জ্ঞানের কথা লেখে নেয়া

0
225

সহীহ বোখারী ১১২। হাদীসঃ হযরত আবু হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমি একদা হযরত আলী (রাঃ)-কে বললাম, আপনার কাছে কি কোন কিতাব (আহলে বায়তের জন্য লিখিত কোন বিশেষ ফরমান) আছে? উত্তরে তিনি বললেন, না; তবে আল্লাহর কিতাব আছে। অথবা এমন জ্ঞান যা কোন মুসলমান ব্যক্তিকে দেয়া হয়। অথবা যা এ সহীফাতে আছে। আমি বললাম, এ সহীফাতে কি লেখা আছে? তিনি বললেন, দিয়াতের আহকাম, কয়েদীদেরকে ছাড়াবার আহকাম এবং মুসলমানকে কোন কাফেরের পরিবর্তে হত্যা করা যাবে না, এ সমস্ত আহকাম লেখা আছে। ১১৩। হাদীস : হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, মক্কা বিজয়ের সময় ‘খোযাআ’ গোত্রের লোকেরা ‘বনী লাইস’-এর এক ব্যক্তিকে পূর্ব হত্যার দায়ে হত্যা করে। নবী করীম (সঃ)-কে এ সংবাদ দেয়া হলে তিনি স্বীয় উটের উপর আরোহণ করে খোতবা দিয়ে বললেন, আল্লাহ তা’আলা মক্কা থেকে যুদ্ধবিগ্রহ (অথবা হাতী) বন্ধ করে দিয়েছেন (ইমাম বোখারী বলেন, প্রত্যেক বর্ণনাকারীই এ স্থলে সন্দেহজনক শব্দ দ্বারা বর্ণনা করেছেন। আবু নোআইম এস্থলে হত্যা বা হাতী বর্ণনা করেছেন, অন্যরা শুধু হাতী বলেছেন)। মক্কাবাসীদের উপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) এবং মোমেনদেরকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছিল, মক্কাকে আমার পূর্বে কারো জন্য হালাল করা হয়নি।

আমার পরেও হালাল করা হবে না। আর আমার জন্যও কেবল দিনের কিছু অংশে হালাল করা হয়েছিল। হুঁশিয়ার! এখন থেকে মক্কাকে পুনরায় হারাম করা হয়েছে। মক্কার কোন কাঁটা, কোন বৃক্ষ কর্তন করা যাবে না, পথিমধ্যে পড়ে থাকা কোন বস্তু উঠিয়ে নেয়া যাবে না। তবে যার তা প্রচার করার ইচ্ছা সে উঠিয়ে নিতে পারে। আর যাকে হত্যা করা হবে তার ওয়ারিসদের দু’টি পন্থার যে কোন একটি পন্থা গ্রহণ করা উত্তম। হয়ত দিয়াত গ্রহণ করবে, অন্যথায় হত্যাকারীকে কেসাস্ হিসেবে হত্যা করা হবে। অতঃপর ইয়ামেনবাসী এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে লেখিয়ে দিন। হুযুর (সঃ) তখন বললেন, অমুকের এটা লেখে দাও। তারপর কোরায়শ গোত্রের এক ব্যক্তি বললেন, হুযুর ‘ইযখের’ ঘাস কাটার অনুমতি দিন। কারণ আমরা তা আমাদের ঘরে এবং কবরে ব্যবহার করে থাকি। তখন হুযুর (সঃ) বললেন, হ্যাঁ ইখের, ইযখের। অর্থাৎ ইষ্ণের ঘাস কাটা যাবে।

১১৪। হাদীসঃ হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল (সঃ) থেকে তাঁর সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে আমার চেয়ে আর কেউ বেশি হাদীস বর্ণনাকারী নেই। তবে আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে তা হতে পারে। কারণ তিনি রাসূল (সঃ)-এর হাদীসসমূহ লিখে রাখতেন, আর আমি লিখে রাখতাম না। ১১৫। হাদীস: হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, হুযুর (সঃ)-এর ইন্তেকালের পূর্বে যখন তাঁর অসুস্থতা বেশি হয়ে গেল, তখন বললেন, আমার কাছে লেখার সামগ্রী লও। আমি তোমাদেরকে এমন কথা লেখিয়ে দিব যার পরে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। এতদশ্রবণে হযরত ওমর (রাঃ) বললেন, নবী করীম (সঃ)-এর অসুস্থতা প্রাধান্য পেয়েছে। আর আমাদের কাছে আল্লাহর কিতাব আছে, তাই যথেষ্ট। সাহাবায়ে কেরামের মাঝে এ ব্যাপারে মতপার্থক্য দেখা দিল। এমন কি তাঁদের কথা কাটাকাটির কারণে আওয়াজ বেড়ে গেল। হুযুর (সঃ) তাঁদের অবস্থা দেখে বললেন, তোমরা এ স্থান থেকে চলে যাও। আমার কাছে তোমাদের ঝগড়া করা উচিত নয়। তখন আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) এ কথা বলতে বলতে বের হলেন। মসিবত, বড় মসিবত, যা রাসূল (সঃ) এবং তাঁর লেখার ইচ্ছার মধ্যে বাধা সৃষ্টি করেছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 × 5 =