লক্ষ্মীপুরে স্বামীর সন্ধানে এসে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর গণধর্ষণের শিকার

0
584

এস এম আওলাদ হোসেন

লক্ষ্মীপুরে স্বামীর সন্ধানে এসে ৬মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা গার্মেন্টস কর্মী গনধর্ষণের শিকার হয়েছে। পরে কৌশলে দৌঁড়ে পালিয়ে এসে তিনি পাশের এক বাড়িতে আশ্রয় নেয়। বুধবার  (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ওই নারী সদর মডেল থানায় এসে পুলিশকে ঘটনাটি জানায়।

লক্ষ্মীপুর পৌর ১নং ওয়ার্ডে সাহাপুর এলাকার মাওলানা রুহুল আমিন পাটওয়ারীর ‘মনোয়ারা ম্যানশন’ নামক বাড়িতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সোমবার (১২ মার্চ) রাতের এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকা ও বিভিন্ন মহলে তোলপাড় শুরু হয়।

 

জানা গেছে, বরিশাল জেলার ৭নং চর দনিয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের দাহু হাওলাদার বাড়ির দুলাল খাঁ র মেয়ে রিজেন্স গার্মেন্টস কর্মী সাথী আক্তার (২৬) সঙ্গে জহিরুল ইসলামের তিন বছর আগে মোবাইল ফোনে ক্রস কালেকশনের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পিকআপভ্যান চালক জহিরুল লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সমসেরাবাদের আইয়ুব আলী পুলের বাসিন্দা বলে তার কাছে পরিচয় দেয়। কিছুদিন পর তারা বিবাহ করে চট্রগ্রামে ভাড়া বাসা নিয়ে বসবাস শুরু করে। সম্প্রতি স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হলে জহিরুল তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। সর্বশেষ গত রবিবার রাতে স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হলে তাকে লক্ষ্মীপুরে আসতে বলেন। চট্রগ্রাম থেকে ভোরে রওয়ানা দিয়ে তিনি দুপুরে ২টায় লক্ষ্মীপুরের উত্তর তেমুহনী বাস স্টান্ড আসেন। এসময় স্বামীর মোবাইল ফোন সেট বন্ধ পেয়ে তিনি অপেক্ষা করছিলেন। এক পর্যায়ে এক যুবক তার গতিবিধি দেখে সহযোগীতার আশ্বাস দিয়ে সাহাপুর এলাকায় বোনের বাসায় নিয়ে যায়। রাত ৮.৩০টা দিকে অপরিচিত তিন যুবক ওই বাসায় এসে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে।পরে রাত ১০ টায় ফেরদৌস মানিক কোটের মুরি বেলাল নামে দুই জনে একই বাসায় অপরিচিত এক মহিলার সহযোগিতায় ভিকটিমকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে । এসময় তার শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম করা হয়। এক পর্যায়ে কৌশলে রাত ১২ টার দিকে বাসা থেকে দৌঁড়ে পালিয়ে পাশের এক বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে তিনি নির্যাতনের ঘটনাটি বর্ণনা করেন।

বুধবার বিকেল চারটার দিকে মনোয়ারা ম্যানশনে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনের নিচতলার যে কক্ষের ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে- ওই দরজায় তালা ঝুলছে। তবে স্থানীয় কয়েকজন মহিলা ওই রাতে বাসাটিতে কয়েকজন পুরুষের আনাগোনা ও চিৎকারের বিষয়টি টের পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

ক্ষতিগ্রস্থ ওই নারী বলেন, আমার সব সর্বনাশ হয়ে গেছে। হাত-পা ধরে কাকুতি-মিনতি জানিয়েও তাদের অত্যাচার থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারিনি। তারা শুধু আমাকে নির্যাতনই করেনি সঙ্গে থাকা ৫ হাজার দুইশত টাকা লুটে নেয় এবং মোবাইল ফোন সেট ভেঙ্গে ফেরত দিয়েছে। এখন আমি কার কাছে যাবো ?

বাড়ির মালিক রুহল আমিন পাটওয়ারী বলেন, বাসাটি আইনজীবি সহকারী ফৌরদৌস মানিক কয়েক মাস আগে ভাড়া নিয়েছে। তার বাড়ি সদরের পার্বতীনগরের মাছিমপুর গ্রামে। সেখানে একটি অনাকাঙ্গিত ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন বলেন, গার্মেন্টস কর্মীর অভিযোগটি পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

eleven + fifteen =