রাজধানীর টিকাটুলির এক মার্কেট থেকেই অন্তত ৮ কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছেন কাউন্সিলর মইনুল হক মঞ্জু। চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এ তথ্য দিয়েছেন।তিনি জানিয়েছেন, শুধু রাজধানী সুপার মার্কেট থেকেই গত ৯ বছরে অন্তত আট কোটি টাকা চাঁদা তুলেছেন।
চাঁদা না দিলে তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে দোকানিকে তার কার্যালয়ে তুলে নিয়ে যেতেন। সেখানে নির্যাতন করে চাঁদা দিতে বাধ্য করা হতো। রাজধানী সুপার মার্কেটে মোট ১৭৮৮ টি দোকান আছে। প্রত্যেক দোকানে তার লোকজন মাসিক ৯৫০ টাকা চাঁদা তুলতো। এই টাকার একটা অংশ কমিশনারকে নজরানা দেয়া হতো বলে তিনি রিমান্ডে শিকার করেছেন।
এছাড়াও টিকাটুলি ভোলানন্দ্রগিরি আশ্রমের যে তিনবিঘা জমি ও পুকুর দখল করেছেন সেই দখলে ঢাকা মহনগর দক্ষিন আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার মদত ছিল বলে তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। ওই নেতার বাড়ি বরিশাল অঞ্চলে।
মঞ্জু গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার সব ক্যাডার বাহিনী লাপাত্তা হয়ে গেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের খুঁজছে। এছাড়াও রিমান্ডে মঞ্জু তার কাছে থাকা আরও ১ টি একে-২২ এবং ২ টি রিভলবার থাকার কথা স্বীকার করেছেন। সেগুলো তার ক্যাডার বাহিনীর কাছে রয়েছে। ওই অস্ত্রগুলো উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
র্যাব-৩ এর এক ঊর্ধতন কর্মকর্তা জানান, মঞ্জু ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি ওই এলাকার মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হন। রাজধানী সুপার মার্কেট ছিল তার চাঁদার বড় ক্ষেত্র।
সূত্র জানায়, মঞ্জু রাজধানী মার্কেটের অঘোষিত সভাপতি দাবি করতেন। কিছুদিন আগে এসি লাগানোর কথা বলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকা নিয়েছেন। কিন্তু, কোনো কাজই করেননি।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ অক্টোবর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ময়নুল হক মঞ্জুকে গ্রেফতারের পর রাজধানী সুপার মার্কেট ও নিউ রাজধানী সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন। এসময় ব্যবসায়িদের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব) কর্মকর্তা ও সংবাদকর্মীদের মাঝেও মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা যায়।
রাজধানীর টিকাটুলিতে কাউন্সিলর ময়নুলের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও মাদকসহ তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৩ সদস্যরা। গ্রেফতারের পর মঞ্জু ১০ দিনের রিমান্ডে আছেন।