আশুলিয়ায় মাদক কারবারিকে ব্ল্যাকমেইল স্বর্ণালংকার লুট নগদ টাকা আদায়ের অভিযোগ এস আই জোহাবের বিরুদ্ধে

0
172

এম শাহীন আলম : আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকায় বিনা ওয়ারেন্টে কোন প্রকার মাদক দ্রব্য কিংবা অবৈধ কিছু না পেয়েও এক মাদক কারবারির বাসায় ঢুকে তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন (ব্ল্যাকমেইল)করে স্বর্ণালংকার সহ নগদ ৫২ হাজার টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক জোহাব আলসহ সোর্সদের বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে জানা যায়, গত ১৭ ই ডিসেম্বর বিকাল ৪ টার দিকে আশুলিয়া থানার ভাদাইল কেন্দ্রীয় মসজিদ এলাকায় একটি প্রাইভেটকারে করে পুলিশের পোষাক পরিহিত অবস্থায় কয়েকজন সোর্স নিয়ে আরিফ নামের এক মাদক কারবারির ভাড়া বাসায় ডাকাতি স্টাইলে অভিযান চালান এস আই জোহাব আলী ও পুলিশের কয়েকজন সোর্স ।

বিনা ওয়ারেন্টে তল্লাশীর ঘর থেকে নগদ ৩২ হাজার টাকা ও আলমারি ভেঙ্গে স্বর্ণালংকার নেয়। ঘটনার স্হলে তাৎক্ষণিক মাদক কারবারি আরিফ’কে এস আই জোহাব আলী তাদের ব্যক্তিগত প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে নগদ ২ লাখ টাকা দাবি করলে আরিফের স্ত্রী নিরুপায় হয়ে বিশ হাজার বিনিময়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।

স্হানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়ে সেদিন গভীর রাতে একজন কনেস্টবল সহ এসআই জোহাব আলী পূনরায় মাদক কারবারি আরিফের বাসায় যান। বিষয়টি দফা রফা করা চেষ্টা করেন। সে রাতেই জোহাব আলী বিভিন্ন হুমকি ধমকি দিয়ে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য চাপ দেন বলে অভিযোগ করেন কথিত এই মাদক কারবারি আরিফ।

এসব বিষয়ে জানতে এস আই জোহাব আলীকে মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি সরাসরি দেখা করার কথা বলেন।

পরদিন ১৮ ডিসেম্বর সংবাদকর্মীদের সরাসরি দেখা করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে এস আই জোহাব সংবাদকর্মীদেরকে বলেন, “কি জানতে চান বলেন, আমি কোন সাংবাদিকের ধার ধারি না এবং কোন সাংবাদিককে টাকা পয়সা দেইনা” ।

আমি ওই মাদক কারবারির কাছে থেকে বিশ হাজার টাকা নিয়েছি এটা সত্য এখন আমার বিরুদ্ধে নিউজ করলে করতে পারেন তাতে আমার কিছু যায় আসে না, আমি উত্তরবঙ্গের ছেলে, আমার বাড়ি সৈয়দপুর, ঢাকা জেলার এস পি আমার নিকটতম আত্মীয়, দেখলেন না এর আগেও আশুলিয়া থানায় কয়েক বছর ছিলাম, আবার কয়েকমাস না যেতেই ফিরে আবার আশুলিয়া থানায় আসছি,আমার হাত কোথায় এখন অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন বলে আমার পকেটে জোর পূর্বক দস্তাদস্তি করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায় এস আই জোহাব আলী।

এস আই জোহাব আলী জানান,আপনাকে তেল খরচ আর নাস্তা করার জন্য সৌজন্যতা বোধ দেখাচ্ছি এরকম দুই চারটা নিউজ করলে আমার কিছুই হবে না আমাকে বদলি করতে হলে এসপি’র  পারমিশন লাগবে। যেখানে এসপি আমার লোক সেখানে ওসি আমার কি করবে, ওসির কি সেই ক্ষমতা আছে এসপি’র অনুমতি ছাড়া বদলি করার।

জোহাব আলী আরো বলেন, আপনাদের হয়তো জানা নেই আমি এর আগেও আশুলিয়া থানায় ছিলাম এবং আমাকে বদলি করা হয়েছিল কিন্তু ছয় মাস যেতে না যেতেই আমি আবার আশুলিয়া থানায় চলে আসছি, এখন আমার দুই বছর চলে কেউ সরাতে পারেনি তাহলে বুঝেন আমার ক্ষমতা কতদূর, কত উপরে আমার হাত আছে তাছাড়া আমার যা কিছু ভালো মন্দ করার এসপি স্যার করেন।

স্হানীয় সুত্রে আরো জানা যায়, এস আই জোহাবের সাথে যে সকল দালালরা কাজ করেন তার অধিকাংশই মাদক মামলার আসামি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়জন হলো- আরিফ,কামাল ও শিপন। আরো কয়েকজন যারা নিজেরাই অনেক সময় পুলিশের ভয় দেখিয়ে মানুষকে ব্ল্যাক মেইল করেন। 

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, কিছুদিন পূর্বেও আশুলিয়া থানার কবিরপুর এলাকায়  এক মাদক কারবারিকে ৪ কেজি গাঁজা সহ আটক করেন আশুলিয়া থানার এক এস আই সাথে ছিলেন সোর্স  শিপন তাকেও মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন  তারা এবং চার কেজি গাঁজার মধ্যে দুই কেজি গাঁজা কাঁইচাবাড়ি এলাকায় এক মাদক ব্যাবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন এস আই জোহাবের বিশ্বস্ত সোর্স শিপন।

এ বিষয়ে জানতে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এ এফ এম সায়েদ কে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি।

এবং সাভার সার্কেল এসপি মোঃ সহিদুল্লাহ’কে এ বিষয়ে জানালে তিনি সাংবাদিকদের সংখ্যা বেশি হেনতেন সাংবাদিকদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমালোচনা শুরু করে বলেন একজন বলবে আমার কাছ থেকে টাকা নিছে এটা বললেই কি হবে। তিনি জানান, এসআই জোহাব আলীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে তার (সার্কেল এসপি’র)কাছে লিখিত অভিযোগ করার সাংবাদিককে পরামর্শ দেন।

লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্হা নেবেন বলে জানান তিনি। অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে আরো বিস্তারিত পরের সংখ্যায় প্রকাশিত হবে। 

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

five × five =