মূর্তি সরিয়ে ইসলামসহ অন্যান্য ধর্মের সম্মান করা হয়েছে: আইনমন্ত্রী

0
1488

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে মূর্তি সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, Ôএই মূর্তিটা কিন্তু থেমিসের আসল মূর্তির রূপ না। সেই ক্ষেত্রে যেটা আসল মূর্তিই ছিল না বলে আমার নিকট মনে হয় এবং এই মূর্তিটা সরিয়ে বরং ইসলাম ধর্মসহ অন্যান্য ধর্মের সম্মান করা হয়েছে।Õ তিনি বলেন, Ôআমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই মূর্তিটা যদি উপস্থাপন করতাম তাহলে এটা আসল যে থেমিস সেটাকে বিকৃত করা হতো।Õ

আজ শনিবার সকালে ঢাকায় সিরডাপ মিলনায়তনে বেসরকারি সংস্থা প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা) ও তামাক বিরোধী মিডিয়া জোট (আত্মা) আয়োজিত বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ও তামাক নিয়ন্ত্রণ সাংবাদিকতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাবিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, Ôআমরা কিন্তু বিকৃত করা থেকে সরে আসতে চাই এবং অতীতে যেসব বিকৃত করা হয়েছে সেগুলোকে আমরা সব সময় নিন্দা করি।Õ এসময় মূর্তি সরানোতে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী বলেন, তামাক ও ধূমপান জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। ধূমপান কেবল ধূমপায়ীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না পরোক্ষভাবে অধূমপায়ীকেও সমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে।  কারণ উন্নয়ন এবং সুস্বাস্থ্যের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিদ্যমান। তাই আমাদের উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হলে, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কনভেনশন FCTC-এর বাস্তবায়ন।

তিনি বলেন, আমি মনে করি FCTC-এর বাস্তবায়ন বিশেষভাবে ২টি সুনির্দিষ্ট কারণে অপরিহার্য। প্রথমতঃ FCTC ছাড়া এসডিজি’র তৃতীয় উদ্দেশ্য ‘সুস্থ জীবনযাপন এবং সব বয়সের মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা’ সম্ভব নয়। দ্বিতীয়তঃ অন্যান্য এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তামাক একটি বড় বাধা। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণের ওপর আমরা জোড় দিয়েছি।

তিনি বলেন, বত©মান সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে বদ্ধপরিকর। এরই অংশ হিসাবেই  ২০১৩ সালে ধুমপান এবং তামাক জাতীয় পণ্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ)আইনের সংশোধনী পাস করা হয়েছে এবং ২০১৫ সালে সংশ্লিষ্ট বিধিমালা পাস করা হয়েছে। ২০১৫ সালের ওই বিধি অনুসরণ করে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে তামাকজাত পণ্যের মোড়কে ছবিসম্বলিত সতর্কবার্তা সংযোজন করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষা এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মকান্ডকে উৎসাহ দিতে ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে তামাকের উপর ১ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ‘জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি’ এবং ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচাজ© ব্যবস্থাপনা নীতি’ নামক দুটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা প্রণয়ন করছে।

আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪০ সাল নাগাদ তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আমরা সম্ভব্য সবকিছু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর এক্ষেত্রে আমার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

শুধু আইন ও নীতিমালা করে তামাক নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। তাই তামাক ও ধূমপানের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও এর অবৈধ বাণিজ্য বন্ধে  সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন, জনহিতৈষী সংস্থা  ও দেশের নাগরিক সংগঠনকে আরও কার্যকর ভূমিকা  নিতে হবে এবং এ বিষয়ে সামাজিক আন্দোলন আরও বেগবান করতে হবে।

সিনিয়র সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের, আত্মার কনভেনার মর্তুজা হায়দার লিটনসহ অন্যরা বক্তৃতা করেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

7 + 7 =