বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভারতে পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার পুলিশ

0
448

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভারতে পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার পুলিশ সদস্য দেব প্রসাদ সাহার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। দেব প্রসাদ সাহা খুলনার তেরখাদা উপজেলা শহরের সুরেন্দ্রনাথ সাহার ছেলে। বেনাপোল বন্দর থানার ওসি মামুন খান জানান, ১৭ ডিসেম্বর দেবপ্রসাদ সাহাকে যশোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। বিচারক ১৯ ডিসেম্বর রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচারের মামলায় দেব প্রসাদ সাহাকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হয়। রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা তাকে রিমান্ডে নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করবো। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স সরাসরি মামলাটি তদারকি করছে।

আদালত সূত্র জানায়, গ্রেফতার আসামি দেব প্রসাদ সাহা ঢাকার উত্তরা ১ নম্বর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল। সেই সুবাদে ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ১৭ আগস্ট পর্যন্ত বেনাপোল ইমিগ্রেশনে কর্মরত ছিলেন। তার বিপি নম্বর ৭৫৯৮০৫১১৯৮ ও কনস্টেবল নম্বর ৭০৩। সেখানে কর্মরত থাকাবস্থায় ভারতের অনেকের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। যে কারণে তিনি যখন-তখন নোম্যান্সল্যান্ড অতিক্রম করে ভারতে যাওয়া-আসা করতেন।

ইমিগ্রেশনে দায়িত্ব পালনকালে সেনাবাহিনীর অফিস সহকারী আবু হানজালা রানা ও সৈনিক শাহনেওয়াজ শাহিনের সঙ্গে তার পরিচয় ও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা দুজন বেনাপোলে মাঝেমধ্যে এসে ভারতের এস চক্রবর্তী ও পিন্টু নামে দুজনের কাছে বাংলাদেশের গোপনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার করতেন। ২০১৮ সালের শেষের দিকে দেব প্রসাদ সাহা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসংবলিত একটি পেনড্রাইভ নোম্যান্সল্যান্ড পার হয়ে ভারতে পাচার করেন। ১৫ দিন পর আবু হানজালা রানার কাছ থেকে এনে আবারও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসংবলিত পেনড্রাইভ ভারতের এস চক্রবর্তী ও পিন্টুর কাছে হস্তান্তর করে দেব প্রসাদ সাহা।

গত ২৫ অক্টোবর ঢাকার কমলাপুরের একটি হোটেল থেকে ডিজিএফআই ও র‌্যাবের হাতে সৈনিক শাহনেওয়াজ শাহিন আটক হন। এ সময় তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি পেনড্রাইভ উদ্ধার হয় এবং তিনি ভারতের কাছে তথ্য পাচারের বেশকিছু তথ্য দেন।

বিষয়টি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে অনুসন্ধানে নামে। তদন্তে তাদের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও ভারতের পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আরেফের সঙ্গে কথোপকথনের ভিডিও সিডির মাধ্যমে ভারতে বাংলাদেশের তথ্য পাচারের বিষয়টি উঠে আসে।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে প্রথমবারের মতো সম্মিলিত র‌্যাগ ডে করবে ১৩-১৪ ব্যাচ

বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান জানান, সেনাসদস্য শাহনেওয়াজ ও অফিস সহকারী আবু হানজালার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে ভারতে পাচারের বিষয়টিও দেব প্রসাদ স্বীকার করেছে মর্মে তারা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে প্রতীয়মান হয়েছে। সে কারণে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্য দেব প্রসাদ সাহাকে আটকের পর মামলা দিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

9 − 8 =