সাভার থানার ওসিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

0
709

মানবাধিকার খবর নামক মাসিক পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মানবাধিকার কর্মী মো. রিয়াজ উদ্দিনের অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করে, কিন্তু মামলা না নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে ওঠে সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এফএম শাহেদ হোসেন বিরুদ্ধে। (ওসি) এফএম শাহেদ হোসেনসহ আটজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা পুনঃতদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত ২০ অক্টোবর ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম কামরুন্নাহার পিবিআইকে পুনঃতদন্তের আদেশ দিয়েছেন। আজ রোববার এ মামলার বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আজাদ রহমান জানিয়েছেন। এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রিয়াজ উদ্দিন নিজেই বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

ওইদিন একই আদালত মামলাটি ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। যার তদন্ত শেষে গত ২৬ জুলাই ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাসিম মিয়া আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে বাদীকেই তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্টো দোষারোপ করে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি মর্মে উল্লেখ করেন। ফলে বাদী প্রতিবেদনের ওপর নারাজি দাখিল করলে গত ২৪ সেপ্টেম্বর শুনানি হয়।

এরপর বাদীর নারাজির যৌক্তিকতা থাকায় গত ২০ অক্টোবর আদালত পিবিআইকে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন-সাভার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাকারিয়া, উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলি এবং সাভার থানাধীন ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. এনামুল হক, অপহরণকারী বৃষ্টি তার স্বামী শুধাংশ রায় নয়ন কুমার ও রণিসহ অজ্ঞাতনামা আর ৫/৬ জন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদীর সঙ্গে গত বছর ডিসেম্বর আসামি বৃষ্টির ফেসবুকে পরিচয়। সেখানে সে বাদীকে একটি ছেলেসহ বিভিন্ন অসহায়ত্বের কথা বলেন।

বাদী মানবাধিকার কর্মী হওয়ায় তার কাছে সহায়তা চান এবং সরোজমিনে অসহায়ত্বে দেখে প্রতিবেদন প্রকাশের অনুরোধ করেন। বাদী সরল বিশ্বাসে আসামির বৃষ্টির কথায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি সাভার বাসস্ট্যান্ড হয়ে হেমায়েতপুরস্থ বালুর মাঠের সোহরাব হোসেনের বৃষ্টির ভাড়া বাড়ির সামনে দুপুর ১টার দিকে যান। সেখানে ৩/৪টি ছিলে তাকে বৃষ্টির ভাড়া বাড়িতে নিয়ে যায় এবং বাড়িতে ঢোকার পর দরজা বন্ধ করে বেঁধে মারধর শুরু করে। তার কাছে থাকা নগদ ১১ হাজার ৫০০ টাকা, মোবাইল, ক্যামেরা, এটিএম কার্ড নিয়ে যায়। এরপর নির্যাতন করে এটিএম কার্ড ও বিকাশের পিন নম্বর নিয়ে আরও ৬ হাজার টাকা তুলে নেয়।

এরপর বাদীর মোবাইল নম্বর থেকে তার স্ত্রীসহ বিভিন্ন জনকে ফোন করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায়। কিন্তু পরবর্তীতে কোনো মুক্তিপণ না পেয়ে বাদী ও তার স্ত্রী অনুনয় বিনয়ের পর বেলা ৪টার দিকে বাদীকে সাভার নিয়ে ছেড়ে দেয়। এরপর বাদী সাভার থানায় যান এবং পুলিশ আসামিদের কাছে অপহরণের বিষয়ে অভিযোগ করেন। এরপর আসামি এনামুল হক ওইদিন সন্ধ্যার দিকে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে আসামি বৃষ্টি, নয়ন কুমার, রণি ও অজ্ঞাত এক নারীকে গ্রেপ্তার করেন এবং বাদীর সব কিছু উদ্ধার করে তাদেরওক থানায় নিয়ে আসেন।

থানার আসার পর তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতির এক পর্যায়ে পুলিশ আসামিরা বাদীকে আটককৃতদের সঙ্গে সমঝোতা করতে বলেন। না করলে উল্টো ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির মামলায় বাদীকে আদালতে চালান দেওয়া হবে বলে ভয় দেখান। বাদীর মোবাইল নিয়ে থানার লকাপে ভরার আদেশ দেন। পরে জোর করে বাদীর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বাদীকে থানা ছাড়তে বাধ্য করেন। পরে বাদী জানতে পারেন যে, আটককৃরা সংঘবন্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তাদের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ পাওয়ার চুক্তি করে বাদীকে উল্টো মামলার ভয় দেখায়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

fourteen + 8 =