হত্যা মামলার বাদীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা

0
539

অবি ডেস্কঃ খুলনা নগরীর দৌলতপুরে কালা হত্যা মামলার বাদী নাজমা বেগমকে (৫৩) আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে সন্ত্রাসীরা ঘর থেকে ডেকে নাজমা বেগমের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৮টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।

 

নিহত নাজমা বেগমের পরিবার জানায়, গত ২০১৬ সালে ৬ মে দৌলতপুর থানার মধ্যেডাঙ্গা নগর গ্রামে নূর ইসলাম ভূঁইয়ার ছেলে রুবেল ভূঁইয়া ওরফে কালাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে মরদেহ একটি ধানক্ষেতে ফেলে রাখা হয়। ওই দিন কালার মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে রাসেল ওরফে পেচি রাসেল, ইমরান, রাসেল ওরফে মোটা রাসেল, তুহিনসহ আরও আজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনের নামে দৌলতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। অসামিরা জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে নাজমা বেগমকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি ও মারধর করে। নাজমা বেগম মধ্যেডঙ্গা নগরের খলিল, জলিলসহ হত্যা মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে কয়েকটি জিডি করেছেন বলে তার অপর ছেলে সাগর ভূঁইয়া জানান।

গত শনিবার রাত আড়াইটার দিকে কয়েকজন সন্ত্রাসী নাজমা বেগমের বাসায় গিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। দরজা ভাঙার শব্দ শুনে তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা তার চোখ মুখ চেপে ধরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় নাজমুল হোসেন নামে এক সন্ত্রসীকে নাজমা বেগম চিনতে পারেন। কেরোসিন ঢেলে আগুন না লাগানোর জন্য নাজমা বেগম নাজমুলের পায়ে ধরে জীবন ভিক্ষা চান। কিন্তু নাজমুলসহ সঙ্গে থাকা সন্ত্রাসীরা নাজমা বেগমের আকুতি শোনেনি। শেষ পর্যন্ত তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে লাইটার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

পরে নাজমা বেগমকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলে বৃহস্পতিবার নাজমা বেগম মারা যান। এ ঘটনায় নাজমা বেগমের ছেলে সাগর ভূঁইয়া একই এলাকার সামসুল হকের ছেলে নাজমুল হোসেন ওরফে বড় নাজমুলসহ আজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনের নামে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন। পুলিশ নাজমুলকে গ্রেফতার করেছে। তাকে তিনদিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে দৌলতপুর থানা পুলিশের ওসি কাজী মোস্তাক আহমেদ জানিয়েছেন।

মামলার বাদী সাগর ভূঁইয়া জানান, তার ভাই কালার হত্যাকারীরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য মামলার বাদী তার মা নাজমা বেগমকে পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলেছে।

দৌলতপুর থানা পুলিশের ওসি কাজী মোস্তাক আহমেদ জানান, অগ্নিদগ্ধর ঘটনাটি রহস্যজনক। আসামিকে রিামান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 − one =