ব্রাসেলসে ব্যবসায়ীদের কর্মশালায় বাণিজ্যমন্ত্রী তৈরী পোশাকের মতো উন্নতবিশে^ ফুটয়্যার রপ্তানিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত

0
470

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, চামড়া বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রপ্তানি পণ্য। বিশ^বাজারে বাংলাদেশের তৈরী ফুটওয়্যারের বিপুল চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশো তৈরী চামড়াজাত পন্যের বেশ সুনাম রয়েছে। প্রতি বছর বিপুল পরিমান উন্নত মানের চামড়া উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। বাংলাদেশ বিপুল পরিমান চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য বিশে^র অনেক উন্নত দেশে সুনামের সাথে রপ্তানি করে আসছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ফুটওয়্যারের উন্নত মানের কাঁচামাল বাংলাদেশের নিজস্ব উৎপাদিত, আমদানি করতে হয় না। বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক দক্ষ জনশক্তি রয়েছে। ফলে বাংলাদেশ তৈরী পোশাকের মতো কম মূল্যে উন্নত মানের ফুটওয়্যার তৈরী ও রপ্তানি করতে সক্ষম।

 

ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বিশ^মানের ফুটওয়্যার তৈরী রপ্তানি শুরু করেছে। বাংলাদেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের চাহিদা পূরণ করে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছে। সংগত কারনেই বাংলাদেশে একের পর এক আধুনীক ও বিশ^মানের ফুটওয়্যার কারখানা গড়ে উঠছে। এ সেক্টরে বিদেশী বিনিয়োগও আসছে। ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে তৈরী পোশাকের মতো ফুটওয়্যার আমদানি করলে লাভবান হবেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী আজ (২৬ জুন) ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা(ওইসিডি)-এর উদ্যোগে আয়োজিত বাংলাদেশের তৈরী পোশাক ও ফুটওয়্যারের উপর একটি বিশেষ ওয়ার্ক শপে বক্তব্য প্রদানের সময় এসব কথা বলেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়ন শীল দেশে পরিনত হতে যাচ্ছে। ২০২৭ সাল থেকে চুড়ান্ত ভাবে উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতির গতির চাঁকা অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশ রপ্তানি পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নতুন নতুন রপ্তানি বাজার সৃষ্টির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আশা করছে উন্নত বিশ^ বাংলাদেশের পাশে থাকবে এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বরেন, বাংলাদেশের তৈরী পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় সবকিছু করছে। শ্রম আইন সংশোধন করে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কারখানাগুলো সংস্কার করা হয়েছে, ফায়ার ও ইলেক্ট্রিকাল সেফটি নিশ্চিত করা হয়েছে। এখন শ্রমিকরা নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশে বাংলাদেশের শ্রমিকরা কাজ করছে। বাংলাদেশে একের পর এক গ্রীণ ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে। বাংলাদেশের তৈরী পোশাক কারখানাগুলো এখন সম্পূর্ণ কমপ্লায়েন্স। তৈরী পোশাক কারখানা গুলো অত্যাধুনিক করে গড়ে তুলতে শিল্প মালিকদের নতুন করে বিপুর অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়েছে। ক্রেতাগোষ্টির উচিৎ পণ্যের মূল্যের দিকে দৃষ্টি দেয়া। যাতে কারখানার মালিকগণ তৈরী পোশাকের উপযুক্ত মূল্য পান। ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন, কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং আইএলও এর সাথে সাসটেইনিবিলিটি কম্প্যাক্ট করেছে। তিনটি পিলারের উপর এটি প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশ শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করেছে, বিল্ডিং-ফায়ার সেফটি নিশ্চিত করার পাশাপপাশি শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে কিন্তু তৃতীয় পিলার তৈরী পোশাকের ন্যায্য মূল্যের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না। এখন বাংলাদেশের তৈরী পোশাকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সুপারিশ গ্রহণ এবং কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক চুন্নু এ ওয়ার্ক শপে বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য বাণিজ্যসচিব শুভাশীষ বসু, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আফরোজা খান, এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শফিউল ইসলাম, বিজিএমই-এর প্রেসিডেন্ট মো. সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের নির্বাহী পরিচালক মেজর জেনারেল মো. হাবিবুর রহমান খান এবং ব্রাসেলসে নিযুক্ত বাংরাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সাহাদাত হোসেন ওয়ার্কশপে উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

20 + eighteen =