পীর ফকিরের পানি পড়া ও সায়দাবাদীর ডিম পড়া, হীন চরিত্রের রহস্য:

0
464

মো: মাছুম চৌধুরী (গণ বিশ্ববিদ্যালয়) সেদিন হঠাৎ করে সায়মা আমাকে ফোন করলো। ফোনে সায়মার কন্ঠ শুনে সায়মাকে বিষন্ন মনে হলো। সায়মা আমার কলেজ জীবনের বান্ধবী। কলেজ পাশ করে সায়মার বিয়ে হয়ে গেল আর আমি মেডিকেল সাইন্সে পড়াশুনা করছি। সায়মার বিয়ে হয়েছে প্রায় চার বছর। তাই অনেক দিন পর সায়মার ফোন পেয়ে ভালো লাগলো। সায়মা আমাকে তার ধানমন্ডির ৬ নম্বর বাসায় আমন্ত্রন জানালো। কারন জানতে চাইলে সায়মা জানালো খুব খুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা ফোনে এ মুহুর্তে বলা যাচ্ছে না।

যাই হোক প্রিয় বান্ধবীর নিমন্ত্রন পেয়ে সায়মার বাসায় গেলাম। প্রথমেই সায়মাকে দেখেই বুঝতে পারলাম সায়মা কোন মানসিক সমস্যায় ভুগছে। সায়মার হ্যাজবেন্ড প্রকৌশলী, একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কর্মরত। বাসায় আজ সায়মা সমপূর্ণ একা। যাই হোক চা খেতে খেতে সায়মার সাথে তার সমস্যা নিয়ে আলাপ করলাম। সায়মা আমাকে জানালো দাম্পত্য জীবনে সায়মা ভীষণ অসুখী। কারন সায়মা নাকি সন্তান দানে অসক্ষম। পুরো ব্যাপারটি আমি সাথে আলাপ করলাম। সায়মা ভীষণভাবে আমার সাহায্য চাইলো। যাই, হোক সায়মাকে সান্ত্রনা দিয়ে আমি তাকে জানালাম বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তির উপায়। প্রিয় পাঠক, সায়মার মতো যারা সন্তান না হওয়া নিয়ে দাম্পত্য জীবনে কলহ সৃষ্টি করছেন তাদেরকে নিয়ে আমাদের এই প্রতিবেদন।

টিউব বেবি নেওয়ার উপযোগী হতে পারেন। তবে টেষ্ট টিউব বেবি নেওয়ার আগে এ সম্পর্কে আপনাকে ভালভাবে জেনে নিতে হবে। আপনি কি সত্যিই স্বাভাবিক সন্তান জন্মদানে অক্ষম?

টেষ্ট টিউব বেবি নেওয়ার কারণ:

প্রাথমিক পর্যায়ে তিনটি কারণে আমাদের দেশর অসংখ্য প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ মহিলার সন্তান হয় না। ১) পুরুষের দোষ ২) মহিলার দোষ। ৩) কারও দোষ বা সমস্যা নেই টিউব বেবি নেওয়ার উপযোগী হতে পারেন। তবে টেস্ট টিউব বেবি নেওয়ার আগে এ সম্পর্কে আপনাকে ভালোভাবে বুঝে জেনে নিতে হবে। আপনি কি স্বাভাবিক সন্তান জম্নদানে অক্ষম।

অথচ সন্তান হচ্ছে না। সন্তান জম্নদানে আমাদের দেশের ৪০ শতাংশ পুরুষ সমস্যায় ভোগেন। আবার ৪০ শতাংশ মহিলা শারিরীক সমস্যার কারণে সন্তান জম্নদানে অক্ষম। অন্যদিকে ২০ শতাংশ নারী পুরুষের শারিরীক কোন সমস্যা নেই অথচ তাদের কোন সন্তান হচ্ছে না। চিকিৎসা বিজ্ঞান এই ২০ শতাংশ নারী পুরুষের সন্তান না হওয়ার ব্যাখ্যা আজ উম্মোচন করতে পারেননি। তবে সন্তান জম্নদানে ছেলে অথবা মেয়ে শারিরীক কোন রোগে ভুগে থাকলে চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের সমস্যার সমাধান করা যায়। পরিপূর্ণ চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক নারী পুরুষই স্বাভাবিকভাবে সন্তান জম্ন দিতে পারে। তবে যেসব ক্ষেত্রে দেখা যায় সন্তান জম্নদানে পুরুষ অথবা নারী সামগ্রীকভাবে অক্ষম তখন তাদের শারীরিক সমস্যার কারণে  টেস্ট টিউব বেবি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

সন্তান জম্নদানে ছেলেদের শারীরিক ক্রটি:

সন্তান হওয়ার জন্য যতটা শুক্রানু থাকা দরকার অনেক বিবাহিত পুরুষের ততটা শুক্রানু থাকে না। আবার থাকলেও অত্যন্ত দুর্বল প্রকৃতির শুক্রানু থাকে যা লড়াই করে ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলতে পারে না। যৌন মিলনে অক্ষম পুরুষদের অনেক সময় সন্তান জম্ন দানে কোন ভূমিকা রাখতে পারে না। চিকিৎসকের পরিচর্যার কিংবা পর্যবেক্ষণে থেকে চিকিৎসা করালে পুরুষদের শারীরিক ক্রটি দূর করা যায়।

সন্তান জম্নদানে মেয়েদের শারীরিক ক্রটি:

অনেক মেয়ের ফ্যালোপিয়ান টিউবের মুখ ব্লক থাকে। অনেক সময় দেখা গেছে শরীরে যৌনাঙ্গ আছে অথচ ভেতরে জরায়ুই নেই। এছাড়া অনেক মেয়েদের অনিয়মিত স্রাব হয়ে থাকে। সময়মত ডিম্বাণু পরিণত হয় না। তাছাড়া বিবাহিত মেয়েদের বয়সও একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। প্রিয় পাঠক, মেয়েদের শরীরে অদ্ভুত রহস্য আজও আবিষ্কৃত হয়নি। দেখা গেছে ১৮/১৯/২৪ বছরে বিয়ে করেও অনেক মেয়েই মা হতে পারছে। সম্পূর্ণ নির্ভর করে মেয়েদের শরীরের গঠনের উপর। সাধারনত ২০ থেকে ৩৫ বৎসর পর্যন্ত মেয়েরা প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই মা হতে পারে। বয়স ৩৫ এরপর থেকে ৪৫ পর্যন্ত এই ক্ষমতা কমে আসে। ১৩/১৪ বছরেও মেয়েরা মা হতে পারে তবে সে সব সন্তান দুর্বল হয়। অপুষ্টিতে ভোগে। এসব ক্ষেত্রে মা ও শিশু উভয়েরই মৃত্যুও সম্ভাবনা থেকে যায়। আবার বেশি বয়সে অর্থাৎ ৪০ এর পরে সন্তান হলেও সন্তান দুর্বল এবং বিকলাঙ্গ হবার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা থেকে যায়।

টেস্ট টিউব বেবি যাদের প্রয়োজনীয়:

সন্তান জম্নদান স্বাভাবিক নিয়মে অক্ষম বাবা মাকে সন্তান নিতে হলে টেস্ট টিউব বেবির কথা ভাবতে হবে। যখন বিবাহিত স্বামী কিংবা স্ত্রীর মধ্যে এমন ক্রটি দেখা যায় যা চিকিৎসা করে ভাল ফল পাওয়া সম্ভব পর নয় তাদের জন্য টেস্ট টিউব বেবি নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। এছাড়া দেখা যায় অজ্ঞাত কারণে বিবাহিত স্বামী স্ত্রীর সন্তান হচ্ছে না। কিন্তু দম্পতির বয়স বেড়ে যাচ্ছে তখন টেস্ট টিউব নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে ছেলেদের ক্ষেত্রে স্পার্ম বা শুক্রাণু কম বা যৌন মিলনে অক্ষম তখন টেস্ট টিউব বেবি  ছাড়া উপায় নেই। মেয়েদের ক্ষেত্রে ফ্যালোপিয়ান টিউবে গন্ডগোল বা অন্য কোন কারণে টিউবে ইনফেকশান হয়ে টিউব বাদ হয়ে গেছে অথবা ৪০ কিংবা ৪৫ এর পরেও কেউ মা হতে চাইছেন কিন্তু শরীরে ডিম্বাণু তৈরী হচ্ছে না, তখন দান করা ডিম্বাণু দিয়ে অথবা কৃত্রিম উপায়ে শরীর থেকে পরিণত ডিম্বাণু সংগ্রহ করে টেস্ট টিউব বেবি নিতে হয়।

টেস্ট টিউব নিতে খরচ:

টেস্ট টিউব বেবি নেওয়া ধারণা আমাদের দেশে একেবারে নতুন কোন বিষয় হলেও উন্নত বিশ্বে এটি সাধারণ একটি ব্যাপার। তবে এ পদ্ধতিতে সন্তান নিতে হলে অবশ্যই খরচ নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে কারণ স্বাভাবিক নিয়মের চেয়ে এ নিয়মে সন্তান নেওয়া সত্যিই বিশাল খরচ। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের দম্পতিদের পক্ষে এ পদ্ধতিতে সন্তান নেওয়া বেশ কষ্টকর। আমাদের দেশে এ পদ্ধতিতে সন্তান নিতে খরচ পড়ে প্রায় ৮০ থেকে ১ লক্ষ টাকা। তবে কোন কোন দম্পতির ক্ষেত্রে এ খরচ আরও বেশি হতে পারে। কারণ, যাদের শরীরে ডিম্বাণ কম তাদের থেকে কৃত্রিম উপায়ে ডিম্বাণু তৈরি করতে শরীরে ইনফেকশন প্রয়োগ করতে হয়। তুলনামূলকভাবে কৃত্রিম উপায়ে ডিম্বাণু তৈরি করে গর্ভধারণ করাতে খরচ অনেক বেশি। তবে এই পদ্ধতিতে খরচের পরিমাণ বেশি হলেও সফলতার হার তত বেশি নয়।

টেস্ট টিউব বেবি নেওয়ার সফলতা:

এখন পর্যন্ত টেস্ট টিউব বেবি উৎপাদন করার সফলতা উল্লেখ জনক হারে বৃদ্ধি পায়নি। সাধারনত মোটা মহিলা কিংবা বয়স্ক মহিলাদের ক্ষেত্রে সাফল্যেও হার তুলনামূলকভাবে অনেক কম হয়ে থাকে। এছাড়াও শরীরে হরমোনের তারতম্য শুত্রানুর ক্ষমতা টেস্ট টিউব বেবি পাওয়ার সফলতা ও ব্যর্থতার একটি কারণ। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সবকিছু ঠিক থাকলেও সাফল্যের হার সমান থাকে না। তবে টেস্ট টিউব বেবি পাওয়ার জন্য ২০-৩৫ বছরের ৩৫-৪০ এর মধ্যে সফলতার হার কিছুটা কম ২০-২৫% এবং ৪০-৪৫ এর মধ্যে সফলতার হার ১০-২০% হয়ে থাকে।

ক্রায়ো পদ্ধতি:

টেস্ট টিউব বেবি বর্তমানে ক্রায়া একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি। ক্রায়োতে ভ্রণ রেখে বার বার সফলতার চেষ্টা করা যায়। অর্থাৎ বিবাহিত স্বামী স্ত্রী থেকে বেশি পরিমাণে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু পাওয়া গলে এগুলো নিষিদ্ধ করে ভ্রণ তৈরি করে ক্রায়োতে রেখে দেওয়া হয়। ক্রায়ো থেকে ভ্রণ নিয়ে টেস্ট টিউব বেবি উৎপাদনে চেষ্টা করা হয়। ক্রায়ো হলো অতি শীতল ব্যবস্থা। স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে মাইনাস ১৯৬ ডিগ্রী হিমায়িত অবস্থায় ভ্রণকে রেখে দেওয়া হয় বিশেষ ধরনের টিউবে।

ক্রায়ো থেকে ভ্রণ গর্ভে প্রতিস্থাপন:

সরাসরি ক্রায়ো থেকে তুলেই ভ্রণকে জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা যায় না। ধীরে ধীওে তাপমাত্রা কমিয়ে ভ্রণ ক্রায়োতে রাখা হয়। আবার ক্রায়ো থেকে ভ্রণকে তুলতে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়াতে হয়। শুক্রানু ও ডিম্বাণুর ভ্রণের জম্ন হলে ভ্রণকে প্রথমেই মাইনাস ১৯৬ ডিগ্রীতে এনে রাখা হয় না। এই অতি শীতল অবস্থায় আনা হয় মাইনাস ৭ মাইনাস ৯ এরকম ধাপে ধাপে নামিয়ে।

৩৭ এ আনা হয়। এরপর ভ্রুণ বিশেষভাবে তৈরি ভ্রুণ রাখার উপযুক্ত মেডিক্যাল ষ্ট্রেতে রেখে লিকুইড নাইট্রোজেন ডুবিয়ে রাখ হয় এবং ষ্ট্রেতে রাখা ভ্রুণ আর নানা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে মাইনাস ১৯০ ডিগ্রীতে রাখা হয়। অনেকদিন হয়ে গেলে মাঝে মাঝে লিকুইড নাইট্রোজেন পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। ক্রায়োতে রাখার পর যখন তা থেকে ভ্রুণ নিয়ে আবার প্রতিস্থাপন করা হয় তখন মাইনাস ১৯০ ডিগ্রী থেকে বের করে একটু একটু করে তাপমাত্রা বাড়িয়ে মাইনাস ৩৭এ আনা হয়। এরপর তা প্রথমে ইনকিউবেটরে রাখা হয়। জরায়ুর মধ্যে ভ্রুণ যে তাপমাত্রায় প্রথমে থাকে সেই তাপমাত্রা এলে তারপর তা জরায়ুর দেওয়ালে প্রতিস্থাপন করা হয় গর্ভধারনের জন্য। ৩৫ বছরের কম বয়সের মেয়েদের শরীর থেকে ৬/৭ বার ফ্রেশ ডিম্বাণু বের করা হয়। ক্রায়োতে ভ্রুণ রাখার জন্য আলাদা কোন চার্জ দিতে হয় না। ভ্রণ জরায়ুতে দেবার পর একবারে না হলে তিনমাস অন্তর অন্তর দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া সঙ্গে সঙ্গে না নিয়ে এক দু’ বছর পরেও তা গ্রহণ করে অর্থাৎ গর্ভে নিতে পারে। তবে ৩৫ বছরের উর্ধ্বে মহিলাদের ভ্রুণ দু”বছর পর্যন্ত রাখা যায়।

ক্রায়োতে ভ্রুণ রাখার সুবিধা:

ক্রায়োতে ভ্রুণ রাখা সম্ভব বলেই এখন টেস্টটিউব বেবি নিতে অনেক দম্পতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। দান করা ডিম্বাণু পেয়ে স্বামীর শ্রক্রাণু দ্বারা ভ্রুণ তৈরী করে ক্রায়োতে রেখে মেনোপোজ হয়ে যাওয়া মহিলারাও মা হতে পারছেন। আইভিএফ পদ্ধতিতে ৪০-৪৫ বয়স্কা মহিলাদের টেস্টটিউব বেবি নেওয়া সম্ভব। অনেক পরিবার রয়েছে যাদের একটিমাত্র সন্তান থাকে এবং কোন কারনে সে সন্তান মারা গেলে তখন পুরো পরিবার অসহায় হয়ে পড়ে। এসব পরিবারের মায়েদের বয়স অনেক সময় ৪৫ উপরে হয়। এদের কারও মেনোপোজ হয়েছে এবং কারও হওয়ার মুখে। সন্তান হারিয়ে এরা উম্মাদ। এদের বাঁচাতে হলে সন্তান দিতে হবে। আবার এদের মানসিক অবস্থান এমন যে, নিজের সন্তান চাই। এমতাবস্থায় ক্রায়োতে রাখা দান করা ভ্রণ দিয়ে এদের সন্তান দেওয়া সম্ভব।

বিজ্ঞানের আশির্বাদ অপব্যবহার:

প্রিয় পাঠক, নারী জীবনে একটি প্রতিক্ষিত পর্ব। কিন্তু যে যেসব নারী গর্ভধারণ করতে পারছে না তাদের কথা একবার ভেবে দেখুন কত অসহায় তারা। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এই অবস্থা কতটা ভয়ানক। দেশের হাজার হাজার বন্ধ্যা মহিলা একটি সন্তান লাভের জন্য পীর ফকিরদের কাছে গিয়ে নিজের সহায় সম্বলসহ ইজ্জতকে পর্যন্ত বিকিয়ে দেন। গর্ভধারণে পুরুষ ও মহিলা ভূমিকা সম্পকে এ লেখা কিছু তথ্য দেওয়া হলেও এই বিষয় সম্পর্কে প্রচুর জ্ঞান প্রতিটি পুরুষ মহিলার থাকা প্রয়োজন। প্রিয় পাঠক, দেশের অনেক অভিজাত এলাকার উচ্চ বিত্তবান মহিলার আজকাল টেস্টটিউব বেবি নিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করছেন। টেস্টটিউব বেবি বিজ্ঞানের আশির্বাদ হলেও এই প্রক্রিয়ায় অনেক দম্পতি প্রতারিত হচ্ছেন। এ প্রতারণা অনেক সুক্ষè। ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। ধরুন সায়মা ও সাইফের কথা। তাদের সমস্যা বিবাহিত জীবনে ছয় বছর পার হলেও তাদেও সন্তান না হওয়া। ডা: দেখানো হলে যাবতীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ডাক্তার সায়মার হ্যাজবেন্ড মি: সাইফের শুক্রানুতে সমস্যা। বাস্তব কথা বলতে বলতে হয় সায়মা ও সাইফের সন্তান না হওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু ডাক্তার সাহেব অর্থের চিন্তা করে একটু প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে জানালো তাদের টেস্টটিউব বেবি নেওয়া সম্ভব। প্রিয় পাঠক, ডাক্তার সাহেব এ ক্ষেত্রে অন্য কোন পুরুষের দান করা স্পার্ম বা শুক্রানো দিয়ে সায়মার ডিম্বাণুর সাথে নিষেক ঘটিয়ে সায়মাকে গর্ভধারণ করাবেন। সুরাং স¦ামী হিসেবে সায়মার গর্ভধারণে মি: সাইফের কোন ভূমিকাই থাকলো না। প্রিয় পাঠক, আপনাদের বিবেকের কাছে আমাদের প্রশ্ন, উল্লেখ্য উদাহরনটি কি মানবতাবিরোধী কিংবা বিজ্ঞানের অভিশাপ নয়? সুতরাং আপনি সন্তান ধারণে অক্ষম হলে প্রথমে স্বামী বা স্ত্রী কার কোন সমস্যা চিহ্নিত করুন। চিহ্নিত সমস্যা চিকিৎসকের পরিচর্যায় থেকে সমধানের চেষ্টা করুন। অত:পর চিকিৎসকের পরামর্শে টেস্টটিউব বেবি নেওয়ার প্রয়োজন হলে আপনার সামর্থ্যরে কথা বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন। পাঠক আধুনিক বিজ্ঞানের কাছে পীর ফকির কিংবা ভন্ড সায়দাবাদীর নামে অর্থ সম্পদ গচ্ছায় দেওয়া এবং অবলা নারীদের ইজ্জত বিকিয়ে দিয়ে পর পুরুষের শুক্রানো দিয়ে গর্ভধারণ করে সন্তান পাওয়া অর্থাৎ সভ্য সমাজে অসভ্যতার বীজ ফোটানোর  মতোই সমান কথা। টেস্টটিউব বেবি সম্পর্কে আমাদের এ প্রতিবেদনটি আপনাদের অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর দেবে বলে আশা রাখি। পরিশেষে একটি কথা বিজ্ঞানের আশির্বাদ গ্রহণ করুন, অভিশাপকে নয়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

nine + 10 =