আলেমের মর্যাদা আবেদের চেয়ে বেশী

0
421

রাসূল (সা) বলেন, إِنَّ فَضْلَ الْعَالِمِ عَلَى الْعَابِدِ كَفَضْلِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ عَلَى سَائِرِ الْكَوَاكِبِ ‘আলেমগণের মর্যাদা আবেদগণের উপরে ঐরূপ, পূর্ণিমার রাতে চাঁদের মর্যাদা অন্যান্য তারকাসমূহের উপরে যেরূপ’। (মুসনাদ আহমাদ হা/২১২০৮, সুনান আবূ দাঊদ হা/ ৩৬৪১, সুনান তিরমিযী হা/ ২৬৮২, ইবনু মাজাহ্ হা/ ২২৩, সহীহুত্ তারগীব হা/ ৭০, দারিমী হা/ ৩৫৪।) ক্বাযী আয়ায বলেন, এই তুলনার কারণ এই যে, নক্ষত্রের আলো দ্বারা সে কেবল নিজেই আলোকিত হয়। কিন্তু চাঁদের আলো নিজেকে ছাড়াও অন্যকে আলোকিত করে। অনুরূপভাবে আবেদ তার ইবাদত দ্বারা কেবল নিজের আধ্যাত্মিক উন্নতি ঘটায়। কিন্তু আলেম তার ইল্ম দ্বারা নিজে যেমন উপকৃত হন, তেমনি অন্যকে উপকৃত করে থাকেন। আলেম উক্ত নূর লাভ করেন রাসূল (সা) থেকে। যেমন চন্দ্র জ্যোতি লাভ করে থাকে সূর্য থেকে। আর সূর্য কিরণ লাভ করে আল্লাহ থেকে। একইভাবে রাসূল (সা) ‘অহি’ লাভ করে থাকেন আল্লাহ থেকে’ (মিরক্বাত হা/২১২ হাসিয়া)। রাসূল (সা) বলেন, قَصْدٌ فِي عِلْمٍ خَيْرٌ مِنْ فَضْلٍ فِي عِبَادَةٍ ‘অধিক ইবাদত করার চেয়ে অধিক ইলম অর্জন করা উত্তম। (মিশকাত হা/২৫৫; ছহীহুল জামে‘ হা/১৭২৭, সনদ সহীহ্) আবূ উমামা বাহেলী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একবার রাসূল (সা)-এর সামনে দু’জন লোকের কথা উল্লেখ করা হ’ল। যাদের একজন আলেম অপরজন আবেদ। তখন তিনি বলেন, فَضْلُ العَالِمِ عَلَى العَابِدِ كَفَضْلِي عَلَى أَدْنَاكُمْ ‘আলেমের মর্যাদা আবেদের উপর। যেমন আমার মর্যাদা তোমাদের সাধারণের উপর’। (সুনান তিরমিযী হা/২৬৮৫; ইবনু মাজাহ হা/২২৩; ছহীহ তারগীব হা/৮১; মিশকাত হা/২১৩;, সনদ সহীহ্) একজন আলেম লেখনী, শিক্ষাদান বা বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। ফলে যত মানুষ তার মাধ্যমে হেদায়াত লাভ করবে, নেকীর কাজের দিশা পাবে এবং তদনুযায়ী আমল করে ছওয়াব অর্জন করবে, উক্ত আলেম তাদের সমপরিমাণ নেকী লাভে ধন্য হবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, مَنْ عَلَّمَ عِلْمًا فَلَهُ أَجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهِ، لَا يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِ الْعَامِلِ ‘যে ব্যক্তি দ্বীনী ইলম শিক্ষা দিবে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় ছওয়াব পাবে, যে তার উপর আমল করবে। তবে আমলকারীর ছওয়াব থেকে সামান্যতমও কমানো হবে না’। (ইবনু মাজাহ হা/২৪০, সনদ হাসান) এমনকি মৃত্যুর পরেও তিনি উক্ত নেকী লাভ করতে থাকবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, إِذَا مَاتَ الْإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلاَّ مِنْ ثَلاَثَةٍ: إِلاَّ مِنْ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ، أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ، أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ، ‘মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে তখন তিনটি আমল ব্যতীত তার আমল বন্ধ হয়ে যায়। ১. প্রবাহমান দান ২. এমন ইলম যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় এবং ৩. নেক সন্তান, যে তার জন্য দো‘আ করে’। (মুসলিম হা/১৬৩১; আবূদাঊদ হা/২৮৮০; নাসাঈ হা/৩৬৫১; তিরমিযী হা/১৩৭৬) রাসূল (সা)-এর পর উম্মতে মুহাম্মাদীর শ্রেষ্ঠ মানুষ। ইমরান বিন হুছাইন (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা) এরশাদ করেন, خَيْرُ أُمَّتِىْ قَرْنِىْ ثُمَّ الَّذِيْنَ يَلُوْنَهُمْ ثُمَّ الَّذِيْنَ يَلُوْنَهُمْ ‘আমার উম্মতের শ্রেষ্ঠ হ’ল আমার যুগের লোক (অর্থাৎসাহাবীগণ)। অতঃপর তৎপরবর্তী যুগের লোক (অর্থাৎ তাবেঈগণ)। অতঃপর তৎপরবর্তী যুগের লোক (অর্থাৎ তাবে তাবেঈন)। (বুখারী হা/৩৬৫০; মুসলিম হা/২৫৩৩।)

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

four + 13 =