দীর্ঘ ভোগান্তির পর মার্চ‘১৬ থেকে এমপিও ভূক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ৮ম পে স্কেল কার্যকর করা হলেও অদ্যাবধি বৈশাখী ভাতা এবং স্কেল ঘোষিত ৫% বার্ষিক ইন্ক্রিমেন্টসহ অন্যান্য ভাতা প্রদানে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সৃষ্টি করে নতুন করে ষড়যন্ত্রের আভাষ পাওয়া যাচ্ছে। এই লক্ষ্যে অদ্য ২৩ মার্চ ২০১৭ খ্রি. সকাল ১০টায় চট্টগ্রামস্থ আন্দরকিল্লা চত্বরে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি অনুসারে মানববন্ধন, শিক্ষক সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ বাংলাদেশ কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির উদ্যোগে অধ্যাপক উত্তম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকবিশিস কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি বাংলাদেশ পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের চট্টগ্রামের সম্পাদক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী। সভায় বক্তারা বলেন, আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যদিয়ে ৮ম বেতন স্কেলের প্রারম্ভিক অংশের শতভাগ পেয়ে থাকলেও অনেক সমস্যায় শিক্ষক সমাজ আজ ভারাক্রান্ত। দিন দিন হাজার হাজার শিক্ষক যথাযথভাবে পাঠদান করেও এমপিও ভূক্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাই এই সমস্ত নন এমপিও ভূক্ত শিক্ষকদের দ্রুত এমপিও ভূক্ত করা হউক। সরকারি বেসরকারি বৈষম্য দিন দিন বেড়েই চলছে। সরকারি শিক্ষক-কর্মচারী যথানিয়মে ৮ম পে স্কেলে বৈশাখী ভাতা, ৫% ইন্ক্রিমেন্টসহ অন্যান্য ভাতা পেয়ে থাকলেও বেসরকারি এমপিও ভূক্ত শিক্ষক কর্মচারী এ সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাই সমাবেশ থেকে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, আগামী মাসের বেতনের সাথে বৈশাখী ভাতা প্রদান সহ সরকারি নিয়মে অনতিবিলম্বে ৫% বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট এবং তার সঙ্গে শতকরা হারে ঘরভাড়া, চিকিৎসা ভাতা এবং পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদান করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানান। তার অন্যথা হলে বৃহত্তর ঐক্যবদ্ধ শিক্ষক আন্দোলনের মধ্যদিয়ে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবিসমূহ সরকারকে মেনে নিতে বাধ্য করা হবে। কুখ্যাত অনুপাত প্রথা বাতিল করে সহকারি অধ্যাপক, সহযোগি অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদ চালু করার আহ্বান জানান। বক্তারা আরো বলেন, বিক্ষিপ্তভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করে সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থাকে এক সাংঘর্ষিক অবস্থার দিকে ঠেলে না দিয়ে আগামী জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে জিডিপি’র ৪% বরাদ্ধ দিয়ে সুনির্দ্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে শিক্ষা ব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হউক। এমপিও ভূক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য আগামী জাতীয় বাজেটে ১ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ গিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধান করা হউক। বক্তারা আরো বলেন, অতি সম্প্রতি পটিয়া এবং সীতাকুন্ড উপজেলায় শিক্ষকের উপর বখাটের হামলা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে নিন্দা ও ঘৃণা জানিয়ে দুস্কৃতিকারীদের উপযুুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা এবং সারা দেশে জঙ্গি তৎপরতার উদ্বেগ প্রকাশ করে সকল শিক্ষক সমাজকে তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান।
অতপর মানববন্ধন ও সমাবেশ শেষে শিক্ষকরা মিছিল সহকারে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা, আইসিটি) মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মানববন্ধন ও শিক্ষক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাকবিশিস কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা অধ্যাপক কানাই দাশ, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অঞ্চল চৌধুরী, অধ্যক্ষ আবুল মনছুর মো. হাবিব, অধ্যক্ষ মোহাম্মদ রফিক উদ্দিন, অধ্যাপক তড়িৎ কুমার ভট্টাচার্য্য, অধ্যাপক নোমান আহমাদ ছিদ্দিকী, অধ্যাপক অজিত দাশ, অধ্যক্ষ রাজুল হোসেন, অধ্যক্ষ সুদত্ত বড়–য়া, অধ্যাপক লতিফা কবীর, উপাধ্যক্ষ দেবপ্রিয় বড়–য়া অয়ন, অধ্যাপক নুরুল মোমেন চৌধুরী, অধ্যাপক নাসিম, অধ্যাপক মৃণালিনী চক্রবর্ত্তী, অধ্যাপক শ্যামল দাশ, অধ্যাপক ভবরঞ্জন বণিক, অধ্যাপক আশরাফ উল্লাহ, অধ্যাপক শিলা দাশগুপ্তা, অধ্যাপক অসীম চক্রবর্ত্তী, অধ্যাপক হামিদা বেগম, অধ্যাপক আলম আক্তার, অধ্যক্ষ সুধীর চক্রবর্ত্তী, অধ্যাপক নুুরুল আবছার, অধ্যাপক শ্যামল বড়–য়া, অধ্যাপক আবদুল গফুর, অধ্যাপক ভূপতি দাশ, অধ্যাপক দিলীপ রায় প্রমুখ।
বাতা প্রেরক, নিউজটি আপনার পত্রিকা অফিসের ই-মেইলে দেওয়া হয়েছে। (অজিত দাশ), সাধারণ সম্পাদক , বাকবিশিস, চট্টগ্রাম মহানগর।