বউ-শাশুড়ী’ হত্যা মামলার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত অন্যতম প্রধান আসামি অংশুমান সহ ০৩ আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০   

0
22

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী এবং খুন, অপহরনসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার পলাতক আসামী গ্রেফতারে র‌্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব ইতোমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। 

 অনুসন্ধানে জানা যায় যে, মামলার বাদী সঞ্জীব গাইন (৪৫), পিতা- মৃত চিত্তরঞ্জন গাইন, সাং- আমতলা (বানিশান্তা), থানা- দাকোপ, জেলা-খুলনার আপন ভাই ভিকটিম অশোক গাইন (৪২) । ধৃত আসামী অংশুমান মন্ডল (৬০), পিতা- মৃত বিমল কৃষ্ণ মন্ডল সাং-হরিনটানা, থানা- দাকোপ, জেলা-খুলনা’র ধান ক্ষেতের পাশে বিগত তিন বছর পূর্বে বাড়ী করে সেখানে বৃদ্ধ পিতা-মাত স্ত্রী সহ বসবাস করে আসছিল।

ধান ক্ষেতের পাশে বসতবাড়ী হওয়ায় ভিকটিমের গৃহপালিত গরু-ছাগল, হাস-মুরগী মাঝেমধ্যে আসামীর ধান ক্ষেতে যেয়ে ফসল নষ্ট করত। এই নিয়ে ভিকটিম ও আসামীদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত। ধৃত আসামী অংশুমান অন্য আসামিদের যোগসাজসে কু-মতলবে রাতের আধারে তার ধান ক্ষেতের আইলে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে রাখে।

ঘটনার দিন  ১৯ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখ সকাল ১১:৩০ ঘটিকার সময় ঘটনাস্থল খুলনা জেলার দাকোপ থানাধানী খুটাখালী হরিণটানা সাকিনস্থ ধৃত আসামি অংশুমান মন্ডলের ফসলীয় জমির আইলে ভিকটিমের বৃদ্ধ মাতা মৃত চপলা গাইন (৬৫) শাক তুলতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়ে। তার শোর চিৎকারে ভিকটিমের স্ত্রী মৃত টুম্পা গাইন (৪০) এগিয়ে গেলে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়ে। তাদের শোর চিৎকারে ভিকটিম এগিয়ে গেলে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। 

উক্ত ঘটনার পর ভিকটিমের বড় ভাই সঞ্জীব গাইন (৪৫) বাদী হয়ে খুলনা জেলার দাকোপ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজুর বিষয়টি জানতে পেরে উক্ত হত্যাকান্ডে জড়িত সকল আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়।  নৃশংস এই হত্যাকান্ডটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করায় সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের বিষয়টি জানতে পেরে র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩, ফরিদপুর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল উক্ত হত্যাকান্ডে জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২৫ মার্চ ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক রাত ০২.৩০ ঘটিকায় র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এবং র‌্যাব-৯ এর সহযোগিতায় বাগেরহাট জেলার মোংলা ও রামপাল এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে খুলনা জেলার দাকোপ থানার মামলা নং-১১, তারিখ-১৯/০৩/২০২৪ খ্রিঃ; ধারা-দন্ডবিধি আইন ১৮৬০ এর ৩০২/৩৪; চাঞ্চল্যকর ‘বউ-শাশুড়ী’ হত্যা মামলায় জড়িত পলাতক আসামী ১। অংশুমান মন্ডল (৬০), পিতা- মৃত বিমল কৃষ্ণ মন্ডল ২। শাওন মন্ডল (২৫), পিতা- অংশুমান মন্ডল,  ৩। পিযুষ কান্তি হালদার (৫৮), পিতা- নিরোধ বিহারী হালদার, সর্ব সাং- হরিণটানা, থানা- দাকোপ, জেলা- খুলনাদের’কে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, গ্রেফতারকৃত আসামীরা উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তারা উক্ত হত্যাকান্ডের পর থেকে নিজেদেরকে আইনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য বাগেরহাট জেলার মোংলা ও রামপালসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে ছিল বলে জানা যায়।  

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 × 5 =