হাতে দইয়ের বাটি আর পানির বোতল কিনে হেঁটে যাচ্ছেন তারা। দেখে মনে হতে পারে নিজেদের বাসা বা আত্মীয়ের বাড়িতে পরম আনন্দে দই নিয়ে যাচ্ছেন! কিন্তু ‘বেরসিক’ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের আনন্দযাত্রা নিরানন্দে পরিণত করে দিলেন। তাদের পাকড়াও করে দইয়ের ছয়টি প্লাস্টিকের বাটিতে পাওয়া গেল ৩০ হাজার ইয়াবা বড়ি। এ ঘটনা রাজধানীর শাহবাগ এলাকার।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাতে সেখান থেকে অভিনব উপায়ে এই ইয়াবা পাচার চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। তারা হলেন- আরশাদ উল্লাহ, রফিক ও হোসেন বেপারী। শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার তিনজনকে রোববার দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতেই ইয়াবা পাচারে নিত্যনতুন উপায় উদ্ভাবন করছে চক্রটি। এভাবে কৌশলে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবার বড় চালান পাচার করে আসছিল তারা। তবে দইয়ের বাটিতে ইয়াবা আনা-নেওয়ার ঘটনাটি একেবারেই অভিনব। সিটিটিসির এডিসি আসাদুজ্জামান সমকালকে বলেন, তাদের কাছে তথ্য ছিল একটি চক্র কক্সবাজার থেকে একটি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এক লাখ ইয়াবা বড়ি ঢাকায় এনেছে। এমন সংবাদের পর পুলিশের একটি দল মূল ইয়াবা ব্যবসায়ীকে ধরতে অভিযানে নামে। শাহবাগের আজিজ কো-অপারেটিভ সুপার মার্কেটের ৩ নম্বর গেটের সামনে যায় তাদের দল। এ সময় তিনজনকে দইয়ের বাটিসহ আটক করার পর তা খুলে ৩০ হাজার ইয়াবা বড়ি পাওয়া যায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত তিনজন পুরান ঢাকা, কামরাঙ্গীরচর এলাকায় অনেকদিন ধরে ইয়াবা বিক্রি করে আসছে। তারা যে ব্যক্তির কাছ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করেছে তাকে গ্রেফতারে এরই মধ্যে একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তদন্ত-সংশ্নিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, এর আগেও একাধিক দফায় কক্সবাজার থেকে এ চক্রের সদস্যরা ইয়াবা এনে ঢাকায় খুচরা ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিত। কক্সবাজার থেকে রাজধানী পর্যন্ত ইয়াবা আনতে কয়েক জায়গায় হাতবদল হয়। এই চক্রের অন্যদের চিহ্নিত করে শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান সংশ্নিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা। এ ছাড়া ইয়াবা পরিবহনে যারা এই চক্রকে সহায়তা করেছেন তাদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।