খাদিম নগরে হরিলুট হাজার কোটি টাকার সরকারী খাস জমি, কাটছে টিলা ঘটছে পরিবেশ বিপর্যয় প্রশাসন নীরব,

0
271

হাসান জুলহাস: সিলেটের খাদিম নগরে বেপরোয়া ভূমিখেকো মখলিছ-আবুল কালামের মদদপুষ্ট বাহিনী গিলে খাচ্ছে সরকারি খাস জমি, লণ্ডভণ্ড পাহার, টিলা, উজার হচ্ছে বন, ভরাট হচ্ছ পুকুর। নির্বিকার প্রশাসন, ঘুমিয়ে আছে পরিবেশ। এমন অনিয়মেই সেখানে নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে। ফলে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, বেদখল হচ্ছে হাজার কোটি টাকার সরকারি খাস জমি।

সরেজমিন ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় খাদিম নগর মৌজার জে এল নং ৭১ এর অন্তর্ভুক্ত খাদিম চা বাগানের জায়গা, দাগ নং ১১৪০,১১৪১,১১৪২,১১৫৫,১১৫৬,১১৫৭ সহ আরো অনেক দাগ খাদিম নগর মৌজার অন্তর্ভুক্ত সরকারী খাস জমি বন্দোবস্ত বা লিজের আওতায় খাদিম চা বাগানের জায়গা। সিলেট সদর উপজেলার ৪ নং খাদিম পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের এলাকাধীন সুরমা গেইট বাগান বাড়ির বাসিন্দা মৃত সিদ্দেক আলীর পুত্র মোঃ মখলিছুর রহমান। আওয়ামীলীগ নেতা পরিচয়ে সরকারী খাস জমি জবর দখল করে ষ্টাম্পের মাধ্যমে দেদারছে বিক্রি করছেল্ন। তাকে সহযোগীতা করছেন খাদিম চা বাগানের ম্যানেজার আতিকুর রহমান। যিনি সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করেন। যেন তিনি কিছুই জানেননা। আরো সাথে আছেন জাল দলিলের মেশিন  ফেনী জেলার সদর উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল কালাম আজাদ পাটোয়ারী, তিনি ৪ নং খাদিমপাড়া ইউনিয়নের বহর কলোনীর বাসিন্দা ও সিলেট সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ এর ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক পরিচয়ে  প্রভাব খাটিয়ে খাদিম চা বাগানের জায়গা দখল করে নিজের নামে মাঠ জরিপ করিয়েছেন।

খোজঁ নিয়ে জানাযায় আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারি বাগানের জায়গায় নিজের দুইটা এ্যালমুনিয়াম ফ্যাক্টরি বানিয়েছেন, সেই ফ্যাক্টরির নাম “আজাদ মেটাল এ্যালমুনিয়াম কারখানা” আর বাগানের জায়গায় নিজের দামান কে প্লট দিয়েছেন। নিজের বাগনি ও ভাতিজি কে ঘর বানিয়ে দিয়েছেন।

বহর কলোনীর বাসিন্দা মৃত সুলতান মোল্লার পুত্র মখলিছুর রহমান এর কেয়ারটেকার আক্কাস আলী। যিনি ২০বছর যাবৎ কেয়ারটেকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। বতর্মানে ২ বছর যাবৎ তিনি দায়িত্বে নেই।

ভূমিখেকো মখলিছুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারির রয়েছে নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী। এই বাহিনীর সদস্যরা হলেন

কামরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, মানিক মিয়া, সিবলু মিয়া, হুমায়ূন আহমেদ, সুজন মিয়া, কয়েছ মিয়া, উচমান আলী মহরীল গং যাদের দিয়ে জবর দখল করে লুট পাট করাছেন ভূমিখেকোরা। টিলা কাটায়ও রয়েছে একচ্ছত্র আদিপাত্য।

প্রতিদিন রাতের আঁধারে সরকারি অনুমোদন ছাড়া। লেবার দিয়ে ভূমি ও টিলাখেকো চক্র পাহাড় টিলা কেটে পুকুর ভরাটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

ষ্টাম্পের মাধ্যমে দখলীয় জমি কিনেছন মোঃ মামুন মিয়া গং। তিনি নিজের পায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে সরকারী খাস জমি পাহাড় টিলা কেটে পুকুর ভরাট করে প্লট তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি অনুমোদন ছাড়া বিগত কয়েক দিন ধরে রাতের অন্ধকারে লেবার দিয়ে টিলা কেটে পুকুর ভরাট করছে মামুন গং বিষয়টি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যাক্তি সত্যতা যাচাই করে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিলেট শাহ পরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেন। পাশাপাশি তিনি উল্লেখিত ঘটনা তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিলেট বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেছেন বলে এই প্রতিবেদককে জানান।

সিলেট সদর খাদিম নগর খাদিম পাড়া বর্তমান সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৩৪ নং ওয়ার্ডের বিআইডিসি বহর পশ্চিম আল বারাকা রোডের শেষ খাদিম নগর মৌজার জে এল নং ৭১ এর অন্তর্ভুক্ত সরকারী খাস জমি বন্দোবস্ত লিজের আওতায় খাদিম চা বাগানের জায়গা দখল করে ষ্টাম্পের মাধ্যমে বিক্রি করলেও কর্তৃপক্ষের ভূমিকা  নীরব। সরকারি অনুমোদন ছাড়া পাহাড়, ঠিলা, বন কেটে প্লট তৈরি করছে এবং পুকুর ভরাট করে প্লট তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে নিয়মিতভাবে। অনুমোদন ছাড়া সরকারী খাস জমি চা বাগানের জায়গার উপর ফাঁকা ওয়ালের ঘর বাড়ী তৈরি করা হলেও প্রশাসনের নজরধারী না থাকায় ভূমিখেকোরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অনুমোদন ছাড়াই পাহাড় বন ঠিলা চা বাগান লায়েক পতিত জংগল সাইল চারা উজাড় করে দিতেছে ভূমিখেকো ও তাদের লাঠিয়াল বাহিনী। বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের জাল দলিল তৈরি করে মামলা দায়ের করে মামলা চলাকালীন সময়ে নিজের নামে পরিচিত বস্তি এলাকা বানিয়ে দখল করে নিচ্ছে ও ঐ দখলীয় জমি স্টাম্পের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে।

বন্দোবস্ত বা লিজ দেওয়া হয় শুধু মাত্র খাদিম চা বাগানের নামে যাহা পূর্বে খাদিম টি গার্ডেন নামে পরিচিত ছিল। সাবেক বন্দোবস্ত লিজ বাতিল হয়ে যাওয়ার পর ২০১২ইং সাল থেকে ২০৩২ইং সাল পর্যন্ত নিনা আফজাল হোসেন চৌধুরীর নামে বন্দোবস্ত লিজ দেওয়া হয়।

কয়েক মাস আগে মোঃ মখলিছুর রহমান গং সুরমা গেইট বাগান বাড়ির বাসিন্দা, মোঃ মামুন মিয়ার কাছে দখলীয় জমি স্টাম্পের মাধ্যমে বিক্রি করেন। মামুন মিয়া দখলীয় জমি কিনে তার নিজের পায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে পাহাড় টিলা কেটে প্লট তৈরি করে ফাঁকা ওয়ালের ঘর বাড়ী তৈরি করছে। যাহা সরেজমিনে পাওয়া যায়। এছাড়াও ইসমাইল মিয়া,  বহর কলোনীর মসজিদের ইমামের কাছে খাস জমি বিক্রি করা হয়েছে। সুমি বেগম নামের এক মহিলাকে বেআইনী বসিয়ে দখল করে নিচ্ছে খাস জমি।

 এ ব্যপারে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন মামলা চলমান থাকাবস্তায় কোন ধরনের স্থাপনা নির্মান বা বাড়ীর দেওয়াল করা যাবেনা। এরকম কিছু হলে আমরা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করব।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

sixteen + 4 =