দালালের ফাঁদে পড়ে লিবিয়ায় চার যুবক

0
31

দালাল চক্রের সদস্যরা লিবিয়ায় উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে চার যুবককে
প্রথমে দুবাই তারপর সিরিয়া মিশর হয়ে লিবিয়ায় পাঠিয়ে তুলে দেয় সংঘবদ্ধ মাফিয়াদের হাতে। এরপর তাদের
নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দাবি করা হচ্ছে ১০ লাখ করে চল্লিশ লাখ টাকা। মুক্তিপণ দিতে ব্যর্থহলে
জীবন দিতে হবে চক্রের হাতে চার জিম্মিকে। জন্য সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়।
দালাল চক্রের সদস্যরা লিবিয়ায় উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখায়। নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা নিয়ে চার যুবককে প্রথমে দুবাই
তারপর সিরিয়া মিশর হয়ে লিবিয়ায় পাঠিয়ে তুলে দেয় সংঘবদ্ধ মাফিয়াদের হাতে। এরপর তাদের নির্যাতনের ভিডিও
পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দাবি করা হচ্ছে প্রতিজন থেকে ১০ লাখ করে চল্লিশ লাখ টাকা। মুক্তিপণ দিতে ব্যর্থহলে
জীবন দিতে হবে চক্রের হাতে চার জিম্মিকে। এজন্য সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়,
বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেল ৩টার মধ্যে যত পারে তত টাকা দিতেও বলা হয়। টাকা না দিলে একজন করে লাশ পড়বে
বলে জানান অপহরণকারীরা। বুধবার বিকেলে অপহৃতদের স্বজনরা ইউএনও ও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের
করেন।
অপহৃত চার যুবক হলেন, চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মধ্যম গহিরা বাচা মিয়া মাঝির ঘাট
এলাকার নুরুল আলমে র ছেলে মো. ওয়াসিম (২২), মৃত মোজাহের মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিন (১৯), আবদুর রহিমের
ছেলে জাবেদুর রহিম (১৯) ও জেবল হোসেনের ছেলে নাঈম উদ্দিন (২০)। তারা একই এলাকার বাসিন্দা।
অপহৃতদের স্বজনরা জানান, গহিরা এলাকার মো. হোসেনের ছেলে জহিরুল ইসলাম গত দুই মাস আগে স্থানীয়
কয়েকজন বাসিন্দাকে উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে লিবিয়ার হাসপাতালে চাকরি দেওয়ার আশ্বস্ত করেন। এতে মো.
ওয়াসিম, বোরহান, জাবেদুর রহিম ও নাঈম উদ্দিন তার সাথে যোগাযোগ করে। প্রতিজন চার লাখ বিশ হাজার টাকা
করে জহিরুল ইসলামকে মোট ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে লিবিয়ার উদ্দেশ্যে বের
হয় তারা।


তারা আরও জানান, জহিরুল তাদের টুরিস্ট ভিসায় প্রথমে দুবাই নিয়ে গিয়ে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের বাসিন্দা মো.
মিজান নামে এক লোকের হাতে তুলে দেন। মিজান তিন দিন পর তাদের সবার পাসপোর্টনিয়ে নেন। সাত দিন পর
দুবাই থেকে মিশর হয়ে লিবিয়া নিয়ে মিজান অন্য দালালের হাতে বিক্রি করে দেন।
স্বজনরা জানান, লিবিয়ায় তাদের মাসখানেক কিছুকাজ দেওয়ার পর গত সোমবার (২৫ মার্চ) তাদের বন্দি করে রাখে।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) পরিবার ও স্বজনদের কাছে কয়েকটি নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ ও অডিও পাঠায়। এতে প্রতিজনের

থেকে ১০ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করেন। টাকা প্রদানের জন্য ইসলামী ব্যাংকের চকরিয়া শাখার একটি ব্যাংক
হিসাব নংও দেন। টাকা দিতে অপারগ হলে তাদেরকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়।
তারা আরও জানান, বর্তমানে ৪ যুবক লিবিয়ার একটি গোপন স্থানে বন্দি জীবনযাপন করছেন। টাকা পেলেই ফিরে
দেবেন বলে জানান অপহরণকারীরা। দুইদিন ধরে দালালরা তাদের নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজও পাটাচ্ছে।
অপহৃত জাবেদুর রহিমের বাবা আবদুর রহিম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, টাকা পয়সা স্বর্ণালংকার যা ছিল সব দিয়ে
ছেলেকে বিদেশ পাঠি য়েছি। সেখানে ছেলে প্রতারণার শিকার হয়েছে। এখন ১০ লাখ টাকা দিলেই ছেলেকে ফেরত
দেবে বলে জানাচ্ছে অপরণকারীরা। আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
বোরহান উদ্দিনের ভাই সাহাব উদ্দিন বলেন, বুধবার ৩টার মধ্যে চারজনের জন্য চার লাখ টাকা পাঠাতে বলেছে।
বিকেল থেকে আমার মুঠোফোনের ইমুও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে একাধিকবার ফোন করছে টাকার জন্য। তাদের
নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজও পাঠাচ্ছে। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
আনোয়ারা ইউএনও মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, উপজেলা রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা এলাকার চার যুবককে লিবিয়া
নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। বিষয়টি
সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

19 − seven =