##পর্ব ১৩ নামাজের সুন্নত সমূহ## দাঁড়ানো অবস্থায়

0
87

বস্তুত: যাবতীয় বিষয় বস্তুকে সঠিক জ্ঞান দ্বারা জানাকে হিকমাত বলে। হিকমাহ হল সঠিকভাবে ইসলাম বা রসুলের সুন্নাহ মেনে চলা। হিকমাহ একেক ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। দাওয়াতের ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট সত্য বলা যেমন হিকমাহ তেমনি জেহাদের ক্ষেত্রে কৌশল হিসেবে মিথ্যা বলাও হিকমাহ। অনেকে হিকমাহর ভুল ব্যাখা করে সত্যকে পাশ কাটিয়ে যায় বা আড়াল রেখে, সুস্পষ্ট তুলে ধরে না। আসুন দেখি! এ ব্যাপারে কুরআন কী বলে? “আর অবশ্যই আমি কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য, তাই উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?” সূরা আল-ক্বামার, আয়াত: ১৭, ২২, ৩২, ৪০ “(হে নবী) আসলে আমি তোমার ভাষায় একে (কুরআনকে) সহজ করে দিয়েছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।” সূরা আদ-দুখান, আয়াত: ৫৮ “(হে নবী) আসলে আমি তোমার ভাষায় একে (কুরআনকে) সহজ করে দিয়েছি, যেন তুমি এর দ্বারা মুত্তাকীদেরকে সুসংবাদ দিতে পার আর এর দ্বারা বিবাদকারী ঝগড়াটে লোকদেরকে সতর্ক করতে পার।” সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৯৭ “এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা-ভাবনা কর।” সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২১৯, ২৬৬ “এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা সঠিক পথ প্রাপ্ত হও।” সূরা আলে-ইমরান, আয়াত: ১০৩ “এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা শোকর আদায় কর।” সূরা আল-মায়িদাহ, আয়াত: ৮৯ “এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করছেন এবং আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।” সূরা আন-নূর, আয়াত: ৫৮, ৫৯ “আর আল্লাহ তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করছেন এবং আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।” সূরা আন-নূর, আয়াত: ১৮ “আর মানুষের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ স্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।” সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২২১ “অবশ্যই আমি আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছি সেই লোকদের জন্য যারা দৃঢ় বিশ্বাস রাখে।” সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১১৮ “নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ হতে একটি আলোকবর্তিকা ও একটি স্পষ্ট কিতাব এসেছে।” সূরা আল-মায়িদাহ, আয়াত: ১৫ “এটি হচ্ছে মানুষের জন্য সুস্পষ্ট বর্ণনা এবং মুত্তাকীদের জন্য হেদায়াত ও উপদেশ।” সূরা আলে-ইমরান, আয়াত: ১৩৮ “ “ হিকমাহ উদাহরণ দিয়ে গেছেন রসুলগন। মুসলিম জাহানের পিতা ইব্রাহিম (আ:) শিরকে লিপ্ত জাতির ভুল ভাঙ্গতে, বিবেক জাগ্রত করতে হিকমাহ ও সাহসিকতার সহিত দাওয়াত দেন। কুরআনে বর্নিত – আর, আমি ইতিপূর্বে ইব্রাহীমকে তার সৎপন্থা দান করেছিলাম এবং আমি তার সম্পর্কে সম্যক পরিজ্ঞাত ও ছিলাম।যখন তিনি তাঁর পিতা ও তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, এই মূর্তিগুলো কী, যাদের তোমরা পূজারী হয়ে বসে আছ। তারা বললঃ আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে এদের পুজা করতে দেখেছি।তিনি বললেন, তোমরা প্রকাশ্য গোমরাহীতে আছ এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও (সুরা আম্বিয়া -৫১ -৫৪) আল্লাহ বলেন- আর সেই সময়টুকু স্মরণীয় যখন ইবরাহীম স্বীয় পিতা আযরকে বলিলেন, তুমি কি মূতিগুলিকে মা‘বুদ সাব্যস্ত করছো? নিশ্চয় আমি তোমাকে ও তোমার গোটা সম্প্রদায়কে স্পষ্ট ভ্রান্তির মধ্যে দেখছি। আর আমি এইরূপেই ইব্রাহীমকে আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিসমূহ প্রদও নির্দেশন দেখায় যাতে তিনি বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়। অত:পর যখন রাত্রির অন্ধকার তাকে আচ্ছন্ন করল , তখন তিনি একটি তারকা দেখলে বললেন, ( তোমাদের মতে) এটা আমার রব !?(তার জাতির ভুল ভাঙ্গতে কৌশল করেছিলেন) অতপর যখন তা ডুবে গেলো, তখন তিনি বললেন, যে ডুবে যায় আমি তাকে ভালবাসি না। অত:পর যখন দেখলেন চাঁদকে উদিত হতে, তখন বললেন, (তোমাদের মতে)এটা আমার রব!? অতপর যখন সেটিও ডুবে গেলো, তখন তিনি বললেন, যদি আমাকে আমার প্রতিপালক পথপ্রদর্শন না করতেন। তাহলে আমিও পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবো। অত:পর যখন সূর্যকে দেখলেন উজ্জ্বলরূপে উদিত অবস্থায় , বললেন , (তোমাদের মতে)এটা আমার রব? এটাতো সর্বাপেক্ষা বৃহৎ , অতপর যখন তাও ডুবে গেলো,তিনি বললেন, হে আমার সম্প্রদায় ! নিশ্চয় আমি তোমাদের অংশীবাদের প্রতি অসন্তুষ্ট। إ আমি একাগ্রতার সহিত স্বীয় মুখমন্ডল তারই দিকে ফিরছি যিনি আসমানসমূহ ও যমীনকে সৃষ্টি করেছেন, এবং আমি মুশরিকদিকের অন্তর্ভুক্ত নই। (সুরা আল আনআম:৭৪ -৭৯) আজ ও দেখুন আল্লাহ ব্যতীত যাদের বিধানদাতা মানা হয়,কুরআনের বিপরীত যেসব বিধান মানা হচ্ছে – সময়ের সাথে সাথে সেসব বিধানদাতা, বিধান হারিয়ে যায়!? ক্ষমতা থাকা/. শেষ হবার পরই তাদেরই উপর আযাব নেমে আসে, তাদের বিধানগুলো তাদের আইন-সভায় সংশোধনের প্রয়োজন হয়। অথচ আমাদের রব কুরআনের বিধান সবযুগেই চিরন্তন অপরিবর্তনীয় ইনসাফ ও আদলে পরিপূর্ণ আজও অধিকাংশ মানুষ যুগ যুগ ধরে বাপ দাদার নীতি অনুসরণ করে শিরক,কুফর,বিদআতে লিপ্ত। ইব্রাহিম আ তার পিতা ও নিজ জাতিকে হিকমাহর সহিত দাওয়াত দিয়েছিলেন। ইব্রাহিম আ মূর্তি ভেঙ্গেছিলেন তার জাতির ভুল ভাঙ্গাতে – যেন তারা শিরক ছেড়ে দিয়ে এক আল্লাহর ইবাদত করে জাহান্নামের আগুন হতে রক্ষা পায় কিন্তু অথচ তার জাতি এতটা জাহেলিয়াতে অটল ছিল উল্টো তাকেই আগুনে ফেলে দেয়। – কুরআনে বর্নিত – পরে তিনি চুপিচুপি তাদের দেবতাগুলোর কাছে গেলেন এবং বললেন, তোমরা খাদ্য গ্রহণ করছ না কেন? তোমাদের কি হয়েছে যে, তোমরা কথা বল না? অতঃপর তিনি তাদের উপর সবলে আঘাত হানলেন। তখন ঐ লোকগুলো তার দিকে ছুটে আসল। তিনি বললেন, তোমরা নিজেরা যাদেরকে খোদাই করে নির্মাণ করা তোমরা কি তাদেরই ইবাদাত কর? অথচ, আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমরা যা তৈরি করো তাও।( সুরা আস- সাফফাত ৯১-৯৭) একটু ভাবুন আমরা নিজেদের মিল্লাতে ইব্রাহিম দাবি করি – অথচ আল্লাহর পরিবর্তে যাদের বিধানদাতা ও কুরআনের পরিবর্তে যাদের বিধান মানা হয়,মূর্তির কারিগর মতো ওদের বিধান দেওয়ার ক্ষমতা আমরাই দি অথবা আমাদের অক্ষমতাই ওরা আমাদের উপর চেপে বসে। এখন কোন মুমিন যদি ইব্রাহিম( আ) মত ভুল ভাঙ্গাতে এসব বিধানদাতার মূর্তি ভাঙ্গে বা যুগ যুগ ধরে চলে আসা শিরকী সংস্কৃতি বিরোধিতা করে

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 × 2 =