এ্যালকো ফার্মা’র দুর্নীতিবাজ জি এম সাখাওয়াতের খুঁটির জোর কোথায়? মালিকের দুর্বলতা নাকি অবৈধ টাকা?

0
1687

বিশেষ প্রতিনিধি
তারা তিন রতœ। তিনজনই কোম্পানির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। প্রথম জন নাটের গুরু। কর্মরত কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার (কমার্শিয়াল) পদে। নাম মোঃ সাখাওয়াত হোসেন। দ্বিতীয় জন কোম্পানির সিওও। নাম ফার্মাসিস্ট শামীম রব্বানী। আর তৃতীয় জন সহকারি ব্যবস্থাপক (ক্যাশ)। নাম মোঃ হামিদুর রহমান। এই তিন কুতুব মিলে প্রায় ২৫শ’ কর্মকর্তা-কর্মচারীর শ্রমে গড়া প্রতিষ্ঠানকে ঘুঁণ পোকার মতো খেয়ে সাবাড় করছে। দীর্ঘ সময় ধরে এই তিন দুর্নীতিপরায়ন কর্মকর্তা অ্যালকো ফার্মায় অবস্থান করায় সিন্ডিকেট করে কোম্পানিতে নিম্নমানের কাঁচামাল সরবারহ করে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন। সম্প্রতি কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার (কমার্শিয়াল) সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি দীর্ঘ অভিযোগ জমা হয়। এ বিষয়টি অ্যালকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সকল পরিচালক জ্ঞাত হলেও তিন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার যোগসাজসের কারণে কর্তৃপক্ষ কঠোর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।

শামীম রব্বানী

কার্যত তিন প্রভাবশালী কর্মকর্তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে গোটা কোম্পানি।
জানা যায়, সম্প্রতি একটি পত্রিকায় অ্যালকো ফার্মার দুর্র্নীতিবাজ কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেনের দুর্নীতির ফিরিস্তি প্রকাশ পায়। এরপরও বহাল তবিয়তে স্বপদে থেকে দায়িত্ব পালন করছে সে। কিভাবে সম্ভব হচ্ছে এটা? অনুসন্ধানে দেখা যায়, অ্যালকোর সিইও ফার্মাসিস্ট শামীম রব্বানী ও ক্যাশিয়ার হামিদুর রহমান একজোট হয়ে একাধিক গোপন বৈঠক করে। এরপর তারা তথ্য ফাঁসের অভিযোগ তুলে অ্যালকোর কয়েকজন অধীনস্ত কর্মীকে চাকরিচ্যূত করে। বিদেশে অবস্থানরত কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান শায়েরকে এ মর্মে বোঝাতে সক্ষম হন যে, সাখাওয়াত ছাড়া কোম্পানি অচল! তাকে দুর্র্নীতির কারণে কোম্পানি থেকে সরিয়ে দেয়া হলে কোম্পানির বদনাম হবে। সরকারি সংস্থাগুলো পুরো অ্যালকোর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করবে। এতে পুরো কোম্পানিই ক্ষতির মুখে পড়বে।

হামিদুর রহমান
জানা গেছে, কর্মচারি হলেও অপকর্মের নাটের গুরু সাখাওয়াত চলেন শিল্পপতিদের স্টাইলে। ব্লেজার পরেন লাখ টাকা দামের। দেড় লাখ টাকার ঘড়ি পরেন হাতে। ব্যবহার করা কলমের দাম ৪০ হাজার টাকা। কেনাকাটা করেন দেশ ও বিদেশের ধনপতিদের পছন্দের শপিংমলে। সবশেষ ২০১৭ সালে ব্র্যান্ড শপ ‘আড়ং’য়ে এক বছরে সর্বোচ্চ শপিং করে জিতে নেন বিশেষ গিফট। আড়ংয়ে গিফটের মধ্যে ছিল, পর্যটন শহর কক্সবাজার যাওয়া-আসার জন্য নভোএয়ারের কাপল টিকিট। সঙ্গে রয়্যাল টিউলিপ সি পার্ল বিচ রিসোর্টে তিন দিন ও দুই রাত থাকার সুযোগ (এ সংক্রান্ত খবর ও ছবি সংরক্ষিত আছে)। সূত্র জানায়, ‘মাই আড়ং রিওআর্ডস মেম্বার’দের জন্য প্রতি বছর এ ধরণের সুবিধা দিয়ে আসছে দেশের বিত্তশালীদের প্রথম পছন্দের শপ আড়ং। ২০১৭ সালে মোট ৭ জনকে আড়ং বেস্ট মেম্বার হিসেবে সম্মানিত করে। এর ৬জনই ছিলেন কোনো না কোনো শিল্প মালিকের স্ত্রী অথবা কন্যা। একমাত্র সাখাওয়াত হোসেন ব্যতিক্রমÑযিনি শিল্পপতি পরিবারের কেউ নন, স্রেফ একজন চাকরিজীবী! এই সাখাওয়াত প্রয়োজন দেখা দিলে স্বার্থ হাসিলে লোকজনকে প্রায়ই দেন দামী দামী গিফট।
জানা যায়, ১৯৯৮ সালে মাত্র ১০ হাজার টাকা বেতনের কর্মচারী হিসেবে অ্যালকো ফার্মায় চাকরি নেয় সাখাওয়াত হোসেন। নানা চাতুরি করে পদোন্নতি বাগিয়ে ২১ বছরে পৌঁছেন একই কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার (কর্মাশিয়াল) পদে। আর উচ্চ পদে বসেই কোম্পানির সঙ্গে শুরু করেন ব্যবসা। স্ত্রীর নামে খুলেছেন একাধিক প্রতিষ্ঠান। আর এ সব প্রতিষ্ঠানের নামে কারখানায় প্রয়োজনীয় নানা ধরনের কেমিক্যাল সাপ্লাইয়ের ব্যবসা করে কামিয়ে নেয়া শুরু করেন কোটি কোটি টাকা। নিজের নামে ঔষধের অবৈধ লোকাল কাঁচামাল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরবারহ করে। ঔষধ প্রশাসনের আইনে ঔষধ কোম্পানীতে লোকাল কাঁচামাল কোনভাবেই ব্যবহার করার সুযোগ নেই। এ্যালকো ফার্মায় কিভাবে জিএম (কমার্শিয়াল) এটা করেন? বয়সজনিত কারণে কোম্পানির চেয়ারম্যান প্রতিষ্ঠানে তেমন সময় দিতে পারেন না। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রবাসী। এ সুযোগে রাতকে দিন আর দিনকে রাত করেন জেনারেল ম্যানেজার (কর্মাশিয়াল)। পুরো নাম সাখাওয়াত হোসেন। কেরাণীগঞ্জের জিনজিরার লোকজন তাকে চেনেন বাবু নামে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সাখাওয়াত চক্রদের অবৈধ অর্থ উপার্জনের কৌশল দু’টি। প্রথম কৌশলটি প্রায় এককভাবে ব্যবহার করছেন সাখাওয়াত। তিনি তার স্ত্রী ফওজিয়ার নামে ট্রেড লাইসেন্স বের করে অ্যালকো ফার্মায় দীর্ঘকাল ধরে কেমিক্যাল সাপ্লাই করছেন। নিজ নামে কিভাবে কোটি কোটি টাকার নিম্নমানের কাঁচামাল সরবারহ করে। এ কাজে সাখাওয়াতের সহযোগী হিসেবে ভূমিকা রেখে চলছেন ফার্মাসিস্ট শামীম রব্বানী ও হামিদুর রহমান। বিনিময়ে এ দু’জন লভ্যাংশের নির্দিষ্ট অংশ পান।
কিউ এন্ড কিউ ট্রেডিং হাউজকে বাড়তি মুনাফা এনে দিতে সাখাওয়াত, শামীম রব্বানী, হামিদুর চক্র প্রায়ই বাজারে কাঁচামালের প্রচ- সঙ্কট আছে বলে এ্যালকো কর্তৃপক্ষকে বার্তা পাঠায়। পরে কর্তৃপক্ষ কোম্পানির উৎপাদন অব্যাহত রাখতে বাধ্য হয়ে অধিক মূল্যে কাঁচামাল সংগ্রহের আগ্রহ দেখালে চক্রটি বাজার মূল্যের কয়েক গুণ বেশি দামে কারখানায় কাঁচামাল সরবারহ করে। এসব ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়ে তারা সরবারহ করে নিম্নমানের কাঁচামাল। এসব কাঁচামালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে প্রয়োজন পড়ে এজিথ্রোমাইসিন, ইসমেপ্রাজল, ওমেপ্রাজল, সুক্রোজ, ফ্লুকোনাজল, ফেক্সোফেনাডিন ইত্যাদি।
জানা যায়, নিম্নমানের কাঁচামাল সরবারহের এই ব্যবসা চালানোর পাশাপাশি সাখাওয়াত চক্র সরকারকে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দেয়। এ বিষয়ে সাখাওয়াত দম্ভভরে কাছের লোকদের বলে বেড়ান, ভ্যাট অফিস, ওষুধ প্রশাসনের মতো অফিসগুলোতে আমি প্রতিমাসে বিপুল অঙ্কের মাসোহারা দিয়ে সব ম্যানেজ করি। আমার হাত অনেক লম্বা।
গত ২১ জানুয়ারি সাখাওয়াত হোসেন বাবুর অবৈধ সম্পদের তদন্ত কামনা করে দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি দীর্ঘ অভিযোগ জমা হয়েছে। দুদক চেয়ারম্যানসহ ১৮ কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে লেখা ওই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, একজন ব্যক্তি দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে না তুলেও নামে বেনামে অবৈধ ব্যবসা করে কিভাবে শত শত কোটি টাকার মালিক হনÑ তা নিয়ে আমরা তথা দেশবাসী সবাই হতবাক। তার বিষয়ে সরাসরি মুখ খুলতে না পারায় দুদকের দারস্থ হলাম। এই অভিযোগলিপি প্রেরণ করছি, যাতে এই লোকটির অবৈধ অর্থ উপার্জনের সঠিক ব্যাখ্যা দেশ, দেশের মানুষ, সবাই জানতে পারেন। একই সঙ্গে রাষ্ট্র যেন তার বিচার করতে পারে। কারণ লোকটি বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে অর্থায়ন করেন। লোকটির বিপুল অর্থ, অর্থের উৎস, সম্পত্তি সবই অবৈধভাবে অর্জিত।
অভিযোগ বিবরণীতে বলা হয়, লোকটি দেশের বাইরে এরই মধ্যে দু’টি বাড়ি কিনে ফেলেছেন। তার জীবনের ব্যবহৃত প্রতিটি জিনিসই দেশের শিল্পপতিদের চেয়ে বেশি দামী। তার এক একটি ব্যাংক হিসাব ও ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন সাক্ষ্য দেবে-তিনি কোন ধরনের অর্থায়নের সাথে জড়িত। কিভাবে সম্ভব বৈধভাবে এত অর্থ উপার্জন ও ব্যয় করা?
অভিযোগকারীরা বলেন, আমরা ব্যক্তি মোঃ সাখাওয়াত হোসেন এর বিরুদ্ধে আর্থিকভাবে ধনী হওয়ার জন্য রাগের বসবতি হয়ে এই দরখাস্ত করছি না। আমরা দেশ, জাতি ও সরকারের পক্ষে বলতে চাই, এই অবৈধ অর্থ উপার্জনকারীর সমস্ত কিছু তদন্ত করে সঠিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক-যাতে আর কোনো ব্যক্তি অবৈধভাবে শত শত কোটি টাকার মালিক হতে না পারে। একই সঙ্গে দেশবিরোধী কর্মকান্ডে অর্থায়ন করতে না পারে।
অভিযোগপত্রে সাখাওয়াতের সম্পদের বিবরণ তুলে ধরতে গিয়ে বলা হয়, কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়ায় একটি জমির উপর ৩০০ (তিনশত) টিনসেট পাকা ঘর আছে তার। যার ভাড়া থেকে বছরে কোটি কোটি টাকার উপরে আয় হয়। নিজ গ্রামে একটা ৫ কাঠা ও আরেকটি ৫ কাঠা ও আরেকটি ৭ কাঠা প্লট আছে। এসব প্লটে বিল্ডিং নির্মিত আছে যার ভাড়া থেকে বছরে কোটি টাকার উপরে আয় আসে। স্ত্রীর নামে কিউ এন্ড কিউ ট্রেডিং হাউজ নামে ঔষধ শিল্পের নিম্নমানের কাঁচামাল সরবারহের জন্য গড়ে তুলেছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের ঔষধ শিল্পের কাঁচামালের চোরাকারবারী করেন তিনি। ঔষধ শিল্প কাঁচামাল সরবারহের পাশাপাশি হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তিনি। সাখাওয়াত হোসেন কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের এবং লিজিং কোম্পানির ঋণের দালালির সাথে জড়িত। তার নিজের এবং পরিবারের বিভিন্ন নামে ২৫-৩০টিরও বেশি প্লট ও ঢাকার আশপাশে প্রচুর জমি কিনেছেন। স্কয়ার হাসপাতালের বিপরীত পার্শ্বে শেলটেক বিল্ডিংয়ে ফ্ল্যাট আছে তার। ঢাকা উত্তর খান/দক্ষিণ খানে নিজের নামে কিনেছেন ২২ কাঠা জমি। এয়ারপোর্ট এলাকা ও উত্তরাতে শ্বশুর পরিবারের নামে কিনেছেন কয়েক বিঘা সম্পত্তি। ধানমন্ডি ৩/এ-তে বে ডেভলোর্পসে ৫ কোটি টাকার ফ্ল্যাট কেনার পর সম্প্রতি ইস্কাটন রোডে শান্তা টাওয়ারে আড়াই কোটি টাকার ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য ২০ লাখ টাকা বায়নাপত্র করেন। এছাড়া ঢাকার মিডফোর্টে বিভিন্ন নামের দোকানে কোটি কোটি টাকার অর্থে কাঁচামাল ও কেমিক্যালের ব্যবসা আছে। কয়েকটি ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার এফডিআর বিভিন্ন নামে করেছেন। বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে কয়েক কোটি টাকা ব্যক্তি কেন্দ্রিক বিনিয়োগও আছে তার। স্ত্রী ফউজিয়া আক্তার-এর নামে বিভিন্ন কোম্পানি চালু করেন।
সূত্র জানায়, সাখাওয়াতের দুইটা নিজস্ব গাড়ি। স্ত্রীকে কিনে দিয়েছেন আরও একটি গাড়ি। বাবা-মা’র ব্যবহারের জন্য একটি, শ্বশুরের জন্য একটি; এমনকি শালাকেও কিনে দিয়েছেন একটি গাড়ি। সবমিলিয়ে সাখাওয়াতের গাড়ি বহরে গাড়ির সংখ্যা ৬। ব্যাংক একাউন্ট অগণিত। এনসিসি ব্যাংক দিলকুশা শাখায় আছে সাখাওয়াতের অন্তত পাঁচটি একাউন্ট। নম্বরগুলো হলো-০০২৮-০৩১০০০৪২৩০, ০০২৮-০০১২০০০২৭৪৪, ০০২৮-০০১২০০০২৯৭৭, ০০২৮-০০১২০০০৩৫০১, ০০২৮-০৫৫০৫১৩৯০৫। আইএফআইসি ব্যাংকের ফেডারেশন শাখায় আছে অন্তত দুইটি একাউন্ট। এ দুই হিসাবের নম্বর হচ্ছে, ১০০৮৭০৩৮৭০৩১, ১০০৮৭০৩৮৭৮৬১১। স্ত্রীর কিউ এন্ড কিউ ট্রেডিং হাউজ নামের নামে এনসিসি ব্যাংকের বাবুবাজার শাখায় আছে অন্তত ৮টি ব্যাংক একাউন্ট। নম্বরগুলো হচ্ছে, ০০০৬-৩৫২৬৫২, ০০০৬-০২১০০০৭০২০, ০০০৬-০১৮১০০০৪২২, ০০০৬-০১৮১০০০৬১৯, ২৩৯০০০০৩৭৪, ২৩৯০০০০৪৪৫, ২৩৯০০০০৫৭০, ২৩৯০০০০৬১৪। দ্য সিটি ব্যাংকের একটি ক্রেডিট কার্ড, যার নম্বর ৩৭৬৯৪৮১১১০৫১৩৩৬৩৫ ও এনসিসি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড নম্বর ৪৫৮১৭০৩০০০০১৯৩৪৭ ব্যবহার করে প্রায়ই বড় ধরনের অর্থ লেনদেন করা হয়। সূত্র মতে, সাখাওয়াতের নামে ফারইস্ট স্টক এন্ড বন্ডস লিমিটেডের একাউন্ট নম্বর ০০১০০২৫১৮১০২৬ থেকে গত ২৪.০৯.২০১৭ তারিখে ৩১০৯৬৯১ নম্বর চেকে ১০ লাখ ৪০ হাজার টাকা পে অর্ডার করা হয়েছে। ইন্সুরেন্স কোম্পানিতেও সাখাওয়াত হোসেনের বড় ধরনের বিনিয়োগ আছে। এর মধ্যে মেটলাইফ এলিকো কোম্পানিতে তার পলিসি নম্বর ৫৬৬৮৫৪। তার স্ত্রী ফউজিয়া আক্তারের পলিসি নম্বর ৮৬৪৫২৪।
সাখাওয়াত হোসেন বিশ্বস্ত একাধিক ব্যক্তির ব্যাংক একাউন্টেও নিজের অবৈধ আয়ের অর্থ লেনদেন করেন। মোঃ রাইসুল উদ্দিন এমনই একজন। সাখাওয়াত এই ব্যক্তির দি সিটি ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার ২৯৩১৬২৬২৬৫০০ হিসাব নম্বরে প্রায়ই বড় অঙ্কের লেনদেন করেন। সাখাওয়াতের এনআইডি নম্বর ২৬১৩৮৯৪২৪৮৪৯৩। তার দু’টি টিন নম্বর হলোÑ ০৭৪১০৫৪৭৪৩ ও ২২০৯৭৫১২৪৮৩২। সূত্র জানায়, দুদকে জমা হওয়া অভিযোগপত্রে উপরের ব্যাংক একাউন্টগুলোর নম্বর ফাঁস হওয়ায় সাখাওয়াত ও তার স্ত্রী যৌথ নামে নতুন একটি একাউন্ট খুলেছে। স্টান্ডার্ড চ্যাটার্ড ব্যাংকে খোলা এই হিসাব নম্বরটি হলো: ১৮-১৩৪৪৬৮৯-০১।
জানা যায়, সম্প্রতি সাখাওয়াত আশিয়ান সিটিতে অনেকগুলো প্লট কিনেছে। স্থানীয় অধিবাসীরা জানান, বাবুর বিপুল বিত্ত-বৈভবের উৎস কি-আমরা জানি না। আমরা জানি, সে একটি বেসরকারি ঔষুধ কোম্পানিতে বড় পদে চাকরি করে। চাকরি করে কিভাবে সে রাতারাতি এত ধন-সম্পত্তির মালিক হলো-বুঝে আসে না। এলাকাবাসী প্রশাসন ও দুদকের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, এখনই বাবুর অবৈধ সম্পত্তির উৎস খুঁজে বের করে তাকে বিচারের আওতায় আনা উচিত। অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে সাখাওয়াত হোসেনের সাথে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এখন সচেতন মহলের প্রশ্ন, ওষুধ কারখানায় নিম্নমানের কাঁচামাল সরবারহকারী এই ত্রি-রতেœর খুঁটির জোর কোথায়-মালিকের দুর্বলতা নাকি অবৈধ টাকা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

two + 4 =