বাবা দরিদ্র বলে কিশো রী বয়সেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছিল আর্জিনাকে। বছর দুয়েক যেতে না যেতেই কোলজুড়ে
আসে ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান। ভালোবেসে শিশুটির নাম রাখেন রুসদা হাসান। অভাব টনটনে থাকলেও আগত
সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে আর্জিনা ভুলে যান সব দুঃখ-কষ্টের কথা। কিন্তু ভাগ্য তাকে ঠেলে দিয়েছে আর এক কঠিন
পরীক্ষায়। শিশুটি জন্মগতভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ২ লাখ টাকা। কিন্তু এই
ব্যয়ভার মেটানো কোনোভাবেই সম্ভব নয় হতদরিদ্র মায়ের পক্ষে। এ জন্য সমাজের মানুষের কাছে ১০টাকা, ২০ টাকা
করে হলেও সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়েছেন শিশুটির মা আর্জিনা।
জানা যায়, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা র চাচিয়া মীরগঞ্জ গ্রামের সুমন মিয়া ও আর্জিনা খাতুন দম্পতির একমাত্র
কন্যা সন্তান রুসদা হাসান। বয়স ৬ মাস কয়েক দিন। জন্মের পর থেকেই শিশুটির ভালো যাচ্ছিল না শারীরিক অবস্থা।
জ্বরের পাশাপাশি কষ্ট হচ্ছিল শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে। সন্তানের এমন কষ্টে ভেঙে যায় মমতাময়ী মায়ের মন। চিকিৎসার জন্য
নিয়ে যান রংপুরের শি শু বিশেষজ্ঞ ডা. বিকাশ মজুমদারের কাছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক জানিয়েছেন শিশুটি
জন্মগতভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত। ছিদ্র রয়ে ছে তার হার্টে। সঙ্গে নিউমোনিয়া। আপাতত নিউমোনিয়া নিরাময়ের জন্য
চিকিৎসকের পরামর্শেতাকে ভর্তি করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে।
আরও জানা যায়, সেখানে কয়েক দিন চিকিৎসার পর নিউমোনিয়া আরোগ্য হলে ওই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে
নেওয়া হয় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, ঢাকায়। সেখান থেকে রেফার্ডকরা হয় ন্যা শনাল হার্টফাউন্ডেশন হাসপাতাল
অ্যান্ড রিসা র্চ ইনস্টিটিউটে। সেখানেই ডা. শাহরীন কবিরের তত্ত্বাবধানে পুনরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর
অপারেশনের পরামর্শদিয়েছেন ওই চিকিৎসক। আর এ জন্য দরকার ২ লাখ টাকা। অপারেশন হবে কোরবানির ঈদের
পরে কোনো সুবিধাজনক সময় কিংবা ৬ আগস্ট, এমনটা জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু হতদরিদ্র একজন মা-বাবার পক্ষে
এত টাকার জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। কি ন্তু অবুঝ মায়ের মন তো আর মানে না! যে করেই হোক, সন্তানকে বাঁচাতে
হবে তাকে।
তাই তো সমাজের মহানুভব মানুষেরদের প্রতি সাহায্যের জন্য আর্জিজানিয়ে মা আর্জিনা বলেন, মায়ের মন যে কী, তা
বুঝাবো কেমনে। কষ্ট দিয়েই তো শুরু করেছি জীবনটা। তার ওপর আমার মেয়েটির এমন কঠিন রোগ। মনটা ওর জন্য
শুধুই কাঁদে। কিন্তু উপায় কী? আমরা তো দরিদ্র। এত টাকা পাব কোথায়? সবাই দয়া করে আমার মেয়েটিকে বাঁচাতে
যদি বিকাশে ১০ টাকা বা ২০টাকা করেও পাঠিয়ে সাহায্য করতেন তাহলে হয়তো আমার বুকের ধন রুসদা হাসান রোগ
থেকে মুক্তি পেত। সাহায্য পাঠাতে একটি বিকাশ নম্বরও দিয়েছেন তিনি-০১৭৫২২৯৮১০৬।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান খান বলেন, ৬টি রোগের চিকিৎসায় সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে
আর্থিক সহায়তা করা হয় তার মধ্যে জন্মগতভাবে হৃদরোগ একটি। শিশুটির জন্য আবেদন করলেই আমি দ্রুত
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।