দ্বীন খুবই সহজ সরল

0
230

৩৮। হাদীস: নবী করীম (সঃ) ইরশাদ করেন, দ্বীন খুব সহজ সরল, কেউ নিজেকে দ্বীনের উপর বিজয়ী করার ইচ্ছা করলে সে অবশ্যই পরাভূত হবে। অর্থাৎ, দ্বীনে বাড়াবাড়ি করো না; বরং সর্বদা মধ্যপন্থা অবলম্বন কর, নিয়মানুবর্তিতা অনুসরণ কর, সওয়াবের সুখবর গ্রহণ কর এবং সকাল সন্ধ্যা ও শেষ রাতের আমল দ্বারা স্বীয় কর্মে সাহায্য কামনা কর।

৩৯। হাদীসঃ হযরত বারা’ বিন আযেব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (সঃ) মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করে আসার পর সর্বপ্রথম স্বীয় নানার/মামার গোত্রীয় আনসারদের সেখানে অবতরণ করেন। মদীনায় অবস্থানকালে তিনি প্রথম ঘোল অথবা সতর মাস পর্যন্ত বায়তুল মাকদাসের দিকে ফিরে নামায আদায় করেন। কিন্তু সর্বদা মনে মনে আশা পোষণ করতেন তাঁর কেবলা যেন বায়তুল্লাহ শরীফ নির্ধারিত হয়। অতঃপর একদিন তিনি বায়তুল্লাহ শরীফের দিকে ফিরে সর্বপ্রথম যে নামায আদায় করলেন, তা ছিল আসরের নামায। তাঁর সাথে সাহাবীদের একদল লোক উক্ত নামায আদায় করেন। এঁদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি স্বীয় গোত্রের এক মসজিদের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখতে পেলেন, উক্ত মসজিদের মুসল্লিগণ বায়তুল মাকদাসের দিকে ফিরে আসরের নামায আদায় করছেন। তা দেখে উক্ত মুসল্লী তাদেরকে বললেন, আমি আল্লাহর নামে সাক্ষ্য দিচ্ছি, আজকের এ নামায আমি রাসূল (সঃ)-এর সাথে মক্কার দিকে ফিরে আদায় করেছি। মুসল্লিগণ এ খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে নামাযের মধ্যে বায়তুল মাকদাস থেকে বায়তুল্লাহর দিকে ফিরে গেলেন। ইহুদীদের কাছে এ ঘটনা বড়ই আশ্চর্য মনে হল। যেহেতু ইতিপূর্বে তিনি বায়তুল মাকদাসের দিকে ফিরে নামায আদায় করতেন। ইহুদীগণও সে দিকেই ফিরত। সুতরাং নবী করীম (সঃ) যখন বায়তুল্লাহর দিকে ফিরে গেলেন, তখন তারা তা অস্বীকার করল।

যোহায়র বলেন, আবু ইসহাক আমাদেরকে বারা’ বিন আযেব থেকে বর্ণিত তাঁর হাদীসে বর্ণনা করেছেন, বায়তুল মাকদাসের দিক থেকে কেবলা পরিবর্তনের পূর্বে মুসলমানদের কিছু সংখ্যক ব্যক্তি অসুস্থতার কারণে মারা গেছেন আর কিছু শহীদ হয়েছিলেন, তাদের সম্পর্কে আমরা কি বলব; আমরা তা জানি না। তাই তাদের সম্পর্কে, কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হল- “মহান আল্লাহ তোমাদের ঈমান নষ্ট করবেন না।” – وَمَا كَانَ اللَّهُ لِبَصِيعَ إِبْمَانَكُم..الاية

৪০। হাদীসঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ) ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যদি তার ইসলামকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে অর্থাৎ, নেক কাজ করে, তা হলে প্রতি নেকীর জন্য দশ থেকে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত লেখা হয়। পক্ষান্তরে প্রতি গুনাহের জন্য কেবলমাত্র তার অনুরূপই লেখা হয়।

৪১। হাদীসঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা নবী করীম (সঃ) তাঁর হুজরায় আসলে তাঁর কাছে অন্য এক মহিলাকে দেখতে পেলেন। তিনি তার পরিচয় জানতে চাইলে হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, ইনি অমুক মহিলা, যার নাম খাওলা (রাঃ), তারা নামায সম্পর্কে আলোচনা করছেন। হুযুর (সঃ) বললেন, তোমাদের আলোচনা বন্ধ কর। তোমরা ঐ আমলই করতে থাক যা পূর্বে করছিলে। আলাহর শপথ! আল্লাহ কখনো কাউকে বঞ্চিত করেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে নিজেকে বঞ্চিত না করে। আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় ধর্মীয় কাজ তাই যা সে সর্বদা স্থায়ীভাবে করে। অর্থাৎ নিয়মিত অল্প আমল হলেও তা আল্লাহর নিকট বেশি পছন্দনীয়।

৪২। হাদীস: নবী করীম (সঃ) ইরশাদ করেন, জাহান্নাম থেকে সব লোককে বের করে নিয়ে আসা হবে, যে কালেমা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” স্বীকার করবে এবং তার অন্তরে এক যব পরিমাণ নেকী বা ঈমান থাকবে। ঐ ব্যক্তিকেও জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আসা হবে। যে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ স্বীকার করবে এবং তার অন্তরে এক গম পরিমাণ ঈমান থাকবে। অনুরূপভাবে ঐ সকল লোককেও জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আসা হবে, যারা কালেমা ।لَا إِلهَ إل স্বীকার করবে এবং অন্তরে এক বিন্দু পরিমাণ ঈমান থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

five + twelve =