সিটি টোল এর নামে সজীব  দুলাল  প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি

0
198

হাইকোর্টের রিট পিটিশন নং ৪৬/৪০/২০২২ এর আদেশ মোতাবেক টার্মিনাল ব্যতিরেকে কোন সড়ক বা মহাসড়কে টোল উত্তোলন করা যাবে না। আদেশে আরো বলা হয় কেবলমাত্র পৌর মেয়র নির্মিত টার্মিনাল হলে সেই টার্মিনাল থেকে টোল আদায় করা যাবে। টোল আদায় করতে হবে টার্মিনাল এর ভিতরে, কোন অবস্থাতেই সড়ক বা মহাসড়কে নয়। হাইকোর্টের এই আদেশকে অমান্য করে রাজধানীর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে টোল আদায় করা হচ্ছে। ৪টি স্থানের টোল এর বৈধতা থাকলেও প্রায় অর্ধশত স্পট থেকে জোর করে টাকা তুলছে ইজারাদারদের সহযোগীরা।

প্রায় রাজধানীর প্রতিটি রাস্তার প্রবেশ করার সড়ক মুখেই প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি চলছে। গুলিস্থান, মতিঝিল, কমলাপুর, যাত্রাবাড়ী, জুরাইন, কদমতলী, পোস্তগোলা, শনির আখড়া, রায়েরবাগ, কোনাপাড়া, ডেমরা, মাতুয়াইল, মেরাদিয়া, স্টাফ কোয়ার্টার, নন্দীপাড়া, মাদারটেক, সহ প্রায় আরো ৩০-৪০ টি স্পটে চলছে সিটি কর্পোরেশনের নামে চাঁদাবাজি। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করছে ইজারাদারদের লোকজন। তেমনই স্টাফ কোয়ার্টারের পেট্রোল পাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে পিকাপ, কাভার্ডভ্যান,  ও নাভানা থেকে প্রতিবার ৩০ টাকা মূল্যের চাদা আদায় করেন দুলাল ও সজীবের লোকজন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে মারধরও হয়রানির শিকার হতে হয় গাড়িচালকদের। একইভাবে সড়কের গাড়ি থামিয়ে চাঁদা তোলার জন্য যানজট তৈরি হওয়া সহ বিভিন্ন রকম দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয় পথচারী ও যাত্রীদের।

এতে ভোগান্তির শিকার হয় পথচারী ও নানা পেশাজীবী মানুষসহ আগত ছাত্র- ছাত্রী  নারী পুরুষ সহ প্রায় সকলেই। সরেজমিনে গিয়ে গত শনিবার ৯-১২-২৩ তাং সাংবাদিকদের একটি অনুসন্ধানী টিম দেখতে পায় প্রকাশ্যেই দুলাল ও সজীবের লোকজন চাঁদা তুলছে, কাছে গিয়ে জানতে চাইলেই মুহূর্তেই দৌড়ে পালিয়ে যায় দুলাল সজীবের দুজন কর্মচারী। এ বিষয়ে পাশেই ডিউটিরত  পুলিশ কর্মকর্তা বিষ্ণু সাহেব কে প্রশ্ন করলে তিনি জানায় এই টোলের ইজারার বৈধতা রয়েছে বলেই জানিয়ে আসছেন উক্ত চক্র। অথচ এই পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যে বেরিয়ে আসে র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন  (RAB)কতৃর্ক দুলাল ও সজীবের লোকদের পূর্বে গ্রেফতারের বিষয়টি।এছাড়াও তিনি জানান ইতিপূর্বে তাদের আগে কয়েকবার থানায় নিয়ে গেলেও বিভিন্নভাবে  তারা থানা থেকে চলে আসে।

সিটি টোলের নামে এই চাঁদাবাজি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি পরিষ্কার করে বলতেও পারিনি আদৌ এর কোন বৈধতা আছে কিনা? পরবর্তীতে তিনি জানান তাদেরকে দেখিয়ে দিতে পারলে তিনি গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাবেন। এদিকে স্থানীয় কয়েকজন দোকানদারকে প্রশ্ন করলে তারা জানায় আমরা জানি এটা অবৈধ কিন্তু কিছু বলি না ভয়ে।যদি আমাদের সাথে কোন ঝামেলা হয়। এ বিষয়ে সজীব দুলালের সাথে কথা হলে মুঠোফোনে তারা জানায় এটা ৭-এলিভেন এন্টারপ্রাইজের ৫কোটি ২০ লক্ষ টাকা ইজারার ডাকা একটি সিটি টোল।দুলাল সাহেবের বক্তব্যে  বেরিয়ে আসে বিভিন্ন মাধ্যমে লোকদের টাকা পয়সা দেওয়ার গল্প। এখন সচেতন মহলের প্রশ্ন হল চারটি টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীণ চাঁদা আদায় বৈধ হলে, স্টাফ কোয়ার্টারের এই চাঁদার  বৈধতা কি করে পাওয়া সম্ভব?যেখানে সড়কে টোল আদায়  সম্পূর্ণ আইনত অপরাধ তাহলে কি করে দুলাল ও সজীব এই চাঁদা প্রকাশ্যে প্রশাসনের সম্মুখেই তুলছে?হাইকোর্টের আদেশের বিষয়ে পুলিশ সদস্যের এই না জানার বিষয়টি কোন দিকে ইঙ্গিত করে।এবং সাংবাদিকদের কে চাঁদাবাজ চক্রকে ধরিয়ে দিতে বলেন।তাহলে কি ডিউটিরত পুলিশ কর্মকর্তারা বিষয়টি দেখছেন না?নাকি তাদের অজানা।প্রশাসনের নাকের ডগায় দুলাল ও সজীব চক্রের এই চাঁদাবাজি তাহলে রুখবে কে?পথচারী ও গাড়ির চালকরা দুঃখ প্রকাশ করে এ সকল চাঁদাবাজদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের  জোর পদক্ষেপ কামনা করেন। এছাড়াও স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন দ্রুত এই চাঁদাবাজি বন্ধ করে যানজট নিরসন ও গাড়িচালকদের  হয়রানীর থেকে মুক্ত করতে কতৃপক্ষের কঠোর ভূমিকা পালন করা জরুরি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

four × 5 =