সূরা ফাতিহার ফযীলত

0
162

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্যে ছিলেন আর তাঁর কাছে ছিলেন জিবরাঈল (আ.)। হঠাৎ জিবরাঈল (আ.) তাঁর মাথার উপরে এক বিকট আওয়াজ শুনলেন তখন তিনি আকাশের দিকে চোখ তুলে দেখলেন যে, আকাশের একটি দরজা খুলে দেয়া হয়েছে, যা কখনও খোলা হয় নাই। তিনি বলেন, অতঃপর একজন ফিরিশতা অবতীর্ণ হয়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বললেন, আপনি এমন দুটি নূরের সুসংবাদ গ্রহণ করুন, যা শুধু আপনাকেই দান করা হয়েছে। আপনার পূর্বে অন্য কোন নবীকে ইহা দান করা হয়নি। একটি হল সূরা ফাতিহা এবং অন্যটি হল, সূরা বাকারার শেষ অংশ। এতদুভয়ের একটি অক্ষর পাঠ করলেও তা (এর প্রতিদান) আপনাকে দেয়া হবে। হযরত আবূ সাঈদ ইবনে মুআল্লাহ (রা.) হতে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁহার নিকট দিয়ে যাবার সময় তাকে ডাকলেন, তিনি তখন নামায আদায় করছিলেন। তিনি বলেন, আমি নামায শেষ করে তাঁর কাছে আসলে তিনি বলেন, আমার আহবানে সাড়া দিতে তোমাকে কিসে বাঁধা দিল? তিনি বললেন, আমি নামায আদায় করছিলাম।

তিনি বললেন, আল্লাহ তা’আলা কি বলেন নাই, হে মুমিনগণ! রাসূল যখন তোমাদের এমন কিছুর দিকে ডাকেন যাহা তোমাদের প্রাণবন্ত করে, তখন আল্লাহ ও রাসূলের আহবানে সাড়া দিবে। (সূরা : ৮, আয়াত : ২৮) মসজিদ হতে বের হবার পূর্বে আমি কি তোমাদের সর্বোৎকৃষ্ট সূরা শিক্ষা দিব না? তিনি বললেন, অতঃপর তিনি বের হতে গেলে আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আপনার কথা? তিনি বললেন, “আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আ’লামীন’ অর্থাৎ, সূরা ফাতিহা, ইহা সাত আয়াত যা বারবার পড়া হয়ে থাকে, যা আমাকে দান করা হয়েছে এবং মহান কুরআন । হযরত উবাই ইবনে কা’ব (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা সূরা ফাতিহার মতো তাওরাত অথবা ইঞ্জিলে কোন আয়াত নাযিল করেননি। উহা সাত আয়াত, যা বারবার পাঠ

করা হয়ে থাকে । আল্লাহ তা’আলা বলেছেন ইহা আমার এবং বান্দার মধ্যে ভাগ করা। আর আমার বান্দার জন্য রয়েছে, সে যা চায় হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দান করা হয়েছে কুরআন মজীদের সাতটি বড় সূরা। তিনি অত্র হাদীসে “সাব আম মিনাল মাছানী”, বলতে সাতটি বড় সূরার কথা বুঝিয়েছেন। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে “সাব আম মিনাল মাছানী” আয়াতের সম্পর্কে বর্ণিত । তিনি বলেন, ইহা কুরআন মজীদের সাতটি বড় সূরা।

আমার হযরত ইমরান ইবনে হুসায়েন (রা.) হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ সংখ্যাত আলাইহি ওয়াসাল্লাম উচ্চশব্দে কুরআন পাঠ করিয়া নামায সমাপ্ত করে বললেন, ভিতর তোমাদের কেউ কি এখন আমার সাথে কুরআন পাঠ করেছ। এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। হ্যাঁ। তিনি বললেন, আমি বলছি কুরআন তিলাওয়াতে আমার সাথে কেন ঝামেলা সৃষ্টি হয়। বর্ণনাকারী সমাস বলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেই সকল নামাযে কুরআন উচ্চ স্বরে পড়তেন সেই সকল নামাযে লোকেরা কুরআন পড়া হতে কী বিরত থাকল, যখন তারা এই ব্যাপারটি শুনতে পেল। কাম চাল চা হযরত ইমরান ইবনে হুসায়েন (রাঃ) হইতে বর্ণিত যে, একবার নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুহর অথবা আসরের নামায আদায় করলেন। আর এক লোক তাঁর পিছনে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করছিল। নবীজী নামায শেষ করে বললেন, তোমাদের মাঝে কে সাব্বিহিসমা রাব্বিকাল আলা পাঠ করল? এক ব্যক্তি বলিল, আমি তখন নবীজী ইরশাদ করলেন : আমি বুঝতে পারছিলাম যে, তোমাদের কেউ কিরাআতে আমার সহিত ঝামেলা সৃষ্টি করছে। হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত।

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উচ্চশব্দে কুরআন পাঠ করে নামায সমাপ্ত করে বললেন, তোমাদের কেউ কি এখন আমার সাথে কুরআন পাঠ করেছ। এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হ্যা। তিনি বলিলেন, আমি ভাবছি কুরআন তিলাওয়াতে আমার সাথে কেন ঝামেলার সৃষ্টি হয়। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর রাসূল (সাঃ) যেই সকল নামাযে কুরআন শব্দ করে পাঠ করতেন সেই সকল নামাযে লোকেরা কুরআন পাঠ করা হতে বিরত থাকিত। যখন তারা এই ব্যাপারটি শুনতে পেল।

হযরত উবাদাহ ইবনে সামিত (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ সারারাহু আলাইহি আসারাম আমাদেরকে নিয়ে এক নামায আদায় করলেন, যাতে উচ্চস্বরে কুরআন পাঠ করা হয়। অতঃপর তিনি বললেন, যখন আমি উচ্চস্বরে কুরআন পড়ি তখন সুরা ফাতিহা ব্যতীত তোমাদের কেহ যেন কিছু না পড়ে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

17 + fourteen =