লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদন ঃ
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার চিলকা চাঁদপুর গ্রামের বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ছমেদ মিয়ার ছেলে আঃ রশিদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বাক্ষরিত চিঠিসহ দীর্ঘ একযুগ ধরে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের স্বীকৃতি পাচ্ছে না। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের দিন উপজেলা প্রসাশনের উদ্যোগে আয়োজিত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান মঞ্চের পিছনে দাড়িয়ে নিরবে কান্নাই করে গেছেন আঃ রশিদ। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে পাননি কোন সন্মাননা। মন খারাপ এবং চোঁখে পানি নিয়ে আঃ রশিদের সাথে কথা হয় রামগঞ্জ থানার এস আই মোঃ মহসিন চৌধুরীর। পরে এস আই মহসিন চৌধুরী উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের নজরে আনলে সাংবাদিকরা স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে কথা বলেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দের সাথে। জানতে চাইলে আঃ রশিদ কান্না জড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামে যুদ্ধকালিন সময় পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন আমার বাবা আব্দুল ছমেদ মিয়া। স্বাধীনতা পরবর্তি সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার মাকে শহীদ পরিবারের মর্যাদা দিয়ে ২ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন। প্রায় একযুগ আগে উক্ত অনুদানের চিঠির একটি কপি বাড়ীর অন্যান্য কাগজপত্রের সাথে পাওয়ার পর রামগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের নেতাদের দেখানো হয়। কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার পরামর্শে কয়েকবার আবেদনও করেন তিনি। বারবার আবেদন ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের নেতাদের সাথে যোগাযোগ করে এখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। এ সময় তিনি আক্ষেপের সহিত আরো বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে কত অনুষ্ঠান হয়। সবাই দাওয়াত পায়, খাওয়া পায়, ভাতা পায়। অথচ আমার বাবা এ দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। আমার মা শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী, আমরা শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এ স্বীকৃতিটুকু আজ পর্যন্ত পাই নাই। এখন অসুস্থ মা, ভাই-বোন, সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টে জীবন যাপন করছি। লেখাপড়া না জানায় এবং আর্থিক সংকটের কারনে ঢাকা গিয়ে যোগাযোগ করতে পারি নাই কারো সাথে।
এব্যপারে রামগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার তোফাজ্জল হোসেন বাচ্ছু জানান, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে ১০-১৫ জনের মতো বাদ পড়েছে বিভিন্ন সময়ে কারনে অকারনে। ইতোমধ্যে আমি ৪জন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাকে তালিকা থেকে বাদ দেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করেছি। ডেপুটি কমান্ডার গোলাম সরওয়ার মন্টু, হাবিবুর রহমানসহ অনেকে জানান, রামগঞ্জে আরো ১০/১৫জন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। তিনি আরো জানান, যুদ্ধকালিন সময় পাকিস্তানীদের হাতে অনেকে মারা গেছে। আঃ রশিদ প্রায় এসেছে, তবে আমার সাথে কখনও কথা হয়নি। শুনেছি মুক্তিযোদ্ধা শহীদ উল্লাহর মাধ্যমে আবেদন করেছে। আজ সাবেক মেয়র বেলাল আহম্মদসহ আলোচনা হয়েছে। অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে কিছু করা যায় কিনা, সে ব্যপারেও কথা হয়েছে।