বিভিন্ন দেশের কারাগারে বাংলাদেশের ৯ হাজার ৩৭০ শ্রমিক-প্রবাসী আটক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.
হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, এর মধ্যে সৌদি আরবে আটক রয়েছেন ৫ হাজার ৭৪৬ জন।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান
পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বহির্বিশ্বের কারাগারে আটকদের বিষয়ে মিশনগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী পর্তুগালে ১,
মিসরে ৬, ইতালিতে ৮১, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩৮৫, কোরিয়ায় ৬, শ্রীলঙ্কায় তিন, কাতারে ৪১৫, লিবিয়ায় ৯, স্পেনে ১৯,
হংকংয়ে ১২২, সিঙ্গাপুরে ৬৬, ব্রুনাইয়ে ১৬, চীনের বেইজিংয়ে ১৮৪, চীনের কুনমিংয়ে ৭, আবুধাবিতে ৪০৪,
ইন্দোনেশিয়ায় ৪৯, সৌদি আরবে ৫ হাজা র ৭৪৬, মালয়েশিয়ায় ২১৯, আলজেরিয়ায় ১, থাইল্যান্ডে ৪, লেবাননে ২৮,
গ্রিসে ৪১৪, ইরাকে ২১৭, তুর্কিতে ৫০৮, মিয়ানমারে ৩৫৮, জাপানে ২ এবং জর্ডানে আটক রয়েছে ১০০ জন।
তিনি বলেন, গত বছরের জুলাই থেকে চলতি মাস পর্যন্ত মোট ১২২৬ জন আটক বাংলাদেশিকে লিবিয়া থেকে, ৫১
বাংলাদেশিকে ফ্রান্স ও ইউরোপের অন্যান্য দেশের জেলখানা থেকে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। এ ছাড়া ভারত, মিয়ানমার
এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের জেলখানা থেকে আরও প্রায় ১৯৫০ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনা হয়েছে। বিদেশস্থ
বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে কারাগারে আটক বাংলাদেশি কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাদের
দ্রুত মুক্তির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করেন। বিভিন্ন দেশে ফৌজদারি অপরাধের
অভিযোগে আটক শ্রমিক-প্রবাসী কর্মীদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো দ্রুততার সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট
থানা ও পাবলিক প্রসিকিউশন অফিসের সঙ্গে সর্বদা যোগাযোগ রাখা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জেলখানায় আটক প্রবাসীকর্মীদের আদালত কর্তৃক বিচারকালীন সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের একজন
প্রতিনিধি বা আইন সহকারী কোর্টেউপস্থিত থেকে ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে সহায়তা করে থাকে। বিভিন্ন অভিযোগে আটক
শ্রমিক বা প্রবাসী কর্মী দের পরিবারের চাহিদা মোতাবেক সংশ্লিষ্ট দেশের আইনজীবি ল’ ফার্মের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন ও
ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে দূতাবাস সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করেন। কারাগারে আটক শ্রমিক বা প্রবাসী কর্মীদের বিশেষ ও
সাধারণ ক্ষমার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ তদবির করা হয়। কারাগারে আটক শ্রমিক-প্রবাসী
কর্মীদের সাজার মেয়াদ শেষ হলে তাদের অতিদ্রুত দেশে পাঠানোর জন্য দূতাবাসের পক্ষ থেকে বিশেষ ট্র্যাভেল পারমিট
ইস্যু ও টিকিট ক্রয় করা হয়। আর্থিক অভিযোগে আটক শ্রমিক বা প্রবাসী কর্মীদের আর্থিক দায় পরিশোধ ও দেশে
পাঠানোর নিমিত্ত সংশ্লিষ্ট দেশের বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা ও দানশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে দূতাবাস যোগাযোগ করে থাকে।
তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের দণ্ড মওকুফের জন্য বাদীদের সঙ্গে দূতাবাসগুলো সবসময়
যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে। প্রয়োজনে রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষ থেকে মার্জনার অনুরোধ সম্পর্কিত সংশ্রিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ে কূটনৈতিক পত্র দিয়ে থাকে। বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ক্ষেত্রে ভিকটিমের
পরিবারের সঙ্গে আদালতের মাধ্যমে সমঝোতা করে ব্লাডমানি /রক্তপণ পরিশোধপূর্বক মৃত্যুদণ্ড মওকুফকরণের ব্যবস্থা
করে। দৃতাবাস প্রবাসে জেলে বন্দি বাংলাদেশিদের সেবাসমূহ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র
এবং বিচার বিভাগের সঙ্গে নিয়মিত কূটনৈতিক যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে।