মতলব উত্তর উপজেলাকে একটি মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য …..মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার,মতলব উত্তর, চাঁদপুর

0
1543

মতলব উত্তর উপজেলাকে মাদক, বাল্য বিবাহ, ইভটিজিং, নারী ও শিশু নির্যাতন, জঙ্গী, সন্ত্রাস ও নাশকতামুক্তকরণসহ সকল প্রকার অপরাধমুক্ত করে এবং সরকারের সকল প্রকার উন্নয়ন কর্মকান্ড স্বচ্চতা ও জবাবদিহীতার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে একটি মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য। সরকার সকল ক্ষেত্রে সুষম উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আজ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করেছে এবং রূপকল্প ২০২১, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের মাধ্যমে অচিরেই উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। দারিদ্র বিমোচনে বাংলাদেশ বিশ্বে এখন রোল মডেল। ২০১৬ সালে সরকার জনগণকে ১০টাকা কেজি চাল সরবরাহ করছে যা অভাবনীয়।
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োগঃ এ উপজেলার ফরাজীকান্দি ইউনিয়নকে মাদকমুক্ত ইউনিয়ন ঘোষণা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো ইউনিয়ন এর আওতায় আনা হবে। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে প্রায় প্রতিদিন মাদক ব্যসায়ী ও মাদকসেবীদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদানের ফলে  মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীর সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে মাদকমুক্ত উপজেলায় পরিণত করা হবে। আমাদের জনশক্তির একটি বিশাল অংশ যুব সমাজ যা বিশ্বের কোথাও নেই। আজকের যুবকরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ তাই তাদেরকে সন্ত্রাস ও মাদকের হাত থেকে রক্ষা করে সঠিক পদ্ধতিতে জ্ঞানভিত্তিক উত্তম শিক্ষায় শিক্ষিত সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে আজকের যুবকরাই আগামী দিনে দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। তাই মাদকের ভয়াবহতা থেকে তরুণ সমাজকে দুরে রাখতে হবে। এ যাবৎ মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ এর বিভিন্ন ধারায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে শতাধিক মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
বাল্য বিবাহ নিয়ন্ত্রণঃ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বাল্যবিবাহ মুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন। আমরা সে লক্ষ্যে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বাল্য বিবাহের সংবাদ পাওয়া মাত্র প্রতিরোধ করার পাশাপাশি কাজী, ইমাম,জনপ্রতিনিধি ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে নিয়মিত সচেতনতা সভা করার ফলে এর প্রবনতা অনেক কমে এসেছে। বাল্যবিবাহের কুফল ও এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে অবহিতকরণ সভা, মা সমাবেশ ও অভিভাবক সমাবেশ করার ফলে সকলের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আশা করি ২০২১ সালের মধ্যে বাল্য বিবাহমুক্ত দেশ হবে বাংলাদেশ। দিনে রাতে অভিযান করে বাল্য বিবাহ সংগঠনে সহায়তাকারী, বর, বরের পিতা-মাতা, কনের পিতা-মাতা, কাজী এবং  অনিবন্ধনকৃত মৌলভীদের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
ইভটিজিংঃ ইভটিজিং প্রতিরোধে এ উপজেলায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শুরুর সময় ও ছুটির সময় পুলিশী টহল জোরদার করার ফলে ইভটিজিং এর প্রবনতা এ উপজেলায় নেই বললেই চলে। দন্ডবিধি ৫০৯ ধারার আওতায় প্রায় ১০ জন ইভটিজারকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদানের ফলে ছাত্রীরা নির্বিগ্নে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছে। বর্তমানে অত্র উপজেলায় ইভটিজিং নেই বললেই চলে।
শিক্ষার মান উন্নয়নঃ যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি তত উন্নত; কারণ শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষার মান উন্নয়নে আমরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত পাঠদান হচ্ছে কিনা তা তদারকি করার জন্য পরিদর্শন করা হচ্ছে। গরিব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের উপজেলা পরিষদের সহায়তায় উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। নিয়মিত মা সমাবেশ ও অভিভাবক সমাবেশ করে মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটি, ছাত্র, শিক্ষকদের করণীয় নির্ধারণ করার ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশুনা আগ্রহী হওয়ায় ফলাফল ক্রমান্বয়ে ভাল হয়ে আসছে। অত্র উপজেলায় নকলমুক্ত পরিবেশে পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। বেকারত্ব দূরীকরণ ও যুব সমাজকে তথা নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে আমাদের সকলকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। এ লক্ষ্যে এ উপজেলায় একটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা জরুরী বলে তিনি জানান।
মা ইলিশ ও জাটকা রক্ষা অভিযানঃ গত বছর জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন, ২০১০ এর আওতায় দিনারাত মেঘনা নদীতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনার ফলে জেলেরা জাটকা ও মা ইলিশ ধরা হতে বিরত থাকায় গত বছর চাঁদপুরে ইলিশের ব্যাপক উৎপাদন হয়েছে এবং সারা দেশের মানুষ স্বল্পমূল্যে ইলিশ ক্রয় করতে সক্ষম হয়েছে। এবারের লক্ষ্যমাত্রা ২১৬০০ মেঃটন। গত বারের চেয়ে এবারের  অভিযান আরো কঠোরভাবে করার ফলে লক্ষ্যমাত্রার দিগুন ইলিশ উৎপাদিত হবে মর্মে আশা করা যাচ্ছে। নিষিদ্ধ সময়ে কারেন্ট জাল দিয়ে মেঘনা নদীতে মা ইলিশ ধরার অপরাধে এ যাবৎ ২জনকে ২ বছর করে ও ১২ জনকে ১ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। নিয়মিত অভিযানের ফলে মেঘনা নদীতে কোন জেলে কিংবা মাছ ধরার নৌকা নেই। এর সুফল সারা দেশের মানুষ ভোগ করবে। এ বছরের অভিযানের সময়কাল ১২ অক্টোবর থেকে ০২ নভেম্বর পর্যন্ত।
ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনাঃ উপজেলা ভূমি অফিস ও ১১টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস অটোমেশান এর আওতায় আনা হয়েছে। ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল করার ফলে জনগণ যেকোন স্থান থেকে অনলাইনের মাধ্যমে ভূমির উন্নয়ন কর পরিশোধ, খতিয়ান উত্তোলন ও  জমা খারিজের আাবেদন করতে পারছে। এর ফলে ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্চতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি কম সময়ে হয়রানীমুক্তভাবে জনগণকে সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে।
ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা ও ডিজিটাল হাজিরার প্রবর্তন: উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ে কোজ সার্কিট ক্যামেরা ও ডিজিটাল হাজিরার প্রবর্তন করা হয়েছে।  এর ফলে অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারী ও সরকারি রেকর্ডপত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সঠিক সময়ে নিয়মিত অফিসে আসার ফলে কাজের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। জনগণ দ্রুত সেবা পাচ্ছে। স্বচ্চতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি দফতরে  এ ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন।
খাস জমি বন্দোবস্তঃ অত্র উপজেলার ভূমিহীন,গৃহহীন দু:স্থ অসহায় ১৫০টি পরিবারকে খাস জমিতে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। আরো ৩০০টি পরিবারের মাঝে ১০০ একর খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ২১টি গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে এবং আরো ১০০টি গৃহহীন পরিবারের প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে।
আবাসন আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মাণঃ পুরাতন অত্র উপজেলায় ৭টি আশ্রয়ন প্রকল্প রয়েছে। নতুন  করে ২টি আশ্রয়ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে যেখানে ১৫০টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হচ্ছে। আরো ৪টি আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। সম্প্রতি ছোট চরকালিয়া আশ্রয়ন প্রকল্পের ১৮০টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। “আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার অঙ্গীকার”  এ শ্লোগান অত্র উপজেলায় শতভাগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রতিটি আশ্রয়ন প্রকল্পের প্রবেশ মুখে “আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার অঙ্গীকার” সম্বলিত সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। পুরাতন আশ্রয়ন প্রকল্পসমূহ নিয়মিত পরিদর্শন করে এগুলোর মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। আশ্রয়ন প্রকল্পের উপকারভোগীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ঋণদানের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে স্বাবলম্বী করা হয়েছে। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
ভেঁজাল বিরোধী অভিযানঃ গত ২ বছরে এ উপজেলার প্রায় প্রতিটি হোটেল, রেস্টুরেন্ট, মুদি দোকান, বেকারী,আইসক্রীম কারখানা, ফলের দোকান ও ঔষধের দোকানের উপর নিয়মিত ভ্রাম্যমান অভিযান করার ফলে মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার/ঔষধ পরিবেশন ও  খাদ্যে ভেঁজাল প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। আনুমানিক তিন লক্ষাধিক টাকা অর্থদন্ড করে সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে।
ক্লিনিক,ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও  ফার্মেসীতে অভিযানঃ গত ২ বছরে এ উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফার্মেসী ও  ইউনানী ঔষধের দোকন মোবাইল কোর্ট আইন,২০০৯ এর তফসিলভুক্ত বিভিন্ন আইনে নিয়মিত ভ্রাম্যমান অভিযান করার ফলে ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফার্মেসী ও  ইউনানী ঔষধের দোকনসমূহে শৃংখলা ও পরিচ্ছন্নতা ফিরে এসেছে। কয়েকজন ভুয়া ডাক্তারকে কারাদন্ড  ও  আনুমানিক  দুই লক্ষাধিক টাকা অর্থদন্ড করে সকরারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে। এ ব্যবস্থার ফলে অবৈধ গর্ভপাত, ডাক্তার বিহীন সিজার অপারেশন ও ভুয়া ডাক্তারের তৎপরতা বন্ধ হয়েছে।
অবৈধ যানচলাচল প্রতিরোধঃ মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর আওতায় গত দুই বছরে অত্র উপজেলায় ১০০টি মামলায় প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকা অর্থদন্ড করে সকরারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে। ০৬ চাঁকার টাক্টর ও টলি সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক অত্র উপজেলায় কোন অবস্থায়ই চলতে দেয়া হবেনা। ফসলের মাঠে ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত এ যান শুধু সরকারি রাস্তারই ক্ষতি সাধন করছেনা বরং নিয়মিত কেঁড়ে নিচ্ছে অনেক তাঁজা প্রাণ।
বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনাঃ বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর বিভিন্ন ধারায় ২৫টি মামলায়  প্রায় ৭০ জন ব্যক্তিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও ১৩ লক্ষাধিক টাকা অর্থদন্ড আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করা হয়েছে । অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রবনতা কমেছে এবং বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনায় শৃংখলা ফিরে এসেছে।
ডিলিং লাইসেন্সঃ অত্যাবশকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৫৬ এর বিধান অনুযায়ী ১। যন্ত্রচালিত যানবাহন, ইহার অংশ এবং টায়ার ও টিউব ২। খাদ্য দ্রব্য ৩। তুলা ও পশমী বস্ত্র ৪। কাগজ ও কাগজজাত দ্রব্য ৫। কয়লা ৬। লোহা ও ইস্পাত ৭। অভ্র ৮। ঔষধপত্র ৯। রাসায়নিক দ্রব্য ও গ্যাস ১০। বৈদ্যুতিক ও বেতার যন্ত্রপাতি ১১। সাধারণ ও শল্য চিকিৎসার যন্ত্রপাতি ১২। কাঁচ এবং কাঁচজাত দ্রব্য ১৩। কৃত্রিম রেশমী সুতা ১৪। সাইকেল ও ইহার যন্ত্রাংশ ১৫। দিয়াশলাই ১৬। কাঠ ১৭। পানি ও পয়ঃপনালীর সামগ্রী ১৮। শিশু খাদ্য ১৯। সিমেন্ট ২০। সিগারেট ২১। সার ২২। চর্বি ২৩। টর্চের ব্যাটারী ২৪। বিভিন্ন শ্রেণির পণ্য যা সরকার কর্তৃক এ আইনের উদ্দেশ্যে গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অত্যাবশক পণ্য  হিসেবে ঘোষিত ২৫। ভোজ্য তেলবীজ এবং তেল ইত্যাদি পণ্য অত্যাবশকীয় পণ্য হিসেবে ঘোষিত যেগুলোর ক্রয় বিক্রয় পরিবহণ মজুদ ইত্যাদির জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে ডিলিং লাইসেন্স গ্রহণ করা আবশ্যক। অত্র উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ডিলিং লাইসেন্স করার জন্য প্রচারণা করা হয়েছে। যারা ০১ নভেম্বর/২০১৬ সালের মধ্যে ডিলিং লাইসেন্স গ্রহণ করবে না তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হবে।
আমাদের জনশক্তি একটি বিশাল অংশ যুব সমাজ যা বিশ্বের কোথাও নেই। আজকের যুবকরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ তাই তাদেরকে সন্ত্রাস ও মাদকের হাত থেকে রক্ষা করে সঠিক পদ্ধতিতে উত্তম শিক্ষায় শিক্ষিত সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে আজকের যুবকরাই আগামী দিনে দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। পাশপাশি আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ঘটাতে হবে। নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে আমাদের সকলকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। এ লক্ষ্যে এ উপজেলায় একটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা জরুরী বলে আমি মনে করি। শিক্ষার মান উন্নয়নে এ উপজেলার প্রায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করা হয়েছে।
নিয়মিত মা সমাবেশ ও অভিভাবক সমাবেশ করে মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটি ছাত্র শিক্ষকদের করনীয় নির্ধারণ করার ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশুনায় আগ্রহী হয়ে ও ফলাফল ক্রমান্বয়ে ভাল হয়ে আসছে।
নকলমুক্ত পরিবেশে পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।
মাদক, বাল্য বিবাহ, ইভটিজিংসহ সকল প্রকার অপরাধ প্রতিরোধে মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ এর তফসিলভুক্ত বিভিন্ন আইনে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে  ৩৬৫টি মামলায় ৫ শতাধিক ব্যক্তিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড প্রদান করা হয়েছে। তৎপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার  মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম এর কার্যকালে মতলব উত্তর উপজেলার আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি খুবই সন্তোষজনক ছিল এবং রয়েছে।
মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন দিনরাত মেঘনা নদীতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনার ফলে গত বছর চাঁদপুরের ইলিশের ব্যাপক উৎপদান হয়েছে। এ বারের অভিযান আরো কঠোরভাবে করার ফলে  লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুন ইলিশ উৎপাদিত হয়েছে ভ্রাম্যমান আদালতের মধ্যমে তার কার্যকালে ।
বর্তমান সরকার অপরাধীদের আশ্রয় ও প্রশ্রয় দেয়না তাই অপরাধী   যারাই হোক তাদেরকে আমরা আইনের আওতায় এনে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। সকল ক্ষেত্রে স্বচ্চতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমি আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এ ব্যাপারে প্রশাসনসহ  সমাজের সকল শ্রেণির সচেতন মানুষের সহযোগীতা আমাদের প্রয়োজন। বিভিন্ন অপরাধের কারণে অর্থদন্ড করে ২৫ লাখ টাকা সরকারের রাজস্ব আদায় করেন। এবং ৫ শাতাদিক ব্যক্তিকে বিভিন্ন অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদে কারা দন্ড প্রধান করাহয়। যা অতীতে মতলব উত্তর উপজেলা নির্র্বাহী অফিসার থাকালীন অবস্থায়  কারো পক্ষেই তা সম্ভব হয়নি। তিনি আরো বলেন- ভোটের মাধ্যমে তিন বারের নির্বাচিত প্রধান মন্ত্রী সফল রাষ্ট্রনায়ক দেশ রতœ  জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষা, নারী উন্নয়ন, প্রযুক্তি এবং সন্ত্রাসবাদ  দমনসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ সাফল্য অভুতপূর্ব। তার এই উন্নয়নমুলক কর্ম কান্ডের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে আরো বহুদুর এগিয়ে যাবে আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ।
বর্তমান সরকারের আমলে মতলবের কৃতী সন্তান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের  মন্ত্রী  মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (মায়া) বীরবিক্রম মতলব উত্তর উপজেলায় অনেক উন্নয়নমুলক কাজ করেছে। অত্র উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, পর্যটন কেন্দ্রসহ আরো অনেকগুলো উন্নয়ন মূলক প্রকল্প বরাদ্দ হয়েছে যা খুব শীঘ্রই শুরু হবে। এ ব্যাপারে আমি আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছি।
অপরাধ বিচিত্রার স্টাফ রিপোর্টার মোঃ তুহিন ফয়েজের সাথে এক সাক্ষাৎকালে এ কথাগুলো বলেন-চাঁদপুর জেলাধীন মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম। তিনি মতলব উত্তর উপজেলায় যোগদানের পূর্বে রাঙ্গামাটি উপজেলায় বেশ সুনামের সাথে কাজ করে আসছে বলেও জানা যায়। তিনি গত  ০৩ জুন ২০১৪ ইং তারিখে মতলব উত্তর উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করে অদ্যাবদি উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে তার উপর অর্পিত সরকারের যে দায়িত্ব রয়েছে তা তিনি আইন শৃংখলা বাহিনী ও  সমাজের সচেতন ব্যত্তিবর্গকে সাথে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
বাল্য বিয়ে সম্পর্কে তিনি বলেন- মতলব উত্তরে বাল্য বিয়ে আগের তুলনায় অনেক কমেছে। কোন এলাকায় বাল্য বিয়ে হচ্ছে এমন তথ্য আমাদের কাছে আসলে আমরা সাথে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। এ ব্যাপারে আমরা সব সময় সচেতন থাকি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দেশ রতœ সফল রাষ্ট্রনায়ক গণপ্রজাতন্ত্রী বংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার  ঘোষণা মতে আগামি ২০২১ সালের মধ্যে সারা বাংলাদেশে বাল্য বিয়ে জিরো টলারেন্সে নিয়ে আসবে ইনশা-আল্লাহ। এই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
আইন শৃংখলা বিষয়ে তিনি বলেন-মতলব উত্তর উপজেলার আইন শৃংখলা বর্তমানে খুবই ভালো।
সকল সমালোচনার ঝড়, প্রতিকুল পরিবেশ ও নানান প্রতিবন্ধকতাকে জয়করে দৃড়ভাবে নিজের দায়িত্ব আর কর্তব্যের প্রতি অবিচল থেকে সততা আর আদর্শের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সাফল্য অর্জন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম।
অপরাধ বিচিত্রাকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদঃ
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মফিজুল ইসলামঃ
অপরাধ বিচিত্রার সম্পাদক ও প্রকাশক সহ সকল সাংবাদিকদের প্রতি রইল আমার আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

four × 1 =