শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের ফযীলত

0
210

সহীহ বোখারী শরীফ ৭৮। হাদীস ঃ হযরত ইবনে ‘আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, একবার তিনি হুর ইবনে কায়স ইবনে হিসন আল-ফযারীর সঙ্গে মূসা (আ)-র সঙ্গীর ব্যাপারে বাদানুবাদ করছিলেন। তখন উবাই ইবনে কা’ব (রা) তাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। ইবনে আব্বাস (রা) তাঁকে ডেকে বললেনঃ আমি ও আমার এ ভাই মূসা (আ) এর সেই সঙ্গীর ব্যাপারে মতবিরোধ করছি, যাঁর সাথে সাক্ষাত করার জন্য তিনি পথের সন্ধান চেয়েছিলেন-আপনি কি রাসূলুল্লাহ (সা) কে তাঁর সম্বন্ধে কিছু বলতে শুনেছেন? উবাই (রা) বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা) কে তাঁর প্রসঙ্গে বলতে শুনেছি যে, একবার মূসা (আ) বনী ইসরাঈলের কোন এক মসজিদে হাযির ছিলেন। তখন তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, ‘আপনি কাউকে আপনার তুলনায় অধিক জ্ঞানী বলে জানেন? মূসা (আ) বললেন, ‘না। তখন আল্লাহ্ তাআলা মূসা (আ)-র কাছে ওহী পাঠালেন: ‘হ্যাঁ, আমার বান্দা খিজর।’ এরপর তিনি তাঁর সাথে সাক্ষাত লাভের রাস্তা জানতে চাইলেন। আল্লাহ্ তা’আলা তার জন্য মাছকে তার নিশানা বানিয়ে দিলেন। তাঁকে বলে দেওয়া হল, ‘যখন তুমি মাছটি হারিয়ে ফেলবে তখন তুমি প্রত্যাবর্তন করবে। তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যেই তুমি তাঁর সাক্ষাত পাবে। তিনি সমুদ্রে সে মাছের নিশানা অনুসন্ধান করতে লাগলেন।

যা হোক, মূসা (আ)-কে তাঁর সঙ্গী যুবকটি বললেনঃ (পবিত্র কুরআনের ভাষায়ঃ) “আপনি কি লক্ষ্য করেছেন আমরা যখন পাথরের কাছে বিশ্রাম করছিলাম তখন আমি মাছের কথা (বলতে) ভূলে গিয়েছিলাম। আর শয়তান তার কথা আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছিল (১৮ঃ ৬৩)।…. মুসা (আ) বললেনঃ আমরা সে স্থানটির অনুসন্ধান করছিলাম। (১৮৪ ৬৪) তারপর তাঁরা নিজেদের পদচিহ্ন ধরে ফিরে চললেন। শেষে তাঁরা খিষর (আ)-কে পেয়ে গেলেন। তাঁদের (পরবর্তী) ঘটনা আল্লাহ্ তাআলা তাঁর কিতাবে বর্ণনা করেছেন। ৭৯। হাদীসঃ নবী করীম (সঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, মহান আল্লাহ আমাকে যে হেদায়াত এবং এলেম সহকারে প্রেরণ করেছেন তার উদহারণ হল ঐ বৃষ্টির ন্যায়, যে বৃষ্টি এমন এলাকায় পতিত হল, যে স্থানে এমন কিছু উত্তম যমীন রয়েছে, যা পানি গ্রহণ করার ক্ষমতাসম্পন্ন। বৃষ্টির পানি পাওয়ার পর উক্ত যমীন তরতাজা অনেক প্রকার ঘাস উৎপন্ন করল। আর ঐ এলাকায় এমন কিছু শক্ত যমীনও রয়েছে যা পানি গ্রহণ না করে বরং উপরে জমা করে রাখার ক্ষমতাসম্পন্ন। সুতরাং জমাকৃত পানি দ্বারা মহান আল্লাহ লোকদেরকে উপকার প্রদান করলেন এমনভাবে যে, লোকেরা তা হতে নিজেরা পান করল, চতুষ্পদ জস্তুগুলোকেও পান করাল এবং ক্ষেতে খামারে ব্যবহার করল। আর এ বৃষ্টির পানি এমন কিছু পাথরযুক্ত ময়দানেও পতিত হল, যার পানি ধারণ ক্ষমতা নেই এবং তথায় কোন ঘাসও উৎপন্ন হয় না। সুতরাং সে বৃষ্টির উদাহরণ হল এমন ব্যক্তির ন্যায়, যাকে মহান আল্লাহ ধর্মীয় জ্ঞানে জ্ঞান দান করেছেন এবং আল্লাহ আমাকে যে হেদায়ত দিয়ে পাঠিয়েছেন তা দ্বারা সে উপকৃত হয়েছে। তাই সে নিজে তা শিক্ষা গ্রহণ করল এবং অপরকেও শিক্ষা দান করল। আর এ বৃষ্টির উদাহরণ হল সে ব্যক্তির ন্যায়, যে কখনো দ্বীনী জ্ঞানের দিকে লক্ষ্য করেনি এবং মহান আল্লাহ আমাকে যে হেদায়াত দিয়ে পাঠিয়েছেন তা থেকেও সে কিছু কবুল করেনি।

৮০। হাদীস: হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ইরশাদ করেছেন, কেয়ামতের আলামতসমূহের মধ্যে কিছু আলামত হল-ইলম উঠিয়ে নেয়া হবে, মূর্খতা প্রতিষ্ঠা পাবে। মদ বেশি বেশি পান করা হবে এবং যেনা ব্যভিচার প্রকাশ পাবে। ৮১। হাদীসঃ হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, আমি তোমাদেরকে এমন এক হাদীস শুনাব, যা আমার পরে তোমাদেরকে কেউ শুনাবে না। আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, কেয়ামতের আলামতসমূহের মধ্য হতে কিছু আলামত হল এলেম কম হবে, মূর্খতা বেশি প্রকাশ পাবে, মহিলাদের সংখ্যা বেশি এবং পুরুষদের সংখ্যা কম হবে, এমনকি প্রতি পঞ্চাশ জন মহিলার জন্য একজন পুরুষ পরিচালক হবেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 × 1 =