‘৫-১০ জনকে গু’লি করে থানার পুকুরে ভাসিয়ে দিলে কিছুই হবে না’

0
81

‘থানায় কতগুলো অস্ত্র থাকে জানেন? আপনাদের মতো ৫-১০ জনকে ধরে এনে গুলি করে থানার পুকুরে ভাসিয়ে দিলে
কিছুই করতে পারবেন না।’ সাতক্ষীরার আশাশুনিতে প্রতারণার মাধ্যমে চিংড়ির ঘের দখল করিয়ে টাকা আত্মসাতের পর
ঘেরের মালিকদের এভাবেই হুমকি দেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারী। এর আগে প্রকৃত মালিকদের
থেকে ঘের নিজের জিম্মায় নিয়ে অন্যদের দিয়ে দখল করান তিনি। দখলের সঙ্গে সঙ্গে ৫৪ একরের ঘের একদিনেই কেটে
শুকিয়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মাছ ধরে পুরো টাকাই পকেটে পুরেছেন ওসি বিশ্বজিৎ।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ
করেছেন। লিখিত অভিযোগে ওসি বিশ্বজিৎদের হাত থেকে সম্পত্তির মালিকরা জী বনের নিরাপত্তা চেয়েছেন। একদিকে
সম্পত্তি ও ঘেরে চাষ করা মাছের প্রায় ১৫ লাখ টাকা হারিয়ে অন্যদিকে ওসির নতুন করে হয়রানির হুমকিতে রয়েছেন
ভুক্তভোগীরা।
পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগটি দিয়েছেন সম্পত্তির মালিকদের মধ্যে একজন মো. মোছা মোড়ল। তিনি ইতিপূর্বে
অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে মামলা নেননি ওসি বিশ্বজিৎ।

লিখিত অভিযোগে মোছা মোড়ল জানিয়েছে ন, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গোকুলনগর গ্রামের কোপাত মোড়লের নেতৃত্বে ৩০-৪০
জন মোছা মোড়ল ও ওয়ারিশদের ৪৫ বিঘার ঘের দখল করতে যান। বিষয়টি নিয়ে তিনি ১৬ ফেব্রুয়ারি আশাশুনি থানার
ওসি বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারীর শরণাপন্ন হন এবং আসামিদের বিরুদ্ধে এজাহার জমা দেন। কিন্তু অফিসার ইনচার্জ
মামলা নথিভুক্ত না করে কোপাত গং যেন জবরদখল করতে না পারে, এ জন্য থানায় সালিশের প্রস্তাব করেন। অফিসার
ইনচার্জের প্রস্তাবমতে পরের দিন বিকেলে উভয়পক্ষ থানায় যান। এ সময় অফিসার ইনচার্জনির্দেশ দেন যে, আদালতের
কোনো নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত ওই সম্পত্তির ওপর কোনো পক্ষ যাবে না। এই মর্মেউভয়পক্ষ থেকে লিখিত স্বাক্ষর
করিয়ে নেন।
পরে ১৯ ফেব্রুয়ারি ওই স্থানে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে থানার ওসিকে আদেশ দেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা
ম্যাজিস্ট্রেট। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে দুপক্ষকে নোটিশ জারি করেন এসআই মুহিতুর রহমান। কিন্তু উক্ত নোটিশ জারি
করার পর থেকে জমির প্রকৃত মালিক মোছা মোড়লরা সেখানে যাওয়া বন্ধ রাখেন। কিন্তু পরবর্তী কোপাত মোড়ল গং ওই
ঘেরে গিয়ে মাছ মারতে শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে অফিসার ইনচার্জকে ২৫ ফেব্রুয়ারি লিখিতভাবে জানানো হলেও তিনি
কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ ছাড়া বারবার ওসি ও এসআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা সময়ক্ষেপণ করে অবৈধ
দখলদারদের সুযোগ করে দিতে থাকেন
সবশেষ গত মঙ্গলবার তারিখ বিকেল ৫টায় উভয়পক্ষকে থানায় ডাকেন এসআই মুহিতুর রহমান। কিন্তু ইতিমধ্যে অবৈধ
দখলকারীরা ঘের শুকিয়ে ফেলে এবং আনুমানিক ১৫ লাখ টাকার মাছ ধরে বিক্রি করে। মঙ্গলবার থানায় দুপক্ষ হাজির
হলে কোপাত মোড়ল একটি লাল রঙের ব্যাগে আনুমানিক ১৫ লাখ টাকা নিয়ে ব্যাগটি অফিসার ইনচার্জকে বুঝিয়ে দেন।
আগের রাত থেকে ঘের লুটের মাছ বিক্রি করা সমুদয় টাকা নিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ঘুষ হিসেবে দেন কোপাত মোড়ল।
এর আগের দিন রাতে ঘেরে লুটপাট চালানোর জন্য সন্ধ্যায় অফিসার ইনচার্জকে ২ লাখ ও এসআইকে মুহিতুর রহমানকে
৫০ হাজার ঘুষ দিয়ে যান কোপাত মোড়ল।
লিখিত অভিযোগে মোছা মোড়ল জানিয়েছে ন, মঙ্গলবার কোপাত মোড়ল অফিসার ইনচার্জের রুমে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর
মোছা মোড়লসহ ঘেরের প্রকৃত মালিকদের ডাকা হয়। কক্ষে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে
দুর্ব্যবহার শুরু করেন। এ সময় তিনি সিদ্ধান্ত দেন যে, কাল রাতে যারা ঘের দখল করেছে তারাই ঘেরে থাকবে। আমরা
সম্পত্তির মালিক হিসেবে সেখানে গেলে আমাদের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা নিয়ে গ্রেপ্তার করা হবে। এ ছাড়া এই বিষয়ে
কোনো রকম বাড়াবাড়ি করলে কোপাত গং দ্বারা একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করিয়ে জীবন ঝাঁঝরা করে দেওয়া
হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন। এমতাবস্থায় আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেন এবং
জীবন বাঁচা তে চাইলে চুপচাপ থাকবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন। এ সময় অফিসার ইনচার্জহুমকি দিয়ে বলেন, থানায়
কতগুলো অস্ত্র থাকে জানেন? আপনাদের মতো ৫-১০ জনকে ধরে এনে গুলি করে থানার পুকুরে ভাসিয়ে দিলে কিছুই
করতে পারবেন না।
মোছা মোড়ল অভিযোগ লিখেছেন, এ সময় এসআই মুহিতুর রহমান বলেন, আপনাদের বাপ-দাদারা জমি জায়গা রেখে
গেছেন। সবাই হজ করে আসেন। হজ করে চুপচাপ গ্রামে থাকবেন। এই ঘটনা নিয়ে কোনো ঝামেলা করার চেষ্টা করলে
ওসি স্যার কী বললেন বুঝতে পেরেছেন? একই সঙ্গে ওসি কোপাত মোড়লকে উদ্দে শ করে বলেন, এই ওরা যদি এখান

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 × 3 =