জিহাদের গুরুত্ব

0
76

সুনানে আন -নাসায়ী হাদীস নং : 3097 আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত : রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি জিহাদ না করে মারা গেল বা তার মনে যুদ্ধের বাসনা জাগলো না, তার মৃত্যু হলো নিফাকের একটি অংশ (জিহাদ বিমুখ হওয়া)-এর উপর।

সুনানে আন -নাসায়ী হাদীস নং : 3192 আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত : রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা জিহাদ কর তোমাদের হাত (শক্তি) দ্বারা, তোমাদের জিহবা (উক্তি) দ্বারা এবং তোমাদের সম্পদ দ্বারা। সুনানে আন -নাসায়ী হাদীস নং : 3162 সাহল ইব্‌ন আবূ উমামা ইব্‌ন সাহ্‌ল ইব্‌ন হানীফ (রাঃ) তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে থেকে বর্ণিত : রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মহান মহীয়ান আল্লাহ্‌ তা‘আলার কাছে সর্বান্তকরণে শাহাদাত কামনা করবে, সে তার বিছানায় মৃত্যুবরণ করলেও আল্লাহ্‌ তা‘আলা তাকে শহীদের মর্যাদা দান করবেন।

সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2783 ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘(মক্কা) বিজয়ের পর আর হিজরত নেই। বরং রয়েছে কেবল জিহাদ ও নিয়ত। যখন তোমাদের জিহাদের ডাক দেয়া হয়, তখন বেরিয়ে পড়।’ সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2786 আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, জিজ্ঞেস করা হলো, ‘হে আল্লাহর রসূল! মানুষের মধ্যে কে উত্তম?’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘সেই মু’মিন যে নিজ জান ও মাল দিয়ে আল্লাহ্‌র পথে জিহাদ করে।’ সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2791 সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি আজ রাতে (স্বপ্নে) দেখতে পেলাম যে, দু’ব্যক্তি আমার নিকট এল এবং আমাকে নিয়ে একটি গাছে উঠলো।

অতঃপর আমাকে এমন উৎকৃষ্ট একটি ঘরে প্রবেশ করিয়ে দিল এর আগে আমি কখনো এর চেয়ে সুন্দর ঘর দেখিনি। সে দু’ব্যক্তি আমাকে বলল, এই ঘরটি হচ্ছে শহীদদের ঘর। সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2792 আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত : নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্‌র রাস্তায় একটি সকাল কিংবা একটি বিকাল অতিবাহিত করা দুনিয়া ও তাতে যা কিছু আছে, তার চেয়ে উত্তম। সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2795 আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত : আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্‌র কোন বান্দা এমতাবস্থায় মারা যায় যে, আল্লাহ্‌র কাছে তার সওয়াব রয়েছে তাকে দুনিয়ার সব কিছু দিলেও দুনিয়ায় ফিরে আসতে আগ্রহী হবেনা।

একমাত্র শহীদ ব্যাতীত। সে শাহাদাতের ফযীলত দেখার কারণে আবার দুনিয়ায় ফিরে এসে আল্লাহ্‌র পথে শহীদ হবার প্রতি আগ্রহী হবে। সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2797 আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে আমি বলতে শুনেছি যে, সেই সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যদি মুমিনদের এমন একটি দল না থাকত, যারা যুদ্ধ থেকে বিরত থাকতে পছন্দ করে না এবং যাদের সকলকে সওয়ারী দিতে পারব না বলে আশংকা করতাম, তা হলে যারা আল্লাহ্‌র রাস্তায় যুদ্ধ করছে, আমি সেই ক্ষুদ্র দলটির সঙ্গী হওয়া হতে বিরত থাকতাম না।

সেই সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমি পছন্দ করি আমাকে যেন আল্লাহ্‌র রাস্তায় শহীদ করা হয়। আবার জীবিত করা হয়, অতঃপর শহীদ করা হয়। আবার জীবিত করা হয়, পুনরায় শহীদ করা হয়। আবার জীবিত করা হয়, আবার শহীদ করা হয়। সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2803 আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত : আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, কোন ব্যক্তি আল্লাহ্‌র পথে আহত হলে এবং আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন কে তাঁর পথে আহত হবে কিয়ামতের দিন সে তাজা রক্ত বর্ণে রঞ্জিত হয়ে আসবে এবং তা থেকে মিশ্‌কের সুগন্ধি ছড়াবে। সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2809 আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত : উম্মু রুবায়্যি বিনতে বারা, যিনি হারিস ইব্‌নু সুরাকার মা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলেন, ‘হে আল্লাহর নবী! আপনি হারিসাহ (রাঃ) সম্পর্কে আমাকে কিছু বলবেন কি? হারিসা (রাঃ) বদরের যুদ্ধে অজ্ঞাত তীরের আঘাতে শাহাদাত লাভ করেন।

সে যদি জান্নাতবাসী হয়ে থাকে তবে আমি সবর করব, তা না হলে আমি তার জন্য অবিরাম কাঁদতে থাকবো।’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘হে হারিসার মা! জান্নাতে অসংখ্য বাগান আছে, আর তোমার ছেলে সর্বোচ্চ জান্নাতুল ফেরদাউস পেয়ে গেছে।’ সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2810 আবূ মুসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, এক ব্যক্তি গনীমতের জন্য, এক ব্যক্তি প্রসিদ্ধ হওয়ার জন্য এবং এক ব্যক্তি বীরত্ব দেখানোর জন্য জিহাদে শরীক হলো।

তাদের মধ্যে কে আল্লাহ্‌র পথে জিহাদ করল? তিনি বললেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র কালিমা বুলন্দ থাকার উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করল, সে-ই আল্লাহ্‌র পথে জিহাদ করল।’ সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2816 জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, উহুদের যুদ্ধ শেষে আমার পিতাকে (তার লাশ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাটা অবস্থায় আনা হল এবং তাঁর সামনে রাখা হল। আমি তাঁর চেহারা খুলতে চাইলাম আমার গোত্রের লোকেরা আমাকে নিষেধ করল।

এমন সময় তিনি কোন বিলাপকারিণীর বিলাপ ধ্বনি শুনতে পেলেন। বলা হলো, সে ‘আমরের কন্যা বা ভগ্নি। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে কাঁদছে কেন? অথবা বলেছিলেন, সে যেন না কাঁদে। ফেরেশতামণ্ডলী তাকে ডানা দ্বারা ছায়াদান করছেন। সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2818 ‘উমর ইব্‌নু ‘উবায়দুল্লাহ্‌-এর আযাদকৃত গোলাম ও তার কাতিব সালিম আবূন নাযর (রাঃ) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু আবূ আওফা (রাঃ) তাঁকে লিখেছিলেন যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা জেনে রাখ, তরবারির ছায়া-তলেই জান্নাত।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

one + eleven =