আইনকে শাসন করবেন না! নতুন উপাচার্য নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত কোষাধ্যক্ষকে চলতি দায়িত্ব প্রদান করুন

0
75

ড. সুফি সাগর সামস্ অনিয়মের ভুত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের মাথা থেকে নামছেই না। অনিয়ম যেন প্রতিষ্ঠানটির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে রূপ নিয়েছে। ইতিপূর্বে প্রতিষ্ঠানটির ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদস্যরা অনিয়ম, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে দুদকের মামলায় জেল হাজতে দীর্ঘদিন অন্তরীণ ছিলেন। কারণ, তারা নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করতেন না।

বর্তমান চেয়ারম্যন জাভেদ মুনির আহমেদও একই পথে হাটছেন। কিন্তু আইন তার নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যায়। আইনকে অবজ্ঞা করে কেউ দীর্ঘদিন টিকে থাকতে পারে না। বর্তমান ট্রস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যন আইনের মাধ্যমেই চেয়ারম্যান পদ লাভ করেছেন। যে আইনের শপথ নিয়ে মি. আহমেদ চেয়ারম্যন হয়েছেন সেই আইনকে তার সুরক্ষা দিতে হবে। অন্যথায়, তিনি নিজেই আইনের সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হবেন।

জনগণ জানতে চায়, চেয়ারম্যন জাভেদ মুনির আহমেদআইন লঙ্ঘন করে উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলামকে পুনরায় উপাচার্য পদে নিয়োগ করে তার মাধ্যমে কোন অনিয়মকে আড়াল করতে চান? কোন কালো বিড়াল বেড়িয়ে পড়বে তাকে উপাচার্য পদে নিয়োগ না করলে? কি যাদু জানেন, অধ্যাপক ইসলাম, যে যাদুর বসে ট্রাস্টি বোর্ড বশীভূত? তিনি কি যাদু জানেন তা আমরা ২০২১ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২২ সালের মে মাস পর্যন্ত নর্থ সাউথ বিশ^বিদ্যালয়ের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করে প্রমাণ করে দিয়েছি। যদিও অনিয়মের প্রামাণিক অনুযায়ী ট্রস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছেন, কিন্তু উপাচার্য আতিকুল ইসলাম সবই জানতেন।

মি. ইসলাম ও ট্রস্টি বোর্ডের অভিযুক্ত সদস্যদের যৌথ কুপরামর্শেই সব অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছিল। সেই অনিয়ম দুর্নীতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতেই কী বর্তমান ট্রস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান উপাচার্য আতিকুল ইসলামকে পুনরায় উপাচার্য হিসেবে পেতে চান? অন্যথায়, তিনি কেন আইন লঙ্ঘন করে উপাচার্য পদে তাকে নিয়োগ দিলেন? সম্প্রতি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (বিওটি) চেয়ারম্যান জাভেদ মুনির আহমেদ ই-মেইলের মাধমে অধ্যাপক আতিকুল ইসলামকে ১৮ মাসের চলতি দায়িত্ব দিয়েছেন।

অধ্যাপক ইসলামকে চলতি দায়িত্ব দিয়ে চেয়ারম্যান জাভেদ মুনির আহমেদ চিঠিতে লিখেছেন, ‘এনএসইউ’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি অধ্যাপক আতিকুল ইসলামকে উপাচার্যের অন্তর্বর্তী পদের জন্য মনোনীত করেছি, যা তিনি গ্রহণ করেছেন। এই নিয়োগ ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।’ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এভাবে নিয়োগদান করতে পারেন না, এটা স্বেচ্ছাচরীতা। চেয়াম্যানের এই স্বেচ্ছাচারীতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নর্থ সাউথ বিশ^বিদ্যালয়ের মতো স্বনামধন্য বিশ^বিদ্যালয়ের জন্য একজন যোগ্যতাসম্পন্ন উপাচার্য পেতে কষ্ট হবে না।

অহেতুক বিতর্ক বাড়াবেন না। আইনকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিন। আইনের ব্যত্যয় ঘটাবেন না। আইনকে শাসন করবেন না। নিজেকে আইনের কাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ রাখুন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হলে রাষ্ট্রপতি ও আচার্য কর্তৃক নতুন উপাচার্য নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত উপ-উপাচার্য বা কোষাধ্যক্ষকে চলতি দায়িত্ব দিতে হয়। এই বিধানের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। জনগণ আন্তরিকভাবে প্রত্যাশা করছে, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও আচার্য নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন দক্ষ, যোগ্য এবং সর্বজন গ্রহণযোগ্য উপাচার্য নিয়োগদান করবেন। আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে দেওয়া অধ্যাপক আতিকুল ইসলামের নিয়োগ বাতিল করে নতুন উপাচার্য নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত উপাচার্য হিসেবে চলতি দায়িত্ব কোষাধ্যক্ষকে দেওয়ার জন্য নর্থ সাউথ বিশ^বিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও সম্মানিত সদস্যদের প্রতি বিনীত আহবান জানাচ্ছি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

one × 3 =