ঘুমানোর সুন্নাত সমূহ

0
225

১. ইশার নামাযের পর যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চেষ্টা করা, যাতে তাহাজ্জুদের জন্য উঠা সহজ হয়। (বুখারী, হাদীস নং- ৫৪৭) বি.দ্র. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যমীন, চৌকি, কাপড়ের বিছানা, চাটাই, চামড়ার বিছানা ইত্যাদির উপর শয়ন করেছেন বলে হাদীসে বর্ণিত আছে। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ২০৬৯/ শামায়িলে তিরমিযী, পৃ. ২২)

২. উযু করে শয়ন করা। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৬৩১১)

৩. শোয়ার পূর্বে বিছানা ভালভাবে ঝেড়ে নেয়া। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৬৩২০ )

৪. শয়নের পূর্বে পরিহিত কাপড় পরিবর্তন করে ঘুমের কাপড় পরিধান করা। (আল মাদখাল, ৩: ১৬২)

৫. শয়নের পূর্বে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে নিম্নে বর্ণিত কাজগুলো করা : ১. দরজা বন্ধ করা। ২. মশক বা পানির পাত্র এবং খাদ্য দ্রব্যের পাত্র ও অন্যান্য পাত্রসমূহ ঢেকে রাখা। যদি ঢাকার জন্য কোন বস্তু না পাওয়া যায়, তাহলে ‘বিসমিল্লাহ’ পড়ে তার মুখে একটি লাটি বা ছড়ি রেখ দেয়া, ৩. বাতি নিভানো। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫৬২৩-২৪)

৬. ঘুমানোর পূর্বে উভয় চোখে তিনবার করে সুরমা লাগানো। (মুস্তাদরাক, হাদীস নং-৮২৪৯)

৭. ঘুমানোর পূর্বে কিছু পরিমাণ কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা। যথা : আলহামদু শরীফ, সূরা কাফিরূন, আয়াতুল কুরসী, আমানার রসূল থেকে সূরা বাক্বারার শেষ পর্যন্ত, সূরা মুলক, আলিফ লাম মীম সিজদাহ ইত্যাদি তিলাওয়াত করা বেশি পড়া সম্ভব না হলে কমপক্ষে ছোট ২/ ৩ টি সূরা পড়ে নেয়া।(তাবারানী কাবীর হাদীস নং-২১৯৫ আল আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং- ১২০৯ বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৩২৭৫)

৮. ঘুমানোর পূর্বে কয়েকবার দরূদ শরীফ পাঠ করা এবং তাসবীহে ফাতেমী অর্থাৎ ৩৩ বার সূবাহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়া।(বুখারী শরীফ, হাদীস নং-৩১১৩)

৯. সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস প্রত্যেকটা তিনবার করে পড়ে হাতে দম করে যতটুকু সম্ভব মাথা হতে পা পর্যন্ত সমস্ত শরীরে হাত মুছে দেয়া। তিনবার এরূপ করা।(বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫০১৭)

১০. ঘুমানোর সময় ডান কাতে কিবলামুখী হয়ে শোয়া সুন্নাত। উপুড় হয়ে শয়ন করতে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ এভাবে শয়ন করাকে আল্লাহ তা’আলা পছন্দ করেন না। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৬৩১৪/ সহীহ ইবনে হিব্বান হাদীস নং- ৫৫৪৯)

১১. শয়ন করে এ দু’আ পড়াঃ بِاسْمِكَ رَبِّي وَضَعْتُ جَنْبي وَبِكَ أَرْفَعُهُ إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَاغْفِرْلَهَا وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৬৩২০ )

১২. ঘুমানোর পূর্বে তিনবার এই ইস্তিগফার পড়াঃ اسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ وَآتُوبُ إِلَيْهِ. (তিরমিযী, হাদীস নং- ৩৩৯৭)

১৩. এই দু’আটিও পড়া:(বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৬৩১৪ اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ آمُوْتُ وَأَحْيَا.

১৪. সর্বশেষে এ দু’আটি পড়াঃ اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ وَجْعِي إِلَيْكَ وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ لَا مَلْجَا وَلَا مَنْجَا مِنْكَ إِلَّا إِلَيْكَ اللَّهُمَّ أَمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي آنَزَلْتَ وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ২৪৭)

১৫. শয়ন করার পর ভয়ে ঘুম না আসলে এই দু’আ পড়াঃ بِسْمِ اللَّهِ اَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وَشَرَّ عِبَادِهِ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ وَأَنْ يَحْضُرُونَ. (তিরমিযী, হাদীস নং-৩৫২৮)

১৬. স্বপ্নে ভয়ংকর কিছু দেখে চক্ষু খুলে গেলে তিনবার اعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّحِيْمِ. পড়ে বাঁ দিকে থু-থু ফেলে পার্শ্ব পরিবর্তন করে শোয়া। তাতে ক্ষতির আর কোন আশংকা থাকে না এবং এ দু’আটি পড়াঃ اللهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ هَذِهِ الرُّؤْيَا. (মুসলিম, হাদীস নং- ২২৬২) ১৭. সুযোগ হলে দুপুরে খানার পর কিছুক্ষণ কাইলূল্লাহ করা অর্থাৎ শয়ন করা। চাই ঘুম আসুক বা না আসুক। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং-৯৩৯)

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

fifteen − twelve =