আবুল কালাম আজাদ, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
মুরাদনগর উপজেলা একটি অবহেলিত গ্রাম হচ্ছে চুলুরিয়া গ্রাম বাড়িয়া চড়া গ্রাম। কয়েক হাজার মানুষ গরু, ছাগল হাঁসমুরগি কবুতর লালন পালন ও ৯০ শতাংশ লোকের প্রধান কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। নানান পেশার মানুষ নিয়ে গ্রামটি গড়ে ওঠেছে। একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি মসজিদ, ১টি ঈদগাহ ও দুটি বাশের সাকো ছাড়া কিছুই নেই চুলুরিয়া গ্রামের। পাশে রয়েছে আরচি নদী।
সরজমিনে গুরে জানা গেছে, কুমিল্লা জেলা মুরাদনগর উপজেলার ১নং শ্রীকাইল ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়াড চুলুরিয়া গ্রাম বাড়িয়া চড়া গ্রাম ও রোয়াচালা গ্রাম নিয়ে গঠিত। রাস্তায় বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে এক হাঁটু কাঁদা জমে, তখন হেঁটে চলাচল ও বিপদজনক হয়ে পড়ে। আশেপাশের সবগ্রামের রাস্তা পাকা হলেও চুলুরিয়া গ্রামের কাঁচা রাস্তাটি পাকা করার কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। নির্বাচন এলে রাজনৈতিক নেতারা রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে পাকা করার উদ্যোগ নেয়া হয় না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এই রাস্তাটি এলাকার যাতায়াতের একমাত্র পথ, বর্ষাকালে শিক্ষার্থীদের কষ্টের সীমা থাকে না। এ রাস্তায় চলাচলের বাধা একটাই এর বেহাল দশা রাস্তাটি পাকা হলে এই এলাকার হাজার হাজার মানুষের কষ্ট দূর হবে।
গ্রামবাসী দোকানদার শফিক মিয়া বলেন, আমরা গ্রামের মানুষ গরু ছাগল লালন পালন সহ কৃষিকাজ করেই, আমাদের জীবন চলে। বৃষ্টি হলে রাস্তায় চলতে পারি না। অনেক বছর ধরেই শুনে আসছি রাস্তাটি পাকা হবে কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন খবর নেই।
পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের ইমাম আবদুল কাদের ও পূবপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন,, নির্বাচন এলে মেম্বার থেকে শুরু করে এমপি পর্যন্ত সবাই অনেক প্রতিশ্রুতি দেয়, আমাদের সব সমস্যার সমাধান করবে রাস্তার জন্য কাজ করবে। কিন্তু ভোটের পর তাদের আর দেখা পাওয়া যায় না। ভোটের সময় এলেই তাদের প্রতিশ্রুতি নিতে আমরা ভেসে যায়।
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ শাহাবুদ্দিন, কবির হোসেন, রেজাউল হোসেন, হোসেন মিয়া বলেন, জনপ্রতিনিধিরা সবাই নির্বাচনের পর ব্যস্ত হয়ে যায় আমাদের কেউ খোঁজ রাখে না। বর্তমান সরকার যখন দেশের মানুষের জন্য অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছে তখনও এলাকাবাসী জনপ্রতিনিধিদের মুখের ভুলিতে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখে। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ এর কারণে দিনমজুরের খরচ বেশি দাঁড়ায়। অনেকে আছে সাধারণ কর্মঠ মানুষ তারা ভ্যান, রিক্সা, অটোরিকশা চালিয়ে দিন আনে দিন খায়, তারা এই রাস্তার বেহাল অবস্থার জন্য কর্মে যেতে পারে না। গ্রামের মানুষ তাদের উৎপাদিত কৃষি পূর্ণসহ যাবতীয় সবকিছু বাজারজাত করতে শহরে নিতে পারছেন না।
চুলুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ কামরুল ইসলাম শাহিন বলেন, কুমিল্লা জেলা মুরাদনগর উপজেলা একটি অবহেলিত গ্রাম হচ্ছে চুলুরিয়া । কয়েক হাজার লোকে বসবাস। দুইটি বাঁশের সাকো, দুইটি মসজিদ, একটি ঈদগা, একটি দোকান ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া আর কিছুই নেই।
শ্রীকাইল ইউপি ৪নং সদস্য মোঃ মাসুকুল ইসলাম মাসুক বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে অত্যন্ত অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে এ ইউনিয়ন। আরচি নদী পাড়ে ভাঙা থাকায় অতিরিক্ত জোয়ারের পানি ঢুকে কাঁচা-পাকা রাস্তাঘাট ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে।
শ্রীকাইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার বলেন, এরপর থেকে রাস্তাঘাট নির্মাণ ও মেরামতের জন্য উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে একধিকবার আলোচনা করেছি, কোনো লাভ হয়নি। কর্তৃপক্ষ এ ইউনিয়নের প্রতি সুনজর দেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী(এলজিইডির)মোহাম্মদ রায়হানুল আলম চৌধুরী বলেন, ওই ইউনিয়নের পাকা সড়কটি সংস্কারের প্রক্রিয়া চলছে। আরও কিছু সড়ক পাকা করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে বলেও সাংবাদিকদের জানান তিনি।