সাধারন মানুষের ভোটাধিকারের দাবীই বিএনপির দাবীর সাথে একাকার হয়েছে।

জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দীন টুকু অপরাধ বিচিত্রাকে বলেছেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপি পার্টি অফিসের সামনে একটি মহা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে, এটি বিএনপির গনতান্ত্রিক অধিকার।সরকার এ অধিকার খর্ব করতে চাইলে দেশের মানুষই এর সমুচিত জবাব দিবে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দল বিএনপি। বিএনপির সবচেয়ে বড় অংগ সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল।মাত্র ১২ ঘন্টার নোটিশে যুবদল বড় ধরনের মহাসমাবেশ করার মতো অবস্হান রয়েছে, যুবদল গায়ে পড়ে কোন রকম সংঘাতে জড়াবে না। তবে ধৈর্যের শেষ সীমা বলে একটা কথা থাকে।তিনি আরো বলেন, আমাদের দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সর্বদা কর্মীদের জান মালের নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতন।যুদদল সকল পেশি শক্তির মোকাবেলায় একটি শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ জাতীকে উপহার দিবে। ইতিপূর্বে কয়কটি বৃহত্তর সমাবেশ তারই সুস্পষ্ট প্রমাণ।তিনি আরো বলেন, দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে একটি কর্মীদের জান মালের নিশ্চয়তা রক্ষা করে শান্তিপূর্ণ একটি সমাবেশ বাস্তবায়ন করার।

তিনি আরো বলেন, সরকার আগ বাড়িয়ে যদি কোন তান্ডবলীলা চালায় যুবদল এর সমুচিত জবাব দিতে এবার ভুল করবে না।

২৮ অক্টোবরের মূলদল বিএনপির ঘোষিত  মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন সম্পর্কে যুবদলের ১ নং সহ সভাপতি নূরুল ইসলাম নয়ন বলেছেন, যুবদল সব সময়ই দলীয় কর্মসূচিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, ২৮ অক্টোবরের  মহাসমাবেশ সফল করতে কেন্দ্রীয় যুবদল তাদের উপর অর্পিত দায়ীত্ব যথাযথভাবে পালন করেছে। ইতোমধ্যেই দলীয় নির্দেশ পালন করে যুবদলের সারাদেশথেকে কয়েক লাখ নেতা কর্মী ঢাকায় সমবেত হয়েছে। অত্যন্ত সুশৃংখলভাবে যুবদল মহাসমাবেশ সফল করবে। তিনি আরো বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মহা সচিব সবসময় কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন, বিএনপি বা যুবদল আগ বাড়িয়ে কোন সংঘাতে জড়াবে না। নূরুল ইসলাম নয়ন অপরাধ বিচিত্রাকে আরো বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী বাংলাদের সকল মানুষের। সেই জনআকাংখাকে বাস্তবায়নের আন্দোলনের প্রতিনিধিত্ব করছে বিএনপি ।তিনি বলেন, যুবদল কারো রক্ত চক্ষুকে কখনো ভয় পায়না ,  দীর্ঘ আন্দোলনের সফলতা না নিয়ে যুবদল ঘরে ফিরে যাবে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শ্রমিক দল, স্বেচ্ছা সেবক দল, কৃষক দলের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন, আগ বাড়িয়ে বিএনপি কাউকে কিছু বলবে না, তবে যদি বাধ্য করা হয় কোন রকম ছাড় দেওয়া হবে না।অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটলে সে দায়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে।

যুব দল কেন্দ্রিয় নেতা রূহুল আমীন বাবলু বলেছেন, যুবদল ২৮ তারিখের সমাবেশে যুবদলের কয়েক লাখ নেতা কর্মী যোগ দিতে প্রস্তুত।যুবদল লগি বৈঠার রাজনীতি করে না, তবে সরকার যদি লগি বৈঠার পেশী শক্তি দেখাতে চায় এবার সমুচিত জবাব দিবে। কোন ছাড় দেয়া হবে না।

২৮ তারিখের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকারী দলও এ সমাবেশ যাতে বৃহত্তরভাবে সফল করতে না পারে সে জন্য নানামূখী কর্মসূচি নিয়েছে। সরকারী দল ঢাকার প্রবেশ মুখগুলোতে পাহারা চৌকিসহ বিশেষ নজরদারি বসিয়েছে।দু’দলের  মুখোমুখি অবস্হান দেশের রাজনীতিতে ভয়াবহ একটি দূর্যোগের আশংকা করছেন রাজনৈতিক সচেতন মহল।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

16 − ten =