তাহিরপুরে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি জমজমাট:কয়লার চালান আটক

0
228

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বীরেন্দ্রনগর, চারাগাঁও, বালিয়াঘাট, টেকেরঘাট, চাঁনপুর ও লাউড়গড় সীমান্ত এখন চোরাকারবারীদের স্বর্গরাজ্য। একাধিক মামলার আসামীরা নিজেদেরকে সোর্স পরিচয় দিয়ে এসব সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন সরকারের লাখলাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবাধে কয়লা ও চুনাপাথরসহ চিনি, সুপারী, গাছ, গরু, ছাগল, ইয়াবা, মদ, গাঁজা, নাসিরউদ্দিন বিডি ও কসমেটিস পাঁচার করে অনেকেই কোটিপতি হয়েগেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলার বীরেন্দ্র নগর সীমান্তের লামাকাটা ও সুন্দরবন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ১শ মেঃটন ও গতকাল সোমবার (২০ নভেম্বর) দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান অবৈধ কয়লা আটক করেছে বিজিবি। কিন্তু পাচাঁরকৃত অবৈধ কয়লার মালিক, সোর্স ও চোরাকারবারীদেরকে গ্রেফতারের কোন খবর পাওয়া যায়নি।

এব্যাপারে সীমান্তের লালঘাট গ্রামের চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী খোকন মিয়া বলেন- ভারত থেকে অবৈধ ভাবে কয়লা পাচাঁরের পর চোরাচালান মামলার আসামী সোর্স রফ মিয়াকে থানার নামে ১ নৌকা (২০ মেঃটন) চোরাই কয়লা থেকে ৩৫ হাজার টাকা, চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের নামে সোর্স সাইফুল মিয়া, রিপন মিয়া ও আইনাল মিয়াকে ১মেঃটন কয়লা থেকে ৮শ টাকা চাঁদাসহ শরাফত আলী ও শামসুল মিয়াকে টেকেরঘাট পুলিশ ক্যাম্পের নামে ১বস্তা (৫০কেজি) ১শ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদার টাকা কম দেওয়ার কারণে সোর্সরা আমার ১মেঃটন কয়লা কুপিয়ে নষ্ট করাসহ নৌকার ক্ষতি করেছে। আর সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে তাদের গডফাদার তোতলা আজাদ মিয়া।

বৈধ কয়লা ও চুনাপাথর আমদানী কারক আবুল বাশার খানসহ আরো অনেকই বলেন- আটককৃত চোরাই চোরাচালান মামলার আসামী রফ মিয়া, সেলিম আহমেদ, লেংড়া জামাল, রবিউল মিয়া, আনিস, আইনাল মিয়া, নেকবর আলী ও শেখ মস্তোফাগংদের। তারা তাদের গডফাদারকে নিয়ে ২বছর যাবত ওপেন সীমান্ত চোরাচালান বাণিজ্য করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে।

তাদের কারণে প্রতিবছর কোটিকোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। তাই প্রশাসনের উপরস্থ কর্মকর্তাদের সহযোগী জরুরী প্রয়োজন। এউপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্মার ও ব্যবসায়ী রাশিদ মিয়া বলেন- আজাদ মিয়া সীমান্তে লুটপাট শুরু করেছে। তার নেতৃত্বে চোরাচালানসহ সবকিছু হচ্ছে। সত্য কথা বললে নানান সমস্যায় পড়তে হয় তাই এব্যাপারে কিছু বলিনা। তাদের কারণে আমরা বৈধ ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির শিকার হচ্ছি।

এব্যাপারে শেখ মস্তোফা বলেন- আটককৃত চোরাই কয়লার সব দায় দায়িত্ব সোর্স রফ মিয়ার আর সোর্স লেংড়া জামাল ও তার লোকজনের কয়লা এখনও আটক করা হয়নি। তাদের অনেক কয়লা মজুত করা আছে। আমি এইসব অবৈধ কাজের সাথে জড়িত না। 

এব্যাপারে তাহিরপুর থানার ওসি নাজিম উদ্দিন বলেন- থানা পুলিশের কোন সোর্স নাই, আমরা বর্তমানে নির্বাচনী কাজ নিয়ে খুবই ব্যস্ত। তাছাড়া সীমান্ত চোরাচালানসহ সবকিছু দেখার দায়িত্ব বিজিবির। তারপরও আমাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালানো হয়। কেউ আমাদের নাম ভাংগিয়ে কোন অন্যায় করলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বীরেন্দ্রনগর কোম্পানীর বিজিবি কমান্ডার নায়েক সুবেদার হাফিজুর রহমান বলেন- আমাদের একজন উপরস্থ কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করছি। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পাচাঁরকৃত কয়লা উদ্ধার অভিযান চলছে এবং এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

6 + 19 =