মার্চের কাল রাত

0
1148

লেখক :  ফাতেমা মিতু

অজস্র পাখির কিচিরমিচিরে

 হয়েছিল সকাল সেদিন,

অসংখ্য পলাশ আর কৃষ্ণচূড়া

 বুকে ধরেছিল

আরও বেশি লাল।

সূর্য মুখী দিনমান

 চেয়েছিল সূর্যের দিকে,

ফড়িং আর প্রজাপতিরা

ছুঁয়ে গেছে ফুল দূরন্ত আবেগে।

তিন বা চার চাকার বাহনে

চড়ে ছূটেছে কর্ম ব্যাস্ত দিন।

জীবনের গতিতে ছিল

মধ্যবিত্ত সবে।

হুডফেলা রিকশায় উড়েছিল

তরুণীর এক গোছা চুল,

সে চুলের হিল্লোলে কেঁপেছে

তরুণ হৃদয়;

বুকের গভীরে তুলেছে

প্রণয়ের ঝড়।

বিকেল গড়িয়ে গেছে

রাগ অনুরাগের মিশেলে।

প্রকৃতির খেয়ালে নেমেছে রাত

স্তব্ধতার হাত ধরে।

তারপর শুন শান

নীরবতা ঠেলে

করেছে আর্তনাদ।

আহারে মার্চ

একাত্তরের মার্চ।

মায়ের বুক থেকে কেড়ে নিলো

এক লাখ নাড়ী ছেড়া ধন।

অবাধ শিশুর  পিতা,

পতিব্রতার স্বামী,

নববধূর সোনালি স্বপ্ন,

বৃদ্ধ বাবা- মায়ের হাতের লাঠি,

কলিজা ছেঁড়া মানিক,

জোড়ার ভাই,

বোনের রাখি,

ছাত্রের শিক্ষাগুরু,

গুরুর শিষ্য,

দেশব্রতে দীক্ষা নেওয়া

প্রশিক্ষিত সৈনিক,

কলম আর ক্যামেরার

সাথে ছুটে চলা

 জাতির চোখ কান গুলো

উপরে ফেলে,

মেতে উঠলো হোলিখেলায়।

কেউ কারো সাথে করতে পারেনি শেষ বাক্য বিনিময়,

রাখতে পারেনি বার্তা

প্রিয়তমার  জন্যে,

বলতে পারেনি বিদায়।

বলতে পারেনি,

আর হয়তো ফেরা হবেনা;

ক্ষমা করো আমায়।

ঘুমন্ত রাজ্যপাটে

বারুদের আগুন,

মরণের বিষে

ছেয়ে গেলো এ দেশে

পঁচিশের রাত।

এই জাতির  বন্ধ

আর খোলা চোখে

প্রথম ঘোর অন্ধকার,

তীব্র অন্ধকার কাল রাত।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

fourteen − 3 =