উপজেলার ৬টি নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু লুটপাটে ভেঙ্গে যাচ্ছে বাড়ীঘর ভুক্তভোগিদের অভিযোগ আমলে নিচ্ছেনা প্রশাসন

0
443

রৌমারী কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রাম জেলা, রৌমারী উপজেলায় ৬টি নদীতে অবৈধভাবে বালু লুটপাট করছে একটি সন্ত্রাসী চক্র। প্রকাশ্যে নদীর বালু লুটপাট করলেও স্থানীয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। স্থানীয় লোকজন জানান, উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের জিনজিরাম নদী ঘেষা এলাকায় ইজারা ছাড়াই ৫০ থেকে ৬০টি ড্রেজার দিয়ে নিয়মিত দিনরাত বালু উত্তোলন করে, বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রয় করছে একটি সন্ত্রাসী চক্র। এতে করে হারিয়ে যাচ্ছে নদীর তীর ঘেষা এলাকার গাছপালাসহ বাড়ীঘর। উপজেলার, খাটিয়ামারী, ইজলামরী ,বাওয়াই গ্রাম,বকবান্দা, লালকুড়া, খেওয়ারচর,বিকরিবিল,লাঠিয়াল ডাঙ্গা, গ্রামের মানুষ বালু সন্ত্রাসীদের বাধা দিতে গেলে নানা ধরনের হুমকি প্রদর্শন করে। বালু সন্ত্রাসীরা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে সমঝোতা করে প্রকাশ্যে বালু লুট করেই যাচ্ছে।

জিনজিরাম নদীর তীর ঘেষা এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, ৫০ থেকে ৬০টি বড় ড্রেজার বসিয়ে নদী থেকে বালু তুলে প্রকাশেই বিক্রি করছে ।

স্থানীয় লোকজন যাতে বাধা দিতে না পারে, সে জন্য নদীতে লাঠি নিয়ে দলবেধে পাহারা দিয়ে থাকে । গ্রামবাসীরা জানান, সরকারের কাছ থেকে কোনো রকম অনুমতি বা ইজারা না নিয়ে বালু তুলে বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করা হচ্ছে।

যাদুরচর এলাকার বাসিন্দারা জানান, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ইসমাইল হোসেন সহযোগী ২০-২৫ জনের একটি চক্র স্থানীয় সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে বালু লুটপাট করছে।

নদীর তীর থেকে অবৈধভাবে বালু কেটে নেওয়ার কারণে একটি ইউনিয়নের, প্রায়ই ১৫টি গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়িঘর ও ফসলি জমি ভেঙে যাচ্ছে। যেকোনো সময় ভিটেবাড়ি ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে ।

গ্রামের বাসিন্দা উমুর আলী. ছমের জান,আজাহার,মকবুল সাবেক মেম্বার বলেন, ‘আমাদের সুখ-দুঃখে পাশে থাকার জন্য ভোট দিয়ে যে জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচিত করেছি, তাঁরাই অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আমাদের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন করে দিচ্ছেন।

নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে আমরা একাধিকবার ইউএনওকে স্মারকলিপি দিয়েছি। বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছি। আন্দোলন করার পর প্রশাসন অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ।’ প্রশাসনের সহযোগিতায় বালু লুটপাট করা হচ্ছে বলে সাধারন মানুষের অভিযোগ।

গ্রামবাসীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান অবৈধভাবে নদীর বালি তোলা হচ্ছে এটা সত্য আমি বাধা করা সত্যেও বন্দ হয়নি, এই জন্য আইনি ব্যবস্তা নেয়া জরুরী দরকার।

ইউপি সদস্য ইসমাইল হোসেন এর নেতৃতে কয়েকটি ড্রেজার চলছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে মেম্বার ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমাদের এলাকার কয়েকজন অবৈধ বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত এ কথা সত্য। তাঁরা সবাই আমার নাম ব্যবহার করছে। আমি সরাসরি এ কাজে জড়িত নই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল ইমরান বলেন, ‘আমি এ উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। যোগদানের পর জানতে পারলাম যে এই এলাকায় অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বিভিন্নভাবে বিক্রয় করা হচ্ছে। তারপরেও ইউপি চেয়ারম্যানদের জানানো হয়েছে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে, বন্দ না হলে তাঁর বিরুদ্ধে অবশ্যই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

three × 5 =