হাসরের দিন মুমিনগন কোন কোন নবীর কাছে সুপারিশের জন্য যাবেন

0
434

মুসলিম ও খলীফা (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কিয়ামতের দিন মু’মিনগণ একত্রিত হবে এবং তারা বলবে, আমরা যদি আমাদের রবের কাছে আমাদের জন্য একজন সুপারিশকারী পেতাম। এরপর তারা আদম আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কাছে আসবে এবং তাঁকে বলবে আপনি মানব জাতির পিতা। আপনাকে আল্লাহ তা‘আলা নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন। আর ফেরেশতা দ্বারা আপনাকে সিজদা করিয়েছেন এবং যাবতীয় বস্ত্তর নাম আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন। অতএব আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন, যেন আমাদের কঠিন স্থান থেকে আরাম দিতে পারেন। তিনি বলবেন, তোমাদের এ কাজের আমার সাহস হচ্ছে না। তিনি নিজ ভুলের কথা স্মরণ করে লজ্জাবোধ করবেন। (তিনি বলবেন) তোমরা নূহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কাছে যাও। তিনই প্রথম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকে আল্লাহ জগতবাসীর কাছে পাঠিয়েছেন। তখন তারা তাঁর শরণাপন্ন হবে। তিনিও বলবেন, তোমাদের এ কাজের জন্য আমার সাহস হচ্ছে না। তিনি তাঁর রবের কাছে প্রশ্ন করেছিলেন এমন বিষয় যা তাঁর জানাছিল না। সেকথা স্মরণ করে তিনি লজ্জাবোধ করবেন। এবং বলবেন বরং তোমরা আল্লাহর খলীল (ইবরাহীম) আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কাছে যাও। তারা তখন তাঁর কাছে আসবে, তখন তিনি বলবেন, তোমাদের এ কাজের জন্য আমার সাহস হচ্ছে না। তোমরা মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কাছে যাও। তিনি এমন বান্দা যে তাঁর সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন এবং তাঁকে তাওরাত গ্রন্থ দান করেছেন। তখন তারা তাঁর কাছে আসবে। তিনি বলবেন, তোমাদের এ কাজের জন্য আমার সাহস হচ্ছে না। এবং তিনি এক কিবতীকে বিনা দোষে হত্যা করার কথা স্মরণ করে তাঁর রবের নিকট লজ্জাবোধ করবেন।

তিনি বলবেন, তোমরা ঈসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কাছে যাও। তিনি আল্লাহর বান্দা ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এবং আল্লাহর বাণী ও রূহ্। (তারা খোনে যাবে) তিনি বলবেন, তোমাদের এ কাজের জন্য আমার সাহস হচ্ছে না। তোমরা মুহাম্মদ -এর কাছে যাও। তিনি এমন এক বান্দা যার পূর্ব ও পরের ভুলত্রটি আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন। তখন তারা আমার কাছে আসবে।

তখন আমি আমার রবের কাছে যাব এবং অনুমতি চাব, আমাকে অনুমতি প্রদান করা হবে। আর আমি যখন আমার রবকে দেখব, তখনি সিজদায় লুটিয়ে পড়ব। আল্লাহ যতক্ষণ চান আমাকে এ অবস্থায় রাখবেন। তারপর বলা হবে, আপনার মাথা উঠান এবং চান দেওয়া হবে, বলুন শোনা হবে, সুপারিশ করুন কবুল করা হবে। তখন আমি আমার মাথা উঠাব এবং আমাকে যে প্রশংসাসূচক বাক্য শিক্ষা দিবেন তা দ্বারা আমি তাঁর প্রশংসা করব। তারপর সুপারিশ করব। আমাকে একটি সীমারেখা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে।

(সেই সীমিত সংখ্যায়) আমি তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাব। আমি পুনরায় রবের সমীপে ফিরে আসব। যখন আমি আমার রবকে দেখব তখন পূর্বের ন্যায় সব কিছু করব। তারপর আমি সুপারিশ করব। আবার আমাকে একটি সীমারেখা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। তদনুসারে আমি তাদের জান্নাতে দাখিল করাব।

(তারপর তৃতীয়বার) আমি আবার রবের দরবারে উপস্থিত হয়ে অনুরূপ করব। এরপর আমি চতুর্থবার ফিরে আসব এবং আরজ করব এখন কেবল তারাই জাহান্নামে অবশিষ্ট রয়ে গেছে যারা কুরআনের ঘোষণা অনুযায়ী আটকে রয়েছে আর যাদের উপর চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে থাকা অবধারিত রয়েছে। আবূ আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন, কুরআনের যে ঘোষণায় তারা জাহান্নামে আবদ্ধ রয়েছে তাহল মহান আল্লাহর বাণীঃ অর্থাৎ তারা চিরকাল জাহান্নামে থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

three × three =